ছবি: সংগৃহীত।
মহারাষ্ট্রে উদ্ধব ঠাকরের শপথের এক রাত আগে দিল্লিতে এসেছিলেন তাঁর ছেলে আদিত্য ঠাকরে। সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে দেখা করেন। সেই প্রথম ঠাকরে পরিবারের কেউ দশ জনপথে পা রাখলেন। মনমোহন সিংহের বাড়িতেও যান আদিত্য। কিন্তু দেখা করতে চাননি রাহুল গাঁধী। আজ দিল্লির তুঘলক লেনে রাহুলের বাড়িতে যান আদিত্য। শিবসেনা সূত্রে বিষয়টি জানা গেলেও এই সাক্ষাৎ নিয়ে নীরব রয়েছেন রাহুল।
মহারাষ্ট্রের পরিবেশ ও পর্যটন মন্ত্রী আদিত্য দিল্লিতে রয়েছেন গত কাল থেকে। আজ বিদেশ মন্ত্রক আয়োজিত ‘রাইসিনা সংলাপ’ অনুষ্ঠানেও শামিল হন। কংগ্রেস-বিজেপি-সহ সব দলের নেতারাই উপস্থিত ছিলেন। আদিত্য রাহুলের বাড়িতে যান তার আগে। আদিত্যের পরে কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন রাহুল। তাঁর দফতর সেই ছবি প্রকাশ করলেও আদিত্যের ক্ষেত্রে তা করেনি। কংগ্রেসের সূত্রের মতে, গোড়া থেকেই শিবসেনার সঙ্গে সরকার গড়ার পক্ষে নন রাহুল। কংগ্রেসের সনিয়ার প্রথমে আপত্তি থাকলেও পরে বাস্তব পরিস্থিতি বুঝে সায় দেন। রাহুল তখন বিদেশে। তাঁকে জানিয়েই সিদ্ধান্ত নেন সনিয়া। তবে রাহুলের আপত্তিতে উদ্ধবের শপথে গাঁধী পরিবারের কেউ যাননি। শুধু শুভেচ্ছা পাঠিয়েছিলেন।
কংগ্রেসের এক নেতার মতে, ‘‘বিজেপির সদ্য প্রাক্তন শরিক শিবসেনার উগ্র হিন্দুত্বের অবস্থান অপছন্দ রাহুলের। তাই শিবসেনার সমালোচনার মুখেও ‘আমার নাম রাহুল সাভারকর নয়, রাহুল গাঁধী’— এই মন্তব্য থেকে সরে আসেননি। ওই কংগ্রেস নেতাটির দাবি, রাহুল চান শিবসেনাকে ধর্মনিরপেক্ষ পথে আনতে। শিবসেনার জন্য কংগ্রেস তার আদর্শে আপস করবে না— তাঁর এই স্পষ্ট নির্দেশ পেয়েই মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস নেতারা শিবসেনাকে পাল্টা চাপ দেন। উদ্ধব মন্ত্রিসভায় আরও মন্ত্রিত্ব দাবি করেন। উদ্ধব যা ভাল ভাবে নেননি।
আরও পড়ুন: ‘মুখোশের আড়ালে আমি নই’, জাতীয় মহিলা কমিশনে চিঠি জেএনইউ হামলায় অভিযুক্ত কোমল শর্মার
শিবসেনা তবু আদিত্য সম্পর্কে রাহুলের ধারণা বদলাতে চাইছে। বোঝাতে চাইছে, যুবনেতা আদিত্যই দলের ভবিষ্যৎ। যিনি আধুনিক, অতীতের শিবসেনার মতো গোঁড়া নন। মনে করা হচ্ছে, তারই জমি তৈরি করতে আদিত্য আজ রাহুলের বাড়িতে যান। এর আগে রাহুল সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্যের জন্য মুম্বই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপককে ছুটিতে পাঠানো হয়।
কিন্তু রাহুল-শিবসেনা দূরত্ব কি কমছে? বরং তার উল্টো বার্তাই মিলছে পরের পর। ১৩ তারিখ সিএএ প্রশ্নে কংগ্রেসের ডাকা বিরোধীদের বৈঠকে যায়নি শিবসেনা। আজ তাদের নেতা সঞ্জয় রাউত মন্তব্য করেছেন, ‘‘এক সময় দাউদ ইব্রাহিম, ছোটা শাকিল, শরদ শেট্টিরা ঠিক করত মুম্বইয়ে কে পুলিশ কমিশনার বা মন্ত্রী হবেন। ইন্দিরা গাঁধী যেতেন করিম লালার সঙ্গে দেখা করতে। সেই অন্ধকার জগত আমরা দেখেছি।...’’ বিজেপি খুশি এই তরজায়। তাদের অমিত মালব্য টুইটে কটাক্ষ ছুড়েছেন, ‘‘রাহুল গাঁধী কি অন্য পথে হাঁটবেন? ঠাকুরমার ইজ্জতের চেয়ে ক্ষমতার লোভই যে বড়!’’