প্রচণ্ড ঘামতে ঘামতে কোনওক্রমে বাড়ি ফিরেছিলেন। কিন্তু বাড়ি ফিরে আরও অসুস্থ বোধ করেন সোনালি। —প্রতীকী চিত্র।
বাড়ি থেকে হাসপাতাল যেতে সাড়ে তিন কিলোমিটার এবং ফিরে আসতে সাড়ে তিন কিলোমিটার হাঁটতে হয়। তীব্র গরম আর চড়া রোদ মাথায় নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছেন। আবার ফিরে এসেছেন বাড়ি। কিন্তু সানস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ওই দিন সন্ধ্যায় মৃত্যু হল নয় মাসের এক অন্তঃসত্ত্বার। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের পালঘরে। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতার নাম সোনালি ওয়াঘত। ২১ বছরের ওই আদিবাসী তরুণী সন্তানসম্ভবা ছিলেন। হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন।
পুলিশ জানাচ্ছে, ওই ঘটনাটি শুক্রবারের। ওসারবীরা গ্রাম থেকে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে হাইওয়েতে উঠেছিলেন সোনালি। সেখান থেকে অটো করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছন। ডাক্তার দেখিয়ে ওই ভাবে আবার বাড়ি ফিরছিলেন। কিন্তু তীব্র দাবদাহে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। প্রচণ্ড ঘামতে ঘামতে কোনওক্রমে বাড়ি ফিরেছিলেন। কিন্তু বাড়ি ফিরে আরও অসুস্থ বোধ করেন। শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হতে শুরু করে তাঁর। সন্ধ্যার দিকে তরুণীকে আবার ওই স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান বাড়ির লোকেরা। কিন্তু তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি দেখে অন্য একটি হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। সেই মতো বাড়ির লোকেরা অ্যাম্বুল্যান্সের জোগাড় করেছিলেন। কিন্তু হাসপাতালে আর পৌঁছনো হয়নি। অ্যাম্বুল্যান্সেই মৃত্যু হয় সোনালির।
চিকিৎসকেরা জানান, প্রচণ্ড গরমে রোদ্দুরের মধ্যে হাঁটার ফলে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ওই মহিলা। সানস্ট্রোকে আক্রান্ত হন তিনি। এবং তার জেরেই মৃত্যু হয় তাঁর। অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু নিয়ে পালঘর জেলা পরিষদের সভাপতি প্রকাশ নিকাম সোমবার সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেন, ‘‘ওই মহিলার রক্তাল্পতার সমস্যা ছিল। এক আশাকর্মীর সঙ্গে হেঁটে হাসপাতালে এসেছিলেন। চিকিৎসকেরা তাঁকে পরীক্ষানিরীক্ষা করে কিছু ওষুধ দেন। কিন্তু সব কিছুই বৃথা গেল।’’ তিনি জানান, স্থানীয় হাসপাতালে আইসিইউ নেই। অত্যাধুনিক ব্যবস্থাও নেই যে, চিকিৎসকেরা এমন রোগীর চিকিৎসা করতে পারেন। যদি তা থাকত, এ ভাবে এক জন অন্তঃসত্ত্বাকে প্রাণ হারাতে হত না।’’