গঙ্গা সিংহ। তিনি জীবিত অথচ ‘মৃত’!
কাদম্বিনীকে মরে প্রমাণ করতে হয়েছিল যে তিনি মরেননি। এক বৃদ্ধের ক্ষেত্রেও অবস্থাটা প্রায় একই। সরকারের খাতায় মৃত বৃদ্ধ এখন নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে মরিয়া।
গঙ্গা সিংহ। বয়স ৮০। উত্তরপ্রদেশের আগরার মৈনপুরীর মাজরা জফরের বাসিন্দা। সরকারের চোখে তিনি মৃত। ভুলবশতই! তবে এর খেসারত গুনতে হচ্ছে অশীতিপর এই বৃদ্ধকে। সরকারের চোখে মৃত হওয়ার কারণে বার্ধক্যভাতা পাচ্ছেন না। আর এই জীবিত, মৃত এই দুইয়ের মাঝে পড়ে বাস্তবিকই ‘মৃত্যুর প্রহর’ গুনছেন বৃদ্ধ।
তাঁর গ্রামের তাঁরই সমবয়সিরা নিয়মমাফিক বার্ধক্যভাতা পেলেও তিনি কেন পাচ্ছেন না, তা জানতেই গত ৩ জুলাই সংশ্লিষ্ট দফতরে গিয়েছিলেন গঙ্গা। কিন্তু সেখান থেকে তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়, গঙ্গা সিংহ নামের ব্যক্তি মৃত। সরকারি রেকর্ড তেমনই বলছে। আর সে কারণেই বার্ধক্যভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
তিনি মৃত! ওই সরকারি কর্মীর কথাটা শুনেই কেমন যেন ভেবলে গিয়েছিলেন গঙ্গা। জলজ্যান্ত মানুষটি সামনে দাঁড়িয়ে, অথচ তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হচ্ছে! সরকারি কর্মীর ওই কথা শুনে জেলা জলকল্যাণ দফতরে ছোটেন গঙ্গা। সেখানে গিয়ে সমস্ত বিষয়টি জানান। তাঁর কথা শুনে রেকর্ড বুক খতিয়ে দেখেন ওই দফতরের এক কর্মী। কিন্তু না, জনকল্যাণ দফতর থেকেও জানিয়ে দেওয়া হয়, গঙ্গা সিংহ মৃত।
দু’জায়গা থেকে হতাশ হয়ে ফিরে এ বার গঙ্গা ছুটলেন পঞ্চায়েতের অফিসে। পঞ্চায়েত থেকে গঙ্গাকে জানানো হয়, এটা ভুলবশত হয়েছে। মৃতদের তালিকায় তাঁর নাম ঢুকে গিয়েছে। তবে এই ভুল দ্রুত সংশোধন করার আশ্বাসও দিয়েছে পঞ্চায়েত।
এক সংবাদ সংস্থাকে গঙ্গা জানান, কোনও রকমে সংসার চলে। তার মধ্যে ভাতার টাকা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আরও অনটন দেখা দেয়। কী ভাবে সংসার চালাবেন তা ভেবে কুলকিনারা পাচ্ছিলেন না। কেন বার্ধক্যভাতা দেওয়া হচ্ছে না তা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকেও চিঠি লিখেছিলেন বলে দাবি করেছেন গঙ্গা।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসে পঞ্চায়েত। তারা জানিয়েছে, কী ভাবে এই ভুল হল খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনার জন্য কে দায়ী তা খুঁজে বার করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।