—প্রতীকী ছবি।
দিল্লির পুরনো রাজেন্দ্র নগর এলাকায় ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে এসেছিলেন। কিন্তু প্রস্তুতির সেই চাপ নিতে না পেরে আত্মঘাতী হলেন মহারাষ্ট্রের এক পড়ুয়া। তাঁর দেহের পাশ থেকে মিলেছে একটি সুইসাইড নোট। তাতে লেখা, ‘‘বাবা-মা আমায় ক্ষমা করো, আমি পারলাম না...।’’
ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন (ইউপিএসসি) পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে মহারাষ্ট্র থেকে দিল্লি এসেছিলেন ওই তরুণী। পুরনো রাজেন্দ্র নগর এলাকার এক কোচিং সেন্টার থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। থাকতেন সেখানকারই এক ভাড়া বাড়িতে। সেই বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয়েছে তাঁর ঝুলন্ত দেহ। কেন তিনি চরম পদক্ষেপ করলেন, তার ব্যাখ্যাও লিখে রেখে গিয়েছেন এক চিঠিতে। সেই চিঠির ছত্রে ছত্রে রয়েছে মানসিক চাপের কথা।
সুইসাইড নোটের বয়ান অনুযায়ী, ‘‘আমায় ক্ষমা করে দিও। আমি খুবই বিরক্ত হয়ে পড়েছিলাম। এখানে শুধু সমস্যা আর সমস্যা, কোনও শান্তি নেই। এই বিষণ্ণতা থেকে পরিত্রাণ পেতে সম্ভাব্য সব ধরনের পন্থা অবলম্বন করেছি। কিন্তু কোনও কাজ দেয়নি। আমি বিষণ্ণতা কাটিয়ে উঠতে পারিনি। মানসিক চাপ গ্রাস করেছিল। তাই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলাম।’’ পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার বাড়ির লোককে খবর দেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর তাঁর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
মৃত পড়ুয়ার বান্ধবী শ্বেতা সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, তাঁর বন্ধু তিন বার ইউপিএসসি পরীক্ষাতে বসেছিলেন। কিন্তু এক বারও উত্তীর্ণ হতে পারেননি। যার ফলে চাপ বাড়ছিল তাঁর উপর। এমনকি, আর্থিক চাপও ছিল। যেখানে তাঁরা থাকতেন, সেখানে কয়েক মাস অন্তর অন্তর বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি করা হত। তাই দিনের পর দিন সেখানে থেকে প্রস্তুতি নেওয়া অসম্ভব হয়ে উঠছিল ওই ছাত্রীর পক্ষে। বার বার এই নিয়ে বন্ধুদের কাছে তিনি আক্ষেপও করতেন বলে জানান শ্বেতা।
মানসিক চাপে পড়ুয়াদের আত্মহত্যার মতো পদক্ষেপের কারণে রাজস্থানের কোটা বার বার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে। এ বার দিল্লির রাজেন্দ্র নগর এলাকাতেও এমন ঘটনার খবর প্রকাশ্যে এল। কী ঘটেছে, পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।
উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগেই দিল্লির এই রাজেন্দ্র নগর এলাকার এক কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে বৃষ্টির জল ঢুকে তিন ইউপিএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছিল। যা নিয়ে তোলপাড় গোটা দেশ। কী ভাবে বেসমেন্টের মধ্যে লাইব্রেরি বানিয়েছিল ওই কোচিং সেন্টার, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছে। দিল্লি পুরসভাও ঘটনার তদন্ত করছে। এই আবহে পড়ুয়ার আত্মহত্যার খবর প্রকাশ্যে গেল।