কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। —ফাইল ছবি।
দেশে যত ডিজিটাল লেনদেন বাড়ছে, তত বাড়ছে সাইবার অপরাধ। সর্বস্বান্ত হচ্ছেন মানুষ। এই অপরাধ-চক্র ভাঙতে এবং অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করতে আগামী পাঁচ বছরে পাঁচ হাজার সাইবার কমান্ডোর একটি দল গড়া হবে বলে জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
আজ দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে আইফোরসি (ইন্ডিয়ান সাইবার ক্রাইম কোঅর্ডিনেশন সেন্টার)-র প্রথম প্রতিষ্ঠা দিবসে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ওই কমান্ডো বাহিনী গঠনের কথা জানান শাহ। তিনি বলেন, ‘‘সাইবার অপরাধের বিষয়ে দক্ষ পুলিশ অফিসারদের নিয়ে ওই বাহিনী গড়া হবে।’’ মন্ত্রক জানিয়েছে, এদের প্রথম কাজ হবে সাইবার অপরাধ রোখা। বিশেষ করে বিদেশ থেকে সময় সময় এ দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সাইবার নেটওয়ার্কে যে হামলা চালানো হয়, তা রোখার পাশাপাশি যারা সাইবার অপরাধের শিকার হবেন, তাঁদের অভিযোগের তদন্তের দায়িত্বেও থাকবেন ওই কমান্ডোরা। অমিত শাহের কথায়, ‘‘বর্তমানে জাতীয় সুরক্ষার অন্যতম দিক হল সাইবার সুরক্ষা। সাইবার সুরক্ষা নিশ্চিত না হলে দেশের সার্বিক নিরাপত্তা মজবুত রয়েছে, এমন নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না।’’ বর্তমানে গোটা বিশ্বে যে পরিমাণ ডিজিটাল লেনদেন হয়, তার ৪৬ শতাংশ হয় ভারতে। ডিজিটাল-নির্ভর লেনদেন ক্রমশ বাড়তে থাকায় গোটা ব্যবস্থা নিশ্ছিদ্র ও নিখুঁত করার উপরে জোর দিয়েছেন শাহ।
আজকের অনুষ্ঠানে ‘সাসপেক্ট রেজিস্ট্রি’ বা সন্দেহভাজন সাইবার অপরাধীদের একটি তথ্যভান্ডারও উদ্বোধন করা হয়। মন্ত্রক জানিয়েছে, যে সব ব্যক্তি সাইবার এবং অনলাইন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত (বিশেষ করে আর্থিক জালিয়াতি), তাদের একটি তথ্যভান্ডার জাতীয় স্তরে গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এজেন্সি ছাড়াও রাজ্যের পুলিশ ওই তথ্য প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারবে। মন্ত্রক জানিয়েছে, ওই তথ্যভান্ডার ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টাল ছাড়াও বিভিন্ন ব্যাঙ্ক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গড়ে তোলা হচ্ছে।
শাহ বলেন, ‘‘সাইবার অপরাধ কোনও সীমানা মানে না। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার যদি সাইবার অপরাধের তথ্য সর্বসমক্ষে না আনে, তা হলে লড়াই দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই সামগ্রিক লড়াইয়ের লক্ষ্যেই একটি সর্বজনীন তথ্যভান্ডার গড়ে তোলা হচ্ছে।’’ পাশাপাশি আজ একটি সমন্বয় প্ল্যাটফর্ম পোর্টালের উদ্বোধন করেন শাহ। যেখানে বিভিন্ন রাজ্যে হওয়া সাইবার অপরাধের ঘটনা নথিভুক্ত থাকবে। তদন্তের সুবিধার জন্য গোটা দেশে কোন রাজ্যের কোন এলাকায় কী ধরনের ধরনের অপরাধ হচ্ছে, তার যাবতীয় ম্যাপিং করা থাকবে ওই পোর্টালে। যাতে ভবিষ্যতে তদন্তে সুবিধা হয়।