ছবি পিটিআই।
৭৫ বছর বাদে সীমান্তের বাধা পেরিয়ে ভাইপোর সঙ্গে জেঠুর পুনর্মিলন। তাঁদের স্নেহের আলিঙ্গনের মুহূর্তের সাক্ষী হল কর্তারপুর গুরুদ্বার।
সোমবার কর্তারপুরে ৯২ বছর বয়সি সারওয়ান সিংহের সঙ্গে দেখা হল তাঁর ভাইপো মোহন সিংহের। দেশভাগের সময় থেকেই তাঁরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন। পাকিস্তানে এক মুসলিম পরিবারে বড় হয়ে ওঠা মোহনের। তাঁর বর্তমান নাম আব্দুল খালিক।
তাঁদের এই সাক্ষাৎপর্ব প্রসঙ্গে মোহন ওরফে খালিকের এক আত্মীয় নইম পিটিআইকে বলেছেন, ‘‘দেখা হতেই জেঠুর পা ছুঁয়ে প্রণাম করে খালিক। তার পর তাঁরা একে অপরকে আলিঙ্গন করেন।’’ জেঠু ও ভাইপো কর্তারপুরে প্রায় চার ঘণ্টা সময় কাটান। এত বছর বাদে এ ভাবে যে তাঁদের দেখা হবে, তা কখনই ভাবেনি দুই পরিবার। খালিকের এত আত্মীয়ের কথায়, ‘‘আমাদের অনুভূতিটা যে ঠিক কী তা ভাষায় বলে বোঝাতে পারব না। ঈশ্বরের আশীর্বাদে এটা সম্ভব হয়েছে।’’
সারওয়ান ও মোহনের পুনর্মিলন অবশ্য সম্ভব হয়েছে ভারত ও পাকিস্তানের দুই ইউটিউবারের দৌলতে। দেশভাগের কাহিনি নিয়ে জান্দিওয়ালার এক ইউটিউবার বিভিন্ন তথ্যচিত্র বানিয়েছেন। এ কাজের সময়ই সারওয়ানের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। পরে সারওয়ানের কাহিনি তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে তুলে ধরেন। একই রকম ভাবে পাকিস্তানের এক ইউটিউবার খালিকের গল্প ভিডিয়ো আকারে প্রকাশ করেন। ভিডিয়োতে নিজের নিখোঁজ হওয়া ভাইপোর জন্মদাগের কথা বলেছিলেন সারওয়ান।
ঘটনাচক্রে এই দুই ভিডিয়ো দেখেন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসকারী পঞ্জাবের এক ব্যক্তি। তিনিই তার পর আত্মীয়দের মারফত সারওয়ান ও মোহনের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। সেই চেষ্টা সফলও হয়। তার পরই তাঁদের সাক্ষাতের দিন ঠিক করা হয়।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, দেশভাগের সময় সাম্প্রদায়িক অশান্তির কবল থেকে নিজেদের রক্ষা করে ভারতে চলে এসেছিল সারওয়ানের পরিবার। কিন্তু খালিক পারেননি। তার পর থেকেই খালিক সম্পর্কে কোনও তথ্য জানতে পারেননি সারওয়ানরা। ৭৫ বছর পর অবশেষে ভাইপোর সঙ্গে দেখা হয়ে তাই যারপরনাই খুশি সারওয়ান।