প্রতীকী ছবি।
ক্লিক করুন, আয় করুন। এই ছিল সংস্থাটির দাবি। কিন্তু আয় তো হলই না, উল্টে ক্লিক করতে গিয়ে সঞ্চয়ের মোটা অংশ হাতছাড়া হয়ে গেল ৬ লক্ষেরও বেশি মানুষের। অনলাইনে প্রতারণার অভিযোগে সংস্থার নয়ডার অফিস থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে তিন জনকে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা।
কী ভাবে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিত ওই সংস্থাটি?
এসটিএফ সূত্রে খবর, ধৃত অরুণাভ মিত্তল, শ্রীধর প্রসাদ এবং মহেশ দয়াল socialtrade.biz নামে একটি ওয়েবসাইট চালাতেন। যার সদস্য হওয়ার জন্য আমাতকারীদের প্রথমে ৫,৭৫০ টাকা থেকে ৫৭,৫০০ টাকা দিতে হত। সদস্য হওয়ার টাকার পরিমাণের উপর নির্ভর করত উপার্জনের বিভিন্ন প্যাকেজ। এর পর সংস্থার পক্ষ থেকে আমানতকারীদের মোবাইল নম্বরে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের লিঙ্ক পাঠিয়ে দেওয়া হত। সেই লিঙ্কগুলোতেও ক্লিক করতে বলা হত। এই ক্লিকেই নাকি ঘরে বসে আয়ের পথ খুলে যাবে।
ওই সংস্থার দাবি ছিল, পাঠানো লিঙ্কে একটা করে ক্লিক করলেই সংস্থাটি ৬ টাকা করে আয় করবে, যার মধ্যে ৫ টাকা আমানতকারীদের অ্যাকাউন্টে জমা পড়বে। সংস্থাটি নেবে এক টাকা। অভিযোগ, প্রথম দিকে কিছু টাকা অ্যাকাউন্টে জমাও পড়ে। কিন্তু তার পর থেকেই সমস্যার শুরু। ক্লিক করা সত্ত্বেও কোনও উপার্জন হত না। এই নিয়ে একাধিকবার সংস্থাটিকে অভিযোগ জানান আমানতকারীরা। অনলাইনে কিছু সমস্যা থাকায় টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো যাচ্ছে না বলে প্রতি বারেই তা এড়িয়ে যেতেন সংস্থার কর্মীরা। শেষে বাধ্য হয়েই পুলিশে অভিযোগ জানান আমানতকারীরা।
উত্তরপ্রদেশ এসটিএফের এসপি ত্রিবেণী সিংহ জানান, লোক ঠকানোর এই ব্যবসায় ধৃত অরুণাভ মিত্তল হলেন চাঁই। গাজিয়াবাদ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেছেন তিনি। ২০১৫ সালে এই সংস্থাটি চালু করেন অরুণাভ। পরে তাঁর সঙ্গে যোগ দেন বিশাখাপত্তনমের প্রসাদ এবং উত্তরপ্রদেশের মথুরার বাসিন্দা দয়াল। এই ভাবে সংস্থাটি মোট তিন হাজার ৭০০ কোটি টাকা সাধারণ মানুষের থেকে নেয়। সহজে আয়ের উদ্দেশ্যে এ দিন পর্যন্ত মোট ৬ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষ সংস্থাটির সদস্য হয়ে প্রতারিত হয়েছেন। ধৃত তিন জন ছাড়াও আর কে কে এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীকে বাহবা দিলেন অমিত, বাজেট কি মোদীই বানালেন, চর্চা তুঙ্গে