প্রতীকী ছবি।
সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন পেগাসাসের মাধ্যমে সম্ভাব্য নজরদারির তালিকায় থাকা পাঁচ সাংবাদিক। এই প্রথম সম্ভাব্য নজরদারির তালিকায় থাকা কোনও ব্যক্তি আদালতের দ্বারস্থ হলেন।
পেগাসাসের মাধ্যমে সম্ভাব্য নজরদারি সম্পর্কে তদন্ত চেয়ে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন প্রবীণ সাংবাদিক এন রাম ও শশী কুমার, আইনজীবী এম এল শর্মা ও রাজ্যসভার সদস্য জন ব্রিট্টাস। বৃহস্পতিবার সেই আর্জিগুলির শুনানি হওয়ার কথা।
আজ শীর্ষ আদালতে আবেদন পেশ করেছেন পরঞ্জয় গুহ ঠাকুরতা, এসএনএম আবদি, প্রেমশঙ্কর ঝা, রূপেশকুমার সিংহ ও ইপসা শতাক্ষী। ওই পাঁচ জন আবেদনে জানিয়েছেন, পেগাসাস সংক্রান্ত ফাঁস হওয়া তথ্যভান্ডার নিয়ে তদন্তকারী সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিনিধিকে নিজেদের ফোন দিয়েছিলেন তাঁরা। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের পরীক্ষাগারে ডিজিটাল ফরেন্সিক পরীক্ষার মাধ্যমে জানা দিয়েছে, পেগাসাসের মাধ্যমে তাঁদের ফোনে নজরদারি চালানো হয়েছিল।
আবেদনকারীরা আর্জিতে জানিয়েছেন, তাঁদের ফোন ভারত সরকার বা কোনও তৃতীয় পক্ষের নজরদারি বা হ্যাকিংয়ের নিশানা হয়েছে, এ কথা ভাবার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। ওই পাঁচ সাংবাদিক আর্জিতে জানিয়েছেন, ভারত সরকার এখনও পেগাসাস স্পাইওয়্যার কেনার কথা অস্বীকার করেনি।
আবেদনকারীদের মতে, এমন আধুনিক স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে নজরদারি বাক্স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ণ করবে। এটা ব্যক্তিপরিসরের অধিকারেরও পরিপন্থী। এর ফলে সরকারের বিভিন্ন স্তরে অনিয়ম নিয়ে যাঁরা তথ্য সরবরাহ করেন তাঁরা আর এগিয়ে আসবেন না। ফলে গোটা দেশে প্রশাসনের স্বচ্ছতার উপরেও বিরূপ প্রভাব পড়বে।
আবেদনকারীরা সুপ্রিম কোর্টের কাছে পাঁচটি নির্দিষ্ট বিষয়ে নির্দেশ দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন। প্রথমত, পেগাসাসের মতো স্পাইওয়্যার ব্যবহারকে বেআইনি ঘোষণা করা। দ্বিতীয়ত, আবেদনকারীদের বিরুদ্ধে পেগাসাস ব্যবহারের নির্দেশ বা সেই বিষয়ে তদন্ত সংক্রান্ত সব তথ্য সুপ্রিম কোর্ট ও আবেদনকারীদের জানানো। তৃতীয়ত, পেগাসাসের মতো সাইবার-অস্ত্রের হাত থেকে ভারতীয় নাগরিকদের বাঁচাতে সরকারের তরফে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা। চতুর্থত, বেআইনি আড়িপাতা বা হ্যাকিংয়ে যুক্ত সরকারি আধিকারিকদের শাস্তি দিতে বিচারবিভাগীয় ব্যবস্থা তৈরি। পঞ্চমত, ন্যায়বিচারের স্বার্থে প্রয়োজনীয় যে কোনও নির্দেশ দেওয়া।
অন্য দিকে এ দিন পেগাসাস কাণ্ডে তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছেন বিজেপির জোটশরিক ও বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও। এই অভিযোগের তদন্ত নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের সঙ্গে বিরোধীদের টানাপড়েনের ফলে বর্ষাকালীন অধিবেশনে কার্যত অচল হয়ে রয়েছে সংসদ।
আজ এই বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে নীতীশ বলেন, ‘‘বেশ কিছুদিন ধরেই ফোনে আড়িপাতার কথা শোনা যাচ্ছে। সংসদে বিষয়টি নিয়ে তোলা হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশিত হচ্ছে। তাই বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা উচিত। যা জানা যাবে তা দেশবাসীকে জানানো উচিত।’’
নীতীশের বক্তব্য, ‘‘এখন এ সব ঘটনা কে, কখন, কোন পথে ঘটায় তা বোঝা কঠিন। তাই সব দিক খতিয়ে দেখে বিষয়টি দেশবাসীকে জানানো প্রয়োজন।’’