—প্রতীকী ছবি।
রাত তখন প্রায় শেষ দিকে। জাতীয় সড়কে তীব্র গতিতে ছুটে চলছিল ছাই রঙের গাড়িটা। হঠাৎই আপদকালীন ব্রেক কষে গাড়ি থামাতে বাধ্য হন চালক। গাড়ির সামনের দুটি চাকাই ফুটো হয়ে গিয়েছিল। চালক দরজা খুলতেই চোখে পড়ে রাস্তায় ছড়ানো কয়েক’শো পেরেক।
এর পরের মুহূর্ত আরও ভয়ানক। চালক গাড়ি থেকে নামতেই ঝাঁপিয়ে পড়ে জনা ছয়েক দুষ্কৃতী। অবাধে চলে লুঠপাট। গাড়িতে থাকা চার মহিলাকে গণধর্ষণ করা হয়! বাধা দেওয়ায় দুষ্কৃতীরা গুলি করে খুন করে এক ব্যক্তিকে। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশে। জেওয়ার থেকে বুলন্দশহরের দিকে যাওয়ার পথে আক্রান্ত হয় পরিবারটি। গত বছরও একই ভাবে গাড়ি থামিয়ে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল বুলন্দশহর যাওয়ার ওই রাস্তায়।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেটার নয়ডার বাসিন্দা ওই পরিবারটি চিকিৎসাধীন এক আত্মীয়কে দেখতে বুলন্দশহর যাচ্ছিল। গাড়িতে ছিলেন চার জন মহিলা। ছিলেন পরিবারটির তিন পুরুষ সদস্যও। পুলিশে সূত্রে জানা গিয়েছে, সবাউতা গ্রামের কাছে জাতীয় সড়কের উপরে পেরেক ছড়িয়ে রাখা রেখেছিল দুষ্কৃতীরা। তাতেই গাড়ির সামনের দু’টি চাকা পাংচার হয়ে যায়। চাকা সারানোর জন্য চালক গাড়ি থেকে নামতেই ঘিরে ফেলে সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা। গাড়ির সব আরোহীকে নামিয়ে নেওয়া হয়। প্রথমে চলে লুঠপাট। নগদ প্রায় ৪৪ হাজার টাকা এবং লক্ষাধিক টাকা মূল্যের গয়না লুঠ হয় বলে অভিযোগ। এর পর জাতীয় সড়কের পাশে একটি ফাঁকা মাঠে টেনে নিয়ে গিয়ে চার মহিলাকে গণধর্ষণ করা হয় বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। যে ব্যক্তি ধর্ষণে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, তাঁর বুকে ও পায়ে গুলি করে দুষ্কৃতীরা। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: খুনটা হোক সামনেই, ‘প্ল্যান’ ছিল মনুয়ার
গৌতম বুদ্ধ নগরের পুলিশ সুপার লাভ কুমার জানিয়েছেন, যে চার মহিলা গণধর্ষণের শিকার বলে অভিযোগ, তাঁদের ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। দুটি আলাদা দল গড়ে তদন্ত শুরু হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। এ দিন আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান জেওয়ারের বিধায়ক ঠাকুর ধীরেন্দ্র সিং।
গত বছর এই জাতীয় সড়কের উপরই গাড়ি থামিয়ে এক ১৩ বছরের কিশোরী এবং তার মাকে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল। এক ব্যক্তির শেষকৃত্যে যোগ দিতে নিজেদের গাড়িতেই যাচ্ছিলেন তাঁরা। মাঝপথে গাড়ি থামিয়ে মা-মেয়ের উপর চার ঘণ্টা অত্যাচার চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা।