নামিবিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ইতিমধ্যেই ২০টি চিতাকে কুনোতে আনা হয়েছে।
২টি চিতার মৃত্যুর পরেও রাশ টানা হচ্ছে না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্নের প্রকল্পে। সোমবার কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, বর্ষার আগেই মধ্যপ্রদেশের কুনো পালপুর অরণ্যের উন্মুক্ত প্রাকৃতিক পরিবেশে আফ্রিকা থেকে আনা আরও ৫টি চিতাকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
নামিবিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ইতিমধ্যেই ২০টি চিতাকে কুনোতে আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৪টিকে কুনো অরণ্যের প্রাকৃতিক পরিবেশে ছাড়া হয়েছে। কিন্তু গত ২ মাসে ২টি চিতার মৃত্যু হয়েছে সেখানে। মধ্যপ্রদেশের ওই অরণ্যে ৫০টি আফ্রিকার চিতা পুনর্বাসনের পরিকল্পনা রয়েছে মোদী সরকারের। কিন্তু বিশিষ্ট বন্যপ্রাণ বিজ্ঞানী তথা কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের ‘ন্যাশনাল চিতা অ্যাকশন প্ল্যান’ (জাতীয় চিতা পুনঃস্থাপন কর্মসূচি)-র সদ্য অপসারিত প্রধান যাদবেন্দ্রনাথ ঝালা স্পষ্ট ভাষায় তাঁর রিপোর্টে জানিয়েছিলেন, আফ্রিকা থেকে আনা ৫০টি চিতা দূর অস্ত, মধ্যপ্রদেশের কুনো-পালপুর জাতীয় উদ্যানে ২০টির ঠাঁই হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
বিজ্ঞানী ঝালা সম্প্রতি বলেছিলেন, ‘‘কুনো জাতীয় উদ্যানের যা পরিসর, সেখানে ২০টি চিতার স্বচ্ছন্দ বসবাসের সুযোগ নেই। তা ছাড়া ওখানে চিতাদের শিকার করে খাওয়ার মতো হরিণ বা বনশুয়োরের অভাব রয়েছে।’’ এই পরিস্থিতিতে ২টি চিতার মৃত্যুর পরে মোদীর চিতা প্রকল্পের নতুন করে বৈজ্ঞানিক পর্যালোচনার প্রয়োজন বলে বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞদের একাংশ দাবি তুলেছিলেন। কিন্তু বন ও পরিবেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, বর্ষা শুরুর আগেই জুন মাসে ২টি পুরুষ এবং ৩টি স্ত্রী চিতাকে প্রাকৃতিক অরণ্যে মুক্ত করা হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ মার্চ কুনোয় মৃত্যু হয়েছিল নামিবিয়া থেকে আনা ৫ বছরের স্ত্রী চিতা শাসার। ২৪ এপ্রিল মারা যায় দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আনা পুরুষ চিতা উদয়। মধ্যপ্রদেশ বনবিভাগের চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, কিডনিতে সংক্রমণের কারণে শাসার মৃত্যু হয়েছে। অন্য দিকে উদয়ের মৃত্যুর কারণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল, ‘কার্ডিয়ো পালমোনারি ফেলিওর’-কে। ঝালা বলেছিলেন, ‘‘আমার প্রস্তাব ছিল, বেশি চিতা ছাড়তে হলে আপাতত রাজস্থানের মুকুন্দরা জঙ্গলটিকে ব্যবহার করা হোক।’’ কিন্তু সেই প্রস্তাব যে আমল পায়নি, সোমবার তা বুঝিয়ে দিল মোদী সরকার।