নরবলি-কাণ্ডের পর থেকেই খাবারের অর্ডার পাচ্ছেন না অভিযুক্তের প্রতিবেশী কেটারিং ব্যবসায়ী। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
করেকম্মে খাচ্ছিলেন। কিন্তু কোথা থেকে কী যে হয়ে গেল, ভেবে অস্থির হয়ে উঠছেন টিঙ্কু। টিঙ্কু ভার্গিস। কেটারিংয়ের ব্যবসা। এলাকায় তাঁর কেটারিংয়ের বেশ নামডাক। কিন্তু একটা ঘটনাই যেন তাঁর এই ব্যবসায় মন্দার ছায়া ফেলে দিয়েছে। গ্রাহকরা এখন মুখ ফেরাচ্ছেন। হঠাৎ করে খরিদ্দাররা মুখ ফেরাচ্ছেন কেন? অপরাধটা কী? ‘অপরাধ’টি হল, কেরলের নরবলি-কাণ্ডে অভিযুক্তদের প্রতিবেশী তিনি। এমনটাই মনে হচ্ছে টিঙ্কুর।
কেরলের এলানথুর গ্রামে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া নরবলি-কাণ্ডে অভিযুক্ত দম্পতি ভাগবল এবং লায়লা সিংহের প্রতিবেশী টিঙ্কু। এই ঘটনা গোটা দেশে শোরগোল ফেলে দিয়েছে। উৎসুক লোকেদের ভিড়, পুলিশের আনাগোনা চলছেই সিংহ দম্পতির বাড়িতে। কিন্তু টিঙ্কু পড়ে গিয়েছেন এক অদ্ভুত সমস্যায়।
দুই মহিলাকে খুনের পর তাঁদের টুকরো টুকরো করে কাটার আগে যকৃৎ, ফুসফুস ইত্যাদি বার করা হয়েছিল শরীর থেকে। পুলিশের ধারণা, নরমাংস ভোজনও করেছেন অভিযুক্ত দম্পতি। এই ঘটনার পর থেকেই টিঙ্কুর ব্যবসায় মন্দার ছায়া। এক সংবাদমাধ্যমকে আক্ষেপ করে টিঙ্কু বলছিলেন, “জানি না, কেন খরিদ্দাররা ভয় পাচ্ছেন। আমি কি তাঁদের মানুষের যকৃৎ, ফুসফুস, মাংস ভাজা করে খাওয়াব? সিংহ দম্পতি যদি মানুষের মাংস খেয়ে থাকেন, ওঁদের প্রতিবেশী হওয়াই কি আমার অপরাধ?”
এই মুহূর্তে খাবারের কোনও অর্ডারই পাচ্ছেন না টিঙ্কু। খরিদ্দারদের কী ভাবে বিশ্বাস করানো যায়, এখন সেটাই ভেবে ভেবে অস্থির।
টিঙ্কুর বাড়ি থেকে কয়েক হাত দূরেই আর এক প্রতিবেশী জোস টমাসের বাড়ি। এই ঘটনার পর থেকে গ্রামে যে সব উৎসুক মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন, তাঁদের রীতিমতো স্বাগত জানাচ্ছেন টমাস। তাঁর বাড়িতে এখন পুলিশ, সাংবাদিকদের জন্য অবারিত দ্বার। তাঁদের জল, মিষ্টি এমনকি শরবতও খাওয়াচ্ছেন টমাস।