নয়ডার টুইন টাওয়ার। রবিবারই গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। চলছে চূড়ান্ত প্রস্তুতি। ফাইল চিত্র।
আর মাত্র কয়েক দিন, তার পরই গগনচুম্বী ‘টুইন টাওয়ার’ মিশে যাবে মাটিতে। ২৮ অগস্ট জোড়া অট্টলিকাকে ধূলিসাৎ করার চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে।
দু’টি টাওয়ারের একটির নাম অ্যাপেক্স, অন্যটি সিয়েন। অ্যাপেক্স টাওয়ারের উচ্চতা ১০২ মিটার। অন্যটির উচ্চতা ৯২ মিটার। দু’টি টাওয়ার মিলিয়ে মোট ১০০০ ফ্ল্যাট রয়েছে। এই ‘টুইন টাওয়ার’ ঘিরে বিতর্ক অনেক পুরনো। সেই বিতর্ককেই মাটিতে মিশিয়ে দিয়ে আনা হয়েছে ৩৫০০ কেজি বিস্ফোরক।
‘টুইন টাওয়ার’-এর নাম ও নিশান মিটিয়ে দিতে এই দুই গগনচুম্বীর পেটে ঠেসে ভরা হয়েছে বিস্ফোরক। ৪৬ জন ইঞ্জিনিয়ার ১২ ঘণ্টা কাজ করছেন। প্রতিটি পদক্ষেপের নজরদারির জন্য লাগানো হয়েছে ৩০০ সিসিটিভি ক্যামেরা। নিরাপত্তার জন্য ৫০০ পুলিশকর্মীকে মোতায়েন করা হয়েছে। নয়ডা প্রশাসন সূত্রে খবর, রবিবার টুইন টাওয়ার ধ্বংসের দিন ২০ মিনিটের জন্য বন্ধ রাখা হবে দ্য নয়ডা-গ্রেটার নয়ডা এক্সপ্রেসওয়ে। দু’দিনের জন্য আশপাশের টাওয়ারগুলি থেকে বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হবে।
মাত্র ৯ সেকেন্ডে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হবে টুইন টাওয়ার। কিন্তু তার জন্য রাজসূয় যজ্ঞের আয়োজন করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, গুঁড়িয়ে দিতে কয়েক সেকেন্ড লাগলেও সেই ধ্বংসাবশেষ সরাতে অন্তত ৯০ দিন সময় লাগবে।
কোটি কোটি টাকা খরচ করে গড়ে তোলা এই টুইট টাওয়ার কেন ভেঙে ফেলা হচ্ছে? ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (এনবিসি) বলছে, একটি টাওয়ার থেকে আর একটির দূরত্ব কমপক্ষে ১৬ মিটার হওয়ার উচিত। কিন্তু নয়ডার এই টুইন টাওয়ারের ক্ষেত্রে সেই নিয়ম মানা হয়নি। দু’টি টাওয়ারের মধ্যে দূরত্ব ৯ মিটারেরও কম। ২০১২-তে বিষয়টি ইলাহাবাদ হাই কোর্টে ওঠে। ২০১৪ সালে হাই কোর্ট জানায়, এই নির্মাণ অবৈধ। অতএব ভেঙে ফেলতে হবে। শুধু তাই নয়, যাঁরা ফ্ল্যাট কিনেছিলেন এই দুই টাওয়ারে, তাঁদের ১৪ শতাংশ সুদ সমেত টাকা ফেরত দিতে হবে।
এর পরই মামলাটি পৌঁছয় সুপ্রিম কোর্টে। ২০২১-এ সুপ্রিম কোর্ট ইলাহাবাদ হাই কোর্টের রায়কে বহাল রাখে। ২০২২-এর ১২ অগস্ট সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, ২৮ অগস্টে টুইন টাওয়ার ভেঙে ফেলতে হবে।