২০ ফুটের সেই ধাতব চাকু। ছবি: সংগৃহীত।
বাজারে এখন নানা ধরনের, নানা আকৃতির ছুরি বা চাকু দেখা যায়। কিন্তু একটা সময় ছুরির প্রসঙ্গ এলেই নাম উঠে আসত রামপুরের। যে রামপুরেই জন্ম হয়েছিল এক বিশেষ ধরনের ছুরির। যা পরবর্তী কালে ‘রামপুরী চাকু’ নামেই গোটা দেশে পরিচিতি পেয়েছিল। শুধু আমজনতা নয়, বলিউডে অভিনয় জগতেও এই ছুরির বেশ প্রচলন ছিল। সত্তর-আশির দশকে বহু বলিউডি ছবির মারামারির দৃশ্যে খলনায়কদের হাতে এই ছুরি দেখা যেত। তার পর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ছুরির নাম ক্রমশ ফিকে হতে শুরু করে।
কিন্তু সেই ছুরিকে জনমানসের স্মৃতিতে বাঁচিয়ে রাখতে এ বার উদ্যোগী হল সরকার। মূলত উত্তরপ্রদেশের রামপুর জেলায় জন্ম এই ছুরির। এই ছুরিকে রামপুর জেলার একটা বিশেষত্বও বলা যেতে পারে। বহু বছর আগে রামপুরের আনাচেকানাচে এই ছুরি তৈরির কারথান ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ছুরি কারখানাগুলিও উঠে গিয়েছে, কারখানার মালিকরাও অন্য ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছেন। ফলে যে ছুরির জন্য রামপুর সারা দেশে বেশ পরিচিতি লাভ করেছিল, সেই পরিচিতিই ক্রমে জনমানস থেকে ফিকে হয়ে গিয়েছে।
কিন্তু রামপুর জেলা প্রশাসন সেই ‘ঐতিহ্য’কে বাঁচিয়ে রাখতে এগিয়ে এসেছে। শহরের প্রাণকেন্দ্রে ২০ ফুটের একটি ধাতব রামপুর ছুরির স্থাপত্য নির্মাণ করেছে। রামপুর শহরের বিধায়ক আকাশ সাক্সেনা বলেন, “রামপুরী চাকু এক সময় ভয়ের প্রতীক হিসাবে পরিচিত ছিল। কিন্তু সরকার এই ছুরিকে একটা শিল্প হিসাবে জনমানসে বাঁচিয়ে রাখার প্রয়াস নিয়েছে। এই ছুরির কারখানাগুলিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য কর ছাড় দেওয়া যায় কি না, তা-ও ভাবনাচিন্তা করছে সরকার।”
রামপুর শহরের মাঝে যে বিশালাকার ছুরির স্থাপত্য নির্মাণ করা হয়েছে সেটির মূল্য প্রায় ৫৩ লক্ষ টাকা। ছুরিতে যাতে মরচে না ধরে তাই ইস্পাত এবং দস্তা দিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়েছে বলেও জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর। ছুরিটি গিনেস রেকর্ডের জন্যও পাঠানো বলে জানিয়েছে রামপুর প্রশাসন।