শনিবার দুপুরে মেঙ্গালুরুর একটি অটোয় প্রেসার কুকার বিস্ফোরণ হয়। ছবি: পিটিআই।
মেঙ্গালুরুর অটোয় বিস্ফোরণে অভিযুক্ত কার নাম-পরিচয় ভাঁড়িয়েছিলেন, তা জানা গিয়েছে একটি হারানো আধার কার্ড থেকে। রবিবার এমনই দাবি করল কর্নাটক পুলিশ। বিস্ফোরণের জায়গা থেকে ওই কার্ডটি উদ্ধার করা হয়েছে। যদিও ওই কার্ডের মালিকের দাবি, বিস্ফোরণের বিষয়ে কিছুই জানতেন না তিনি। এমনকি, এই অপরাধের সঙ্গে কোনও ভাবেই জড়িত নন।
সংবাদমাধ্যমের কাছে পুলিশ জানিয়েছে, ওই আধার কার্ডটি প্রেমরাজ হুতগি নামে কর্নাটকের হুবলি জেলার এক বাসিন্দার। প্রেমরাজের দাবি, গত দু’বছরে দু’বার আধার কার্ড হারিয়েছেন তিনি। যদিও কোথায় হারিয়েছিলেন, তা মনে নেই। এ নিয়ে পুলিশেও অভিযোগ জানাননি।
প্রেমরাজের আধার কার্ডটি শনিবারের বিস্ফোরণের জায়গায় মিলেছে। সে সূত্র ধরেই তাঁর কাছে পৌঁছে যান তদন্তকারীরা। সংবাদমাধ্যমের কাছে প্রেমরাজের দাবি, পুলিশের কাছ থেকেই মেঙ্গালুরুর বিস্ফোরণের সম্পর্কে প্রথম জানতে পেরেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘পুলিশের এক সাব-ইনস্পেক্টরের আমাকে ফোন করে জানতে চান, আমার আধার কার্ডটি কোথায় হারিয়েছি? আমার মা-বাবার সম্বন্ধেও জানতে চাইছিলেন। সে সব তথ্যই পুলিশকে জানিয়েছি। আমার ফোটোও দিয়েছি।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘এই কাণ্ডের সঙ্গে আমি জড়িত নই। পুলিশ বলায় আমি বিস্ফোরণের বিষয়ে জানতে পেরেছি। আমার আধার কার্ডটি যে বিস্ফোরণের জায়গা থেকে পাওয়া গিয়েছে, তা জানিয়েছে পুলিশ। আমি আধার কার্ডটা হারিয়েছিলাম, এটা সত্যি। তবে সেটা মেঙ্গালুরুতে নয়!’’ ওই কার্ডটির মালিক এই বিস্ফোরণে জড়িত কি না, অথবা তিনি সত্যি কথা বললে, কার্ডটি কী ভাবে অভিযুক্তের হাতে পৌঁছল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
প্রেমরাজ জানিয়েছেন, আধার কার্ডের আইডি নম্বর দিয়ে অন্য একটি কার্ড তৈরি করিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। যদিও তাঁর বক্তব্য, ‘‘আধার কার্ডটির যে এ ভাবে অপব্যবহার হবে, তা কোনও দিন ভাবিনি।’’
প্রসঙ্গত, শনিবার দুপুরে মেঙ্গালুরুর একটি অটোরিক্সায় প্রেসার কুকার বিস্ফোরণ ঘটে। ওই অটোয় বসা এক যাত্রীর কাছেই ওই প্রেসার কুকারটি ছিল বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় অটোচালক-সহ ওই যাত্রী গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। একে সন্ত্রাসবাদীদের কাজ বলে আখ্যা দিয়েছেন কর্নাটক পুলিশের ডিজি প্রবীণ সুদ।
পুলিশের দাবি, রেলের বেঙ্গালুরু শাখার কর্মী প্রেমরাজের নাম-পরিচয় ভাঁড়িয়ে অটোয় সফর করছিলেন অভিযুক্ত। ওই আধার কার্ডটি ছাড়া তাঁর সঙ্গে ভুয়ো নাম-ঠিকানা এবং ছবি ছিল। অটোয় একটি ব্যাটারি লাগানো প্রেসার কুকার নিয়ে উঠেছিলেন অভিযুক্ত। কুকারে বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্র লাগানো ছিল। তাতেই বিস্ফোরণ ঘটে। অভিযুক্ত এখনও কথা বলার অবস্থায় নেই বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
এই বিস্ফোরণে একাধিক কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা তদন্তে নেমেছে। তারা জানিয়েছে, কোয়ম্বত্তূর থেকে ভুয়ো নামে একটি সিম কার্ড কিনেছিলেন অভিযুক্ত। সেই লোকেশন টাওয়ার খতিয়ে দেখে জানা গিয়েছে, গোটা তামিলনাড়ু চষে বেড়িয়েছেন তিনি। ওই রাজ্যে কাদের সঙ্গে তিনি মোবাইলে কথা বলেছেন, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর।