বিহারিলালের কাছে এসএমএস আসে— ‘আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বাকি টাকার পরিমাণ ২ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা।’ প্রতীকী ছবি।
‘জন ধন’ অ্যাকাউন্ট থেকে ১০০ টাকা তোলার জন্য ব্যাঙ্কে গিয়েছিলেন বিহারিলাল। টাকাও তোলেন। কিন্তু তার পরের ঘটনায় রীতিমতো ভিরমি খাওয়ার অবস্থা তাঁর।
কেন?
এখন যে হেতু ব্যাঙ্কের সঙ্গে গ্রাহকের ফোন নম্বর নথিভুক্ত করা থাকে, তাই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কোনও লেনদেন হলেই তার একটা বার্তা ব্যাঙ্কের তরফে গ্রাহককে এসএমএস করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। নিয়মমাফিক বিহারিলালও টাকা তোলার পর সেই এসএমএস পেয়েছিলেন। ঘটনার চমক এখানেই।
বিহারিলাল জানতেন, তাঁর অ্যাকাউন্টে মাত্র ১২৬ টাকা পড়ে আছে। সেখান থেকে ১০০ টাকা তোলেন। তার পরই বিহারিলালের কাছে এসএমএস আসে— ‘আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বাকি টাকার পরিমাণ ২ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা।’ এসএমএস পেয়ে চমকে উঠেছিলেন বিহারিলাল। পেশায় দিনমজুর, ইটভাটায় ঘাম-রক্ত ঝরিয়ে কাজ করে খান। তাঁর অ্যাকাউন্টে এত টাকা এল কোথা থেকে?
ব্যাঙ্কে দাঁড়িয়েই ভাল করে এসএমএসটা পড়েন বিহারিলাল। ঠিক দেখছেন তো? না কি কোথাও তাঁর ভুল হচ্ছে? বিপুল টাকা তাঁর অ্যাকাউন্টে কি আদৌ আছে? পরীক্ষা করার জন্য ব্যাঙ্ককর্মীকে অ্যাকাউন্ট বই দিয়ে দেখতে বলেন কত টাকা আছে! ব্যাঙ্ককর্মী বিহারিলালের অ্যাকাউন্ট দেখে জানান, ২ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা আছে। তিন তিন বার অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করে দেখা হয়, প্রতি বারই টাকার একই অঙ্ক দেখাচ্ছিল।
ধন্দে পড়ে যান বিহারিলাল। এটা কি দিবাস্বপ্ন, না কি সত্যিই তাঁর অ্যাকাউন্টে আড়াই কোটির বেশি টাকা আছে! এই দোলাচলের মধ্যে ব্যাঙ্ককর্মীকে আবার অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করে দেখতে অনুরোধ করেন তিনি। এ বার প্রমাণ হিসেবে বিহারিলালের হাতে অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্ট ধরিয়ে দেন ব্যাঙ্ককর্মী।
সেই স্টেটমেন্ট দেখে কিছুটা আশ্বস্ত হন বিহারিলাল। তবে মনের মধ্যে কোথাও একটা খচখচানি ছিলই। কেননা, এত টাকা কেউ তাঁকে দেবেন না। যাই হোক, একটু খচখচানি আর একটু সুখের মুহূর্তকে সঙ্গে করেই বাড়ির দিকে হাঁটা দেন বিহারিলাল। বাড়ি পৌঁছতেই তাঁর কাছে ফোন আসে। বলা হয়, ‘মাফ করবেন, আপনার অ্যাকাউন্টে মাত্র ১২৬ টাকা আছে।’ ক্ষণিক হলেও তিনি যে আড়াই কোটি টাকার মালিক হয়েছিলেন, তাতেই খুশি বিহারিলাল।
বিহারিলালের অ্যাকাউন্টের খবর চাউর হতে বেশি সময় নেয়নি। ব্যাঙ্কের এক শীর্ষ কর্তা অভিষেক সিন্হা জানান, ব্যাঙ্কের প্রযুক্তিগত কোনও ভুলেই এমনটা হয়েছে। বিষয়টি নজরে আসার পরই ওই ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট ক্ষণিকের জন্য বাজেয়াপ্ত করা হয়। তবে ওঁর অ্যাকাউন্টে ১২৬ টাকাই ছিল। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের কনৌজের।