—প্রতীকী চিত্র।
সহপাঠীর সঙ্গে তুচ্ছ কারণে ঝগড়া। এক জনকে সমর্থন দিতে এগিয়ে এসেছিল আরও তিন জন। সে দিনের মতো ঝামেলা মিটলেও রাগ পুষে রেখেছিল ৪ জন। পরের দিন স্কুলে এসেছিল অস্ত্র নিয়ে একেবারে তৈরি হয়ে। ছুটির পর আগের দিন ঝগড়া হওয়া সেই সহপাঠীকে ধরে বেল্ট, এবং লোহার চেয়ার দিয়ে বেদম পেটাল দশম শ্রেণির চার ছাত্র। সেই সঙ্গে ছুরির আঘাতে ক্ষত- বিক্ষত করে দেওয়া হল তাকে।
ঘটনাটি মহারাষ্ট্রের পুণের। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত এবং নিগৃহীত পড়ুয়ারা প্রত্যেকেই ভবানীপেঠের রামোশিগেট এলাকার একটি স্কুলের দশম শ্রেণির পড়ুয়া। সূত্রের খবর, সোমবার ক্লাস চলাকালীন দুই ছাত্রের মধ্যে ঝামেলা বাধে। তাদের এক জনের পক্ষে এগিয়ে আসে আরও তিন জন। সে দিন ঝামেলা হলেও হাতাহাতি হয়নি। কিন্তু বিপক্ষের চার জন ঠিক করে নিয়েছিল, তারা এর শোধ তুলবে। ওই চার ছাত্রের ধারণা হয়েছিল, তাদের চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে।
তাই মঙ্গলবার ছুরি, বেল্ট, লাঠি নিয়েই স্কুলে এসেছিল ওই চার জন। স্কুল ছুটির পর বাইরে বেরিয়ে সহপাঠীকে ধরে বেধড়ক মারধর করে তারা। তার হাত, গলা ছুরির আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত করে দেওয়া হয়। তার পর ওই অবস্থাতেই তাকে ফেলে রেখে পালায় অভিযুক্তরা।
পরে নিগৃহীত ছাত্রকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার চোট বেশ গুরুতর।
ঘটনায় ইতিমধ্যেই চার জন অভিযুক্তকে আটক করেছে পুলিশ। ধৃতদের প্রত্যেকেরই বয়স ১৪-১৫ বছর। তাদের বিরুদ্ধে হত্যার চেষ্টা ও হামলার অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ধৃত এবং নিগৃহীত ছাত্রদের প্রত্যেকেই অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারের সদস্য।
মহারাষ্ট্রে সংগঠিত অপরাধে নাবালকদের জড়িত থাকার ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে। পুণের বিদায়ী পুলিশ কমিশনার রেতেশ কুমার সম্প্রতি জানিয়েছেন, মহারাষ্ট্র কন্ট্রোল অফ অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যাক্ট-এর অধীনে দায়ের করা মামলায় মোট অপরাধীদের মধ্যে ১১ শতাংশই হল অপ্রাপ্তবয়স্করা। তাদের বেশিরভাগই আর্থিক ভাবে অনগ্রসর শ্রেণির। পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (অপরাধ) অমল জেন্ডে জানিয়েছেন, “অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেরা গুরুতর অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। কিছু ক্ষেত্রে, তাদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া গেছে। আমরা ২ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি কিশোরকে চিহ্নিত করেছি যারা আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছে বা অপরাধের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। আমরা বিভিন্ন এনজিওর সহায়তায় এই সব শিশুদের জন্য কাউন্সেলিং সেশনের ব্যাবস্থা করেছি।”