২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০০২ সাল। গুজরাতের গোধরা স্টেশনে সবরমতী এক্সপ্রেসে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ৫৯ করসেবকের। —ফাইল চিত্র।
গোধরাকাণ্ডে অভিযুক্ত আরও দুই জনকে যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা দিল আদালত। তবেমঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ আদালতেররায়ে ছাড়া পায় তিন অভিযুক্ত।
এ দিন সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছে গোধরাকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত ফারুক ভানা এবং ইমরান শেরু। ওই মামলায় আরও তিন অভিযুক্ত, হুসেন সুলেমান মোহন, কসম ভামেড়ি এবং ফারুক ধনতিয়াকে মুক্তি দিয়েছে আদালত।সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ বিচারপতি এইচ সি ভোরা এ দিন এই রায় দেন।
২০১৫-’১৬ সালে ফারুক ভানা-সহ ওই পাঁচ জন ধরা পড়ে। এর পর সবরমতী সেন্ট্রাল জেলে তাদের বিচার শুরু হয়। এই মামলায় পলাতক আরও আট অভিযুক্ত।
আরও পড়ুন
নেহরুকে মুছবেন না, মোদীকে মনমোহন
২০০২ সালে ২৭ ফেব্রুয়ারি গুজরাতের গোধরা স্টেশনে সবরমতী এক্সপ্রেসে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ওই ঘটনায় জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা যান ৫৯ জন করসেবক। এর পরে গুজরাত জুড়ে ভয়াবহদাঙ্গা শুরু হয়। উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের তাণ্ডবের বলি হন ১০৪৪ জন। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশ ছিলেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। সে সময় গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীর পদে ছিলেন নরেন্দ্র মোদী।ঘটনার পর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।
এর পর গুজরাত সরকারের তরফে একাধিক কমিশনও গঠন করা হয়। ঘটনার তদন্তে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুন
নোটবন্দিতে জিডিপির ক্ষতি, স্ট্যান্ডিং কমিটির রিপোর্ট চেপে দিল বিজেপি
গোধরাকাণ্ডের তদন্তে গুজরাত সরকারের গঠিত নানাবতী-মেহতা কমিশনের মত ছিল, ট্রেনে আগুন নিছক দুর্ঘটনা নয়, এর পিছনে ষড়যন্ত্রের হাত ছিল। এর ৯ বছর পরে ২০১১-র ১ মার্চ ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট ওই মামলায় ৩১ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে। তাদের মধ্যে ১১ জনের ফাঁসির সাজা হয়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় ২০ জনের। মুক্তি পান অভিযুক্ত ৬৩ জন।গত বছরের অক্টোবরে ওই ১১ জনের ফাঁসির সাজা রদ করে তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেয় গুজরাত আদালত। তবে বাকি ২০ জনের সাজা বহাল থাকে। এর পর গত ২০১৬-র মে মাসে গুজরাতের সন্ত্রাসদমন শাখা (এটিএস)-র হাতে ধরা পড়ে ফারুক ভানা। এটিএস-এর দাবি ছিল, সবরমতী এক্সপ্রেসে আগুন লাগানোর ঘটনায় অন্যতম ষড়যন্ত্রী ছিল ভানা। এ দিন ফারুকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পর এই নিয়ে গোধরাকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্তদের সংখ্যা দাঁড়াল ৩৩।