প্রতীকী ছবি।
ত্রিপুরায় সম্প্রতি সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানো এবং সামাজিক মাধ্যমে ভুয়ো খবর প্রচারের অপরাধে পুলিশ এখনও পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে। রাজ্য পুলিশের পদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, সম্প্রতি রাজ্যে শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করার চেষ্টা হয়েছে। এতে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ধৃতরা বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কয়েক জন অন্য রাজ্যের বাসিন্দা।
পুলিশ কর্তাটি জানিয়েছেন, গত ৩ নভেম্বর দিল্লি থেকে তহরিক ফরগো-ই-ইসলাম সংগঠনের চার জন সদস্য পানিসাগরে রিজিয়োনাল কলেজ অব ফিজিক্যাল এডুকেশন কমপ্লেক্সে অবস্থিত পরিত্যক্ত মসজিদ পরিদর্শন করেন। ওই সময় পুলিশ তাঁদের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্ত তাঁরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশকর্মীদের অপমান করেন এবং তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। শুধু তা-ই নয়, তাঁরা মোবাইল ক্যামেরায় মিথ্যা তথ্য রেকর্ড করছিলেন এবং ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টায় ছিলেন বলে জানিয়েছেন পুলিশের পদস্থ কর্তা। তাই, পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করে ও নোটিস পাঠায়। পানিসাগর থানার পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি ১২০বি, ১৫৩এ, ১৫৩বি, ৫০৩ ও ৫০৪ এবং ইউএলএ(পি) ১৩ ধারায় মামলা রুজু করেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় সর্বোচ্চ ৭ বছর কারাদণ্ড হতে পারে।
পুলিশ তাঁদের থানায় হাজিরা দেওয়ার জন্য সিআরপিসি ৪১ ধারায় নোটিস পাঠিয়েছিল এবং ৫ নভেম্বর থানায় হাজির থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্ত, তাঁরা নোটিস গ্রহণে অস্বীকার করেন। তাই, উত্তর জেলার পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করে এবং আদালতে পাঠায়। আদালত তাদের ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের ওই কর্তা। তিনি বলেন, ওই ঘটনায় ধৃত চার জনের মধ্যে এক জনের পরিচয় পত্র ভুয়ো ছিল। পুলিশের ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, পানিসাগরের ঘটনায় ইতিপূর্বে আরও চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাঁরাও বর্তমানে জেল হেফাজতে রয়েছেন। গত ২৬ অক্টোবরের ঘটনায় চারটি মামলা রুজু হয়েছে।
সম্প্রতি রাজ্যে ঘটে যাওয়া হিংসাত্মক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্বতঃপ্রনোদিত হয়ে জনস্বার্থ মামলা হাতে নিয়েছে ত্রিপুরা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি ইন্দ্ৰজিত মহান্তি এবং বিচারপতি শুভাশিস তলাপাত্রের ডিভিশন বেঞ্চ। রাজ্য সরকারকে আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে হলফনামা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। ১২ নম্বর মামলাটি ফের শুনানির জন্য উঠবে।