কেরলে আইসোলেশন ওয়ার্ডে চলছে এই ভাইরাসে আক্রান্তের চিকিৎসা। ছবি: সংগৃহীত।
ফের নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সন্ধান মিলল কেরলে। তিন দিন আগেই দেশের মধ্যে প্রথম বার ওই রাজ্যে এই ভাইরাসের আক্রমণ ঘটেছিল।
রবিবার এক বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, ‘‘নোভেল করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে কেরলে। ওই আক্রান্ত এর আগে চিনে ভ্রমণ করেছিলেন। তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। তবে তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।’’
স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে খবর, ২৪ জানুয়ারি চিন থেকে দেশে ফিরেছিলেন কেরলের ওই ব্যক্তি। এক আগে গত বৃহস্পতিবার কেরলে দেশের প্রথম করোনা-আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিল। ২৪ বছরের ওই মেডিক্যাল পাঠরত ছাত্রী চিনের উহান শহরে পড়াশোনা করছিলেন। গলায় সংক্রমণ নিয়ে ত্রিশূরের একটি হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। সেখানে পরীক্ষা করে দেখা যায়, তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। এর পর থেকে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসা শুরু হয়েছে ওই ছাত্রীর।
আরও পড়ুন: আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস
এই ভাইরাসে আক্রান্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর থেকে গোটা রাজ্যে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করেছে কেরল সরকার। ৭০ জনকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া সতেরোশোরও বেশি বাসিন্দাকে তাঁদের বাড়িতেই পর্যবেক্ষণে থাকতে হচ্ছে। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা জানিয়েছেন, এই ভাইরাসের মোকাবিলায় কেরলে বহুস্তরীয় নজরদারি ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজ্যবাসীর কাছে তাঁর অনুরোধ, সম্প্রতি চিনে ভ্রমণ করলে তা যেন স্বাস্থ্য দফতরে জানানো হয়।
কেরলের মতোই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফেও জানানো হয়েছে, ১ জানুয়ারি থেকে চিনে ভ্রমণকারীদের কারও যদি জ্বর, কাশি বা শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়, তা যেন পরীক্ষা করিয়ে নেন তাঁরা।
গোটা বিশ্বে এই ভাইরাস নিয়ে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই সংক্রমণ রুখতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র তরফে জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও চিনে প্রতি দিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। ইতিমধ্যেই করোনার কবলে চিনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০৪। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শনিবার পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ হাজার। এই আবহে চিনের উহান শহরে আটকে পড়া ৩২৩ জন ভারতীয়কে নিয়ে রবিবার সকালে ফেরে এয়ার ইন্ডিয়ার দ্বিতীয় বিমান। সূত্রের খবর, ওই বিমানে ভারতীয়রা ছাড়া আরও সাত জন মলদ্বীপের নাগরিককেও উহান থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। চিনের ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিক্রম মিসরি টুইট করে এ কথা জানিয়েছেন। শনিবার রাত ৩টে ১০ মিনিটে উহান থেকে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেয় এয়ার ইন্ডিয়ার ওই বিমানটি। এ দিন সকালে দিল্লি বিমানবন্দরে পৌঁছয় তা।
আরও পড়ুন: স্মার্ট প্রি-পেড মিটার লাগানোর প্রস্তাব
গত কাল ৩২৪ জন ভারতীয়কে উহান থেকে দেশে ফিরিয়ে এনেছিল এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিশেষ বিমান। গোটা বিষয়ে সহযোগিতার জন্য চিনের বিদেশমন্ত্রক ও স্থানীয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ভারতীয় রাষ্ট্রদূত। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে দেশে ফেরত আনা ওই ভারতীয়দের আগামী ১৪ দিন হরিয়ানার মানেসরের ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিশেষ শিবিরে রাখা হবে। মিসরি জানিয়েছেন, উহানে হয়তো আরও একশো জন ভারতীয় আটকে রয়েছেন।
আরও পড়ুন: জামিয়ার পরে শাহিন বাগেও গুলি, ধৃত যুবক
করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় কার্যত তালাবন্ধ চিনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর। ওই শহরে এই সংক্রমণের কেন্দ্র বলে মনে করা হচ্ছে। সংক্রমণ ঠেকাতে গত দু’সপ্তাহের মধ্যে চিনে গিয়েছেন, এমন বিদেশিদের প্রবেশ বন্ধ করেছে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর। যদিও ব্যবসা-বাণিজ্য বা পর্যটকদের উপর এই নিষেধাজ্ঞাকে অপ্রয়োজনীয় বলেছে হু।