প্রতীকী ছবি।
সাম্প্রতিক কালের মধ্যে কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে সেনার সঙ্গে সবচেয়ে ভয়াবহ লড়াইয়ে নিহত হয়েছে পাঁচ জঙ্গি। কাশ্মীরের কেরন সেক্টরে ওই লড়াইয়ে নিহত হয়েছেন প্যারাকমান্ডো সঞ্জীব কুমার, বাল কৃষ্ণন, ছত্রপাল সিংহ, দেবেন্দ্র সিংহ ও অমিত কুমারও।
আজ সেনার তরফে জানানো হয়েছে, ১ এপ্রিল কুপওয়ারার কেরন সেক্টরে নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে পায়ের ছাপ দেখতে পায় সেনার নজরদারি দল। ওই এলাকায় প্রবল তুষারপাতের ফলে নিয়ন্ত্রণরেখায় বেড়া তুষারে ডুবে গিয়েছে। এই দুর্যোগের সুযোগেই জঙ্গিরা নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে কাশ্মীরে ঢোকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বলে ধারণা সেনা গোয়েন্দাদের।
সেনা জানিয়েছে, ১ এপ্রিল দুপুর ১টা নাগাদ জঙ্গিদের নাগাল পায় সেনা। কিন্তু জঙ্গিরা গভীর জঙ্গলে পালিয়ে যায়। পাঁচটি ব্যাগ উদ্ধার করে সেনা। ৩ এপ্রিল ও ৪ এপ্রিলও জঙ্গিরা যে পথে গিয়েছে তার খোঁজ মিলেছিল। কিন্তু ফের তারা সেনাকে ধুলো দিয়ে পালায়। পরিস্থিতি দেখে প্যারাকমান্ডোদের ডাকে সেনা। ড্রোন থেকে তোলা ছবি দেখে জঙ্গিদের গতিবিধি অনুমান করা হয়। তুষারপাতের ফলে সব রাস্তা বিচ্ছিন্ন থাকায় প্যারাকমান্ডোদের একটি দল হেলিকপ্টারে নিকটবর্তী ব্যাটেলিয়ন সদরে পৌঁছন। সেনা জানিয়েছে, ৫ এপ্রিল জঙ্গিদের পায়ের ছাপ দেখে এগোতে গিয়ে একটি খাদের ধারে বরফের আস্তরণের উপরে পৌঁছন কমান্ডোরা। আস্তরণ ভেঙে একটি নদীতে গিয়ে পড়েন তাঁরা। ঘটনাচক্রে জঙ্গিরা সেখানেই লুকিয়েছিল। ফলে প্রথমে খুব কাছ থেকে গুলির লড়াই ও পরে হাতাহাতি শুরু হয়।
সংঘর্ষে নিহত হয় পাঁচ জঙ্গি। মৃত্যু হয় পাঁচ প্যারাকমান্ডোরও। কমান্ডো ও জঙ্গিদের দেহ একে অপরের ২ থেকে ৩ মিটারের মধ্যে পড়েছিল বলে জানিয়েছে সেনার উদ্ধারকারী দল।
সেনার ১৫ নম্বর কোরের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল বি এস রাজু বলেন, “নিহতদের দেহ আজ তাঁদের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। অভিযান শেষ। আমাদের ধারণা, ওই জঙ্গিরা জইশ ই মহম্মদের সদস্য।”
জঙ্গিদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করতে ওই এলাকায় একটি দল পাঠিয়েছে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, দক্ষিণ কাশ্মীরের বাসিন্দা একটি পরিবার দাবি করেছে নিহত জঙ্গিদের মধ্যে ওই পরিবারের এক সদস্য রয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষায় পরিচয় প্রমাণিত হলে তবেই দেহ পরিবারের হাতে দেওয়া হবে।