মাওবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযান বাহিনীর। প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
আবার ছত্তীসগঢ়। নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে সুকমায় নিহত হয়েছেন অন্ততপক্ষে ১৬ জন মাওবাদী। এই সংঘর্ষে সামান্য আহত হয়েছেন বাহিনীর দুই জনওয়ান। তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গোপন সূত্রে তারা খবর পায় সুকমা-দান্তেওয়াড়া জেলার সীমানায় উপমপল্লি কেরলাপাল এলাকায় জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছেন মাওবাদীদের এক দল সদস্য। সেই খবর পাওয়ামাত্রই শুক্রবার রাতে সিআরপিএফ, ডিস্ট্রিক্ট রিজ়ার্রভ গার্ড (ডিআরজি) এবং পুলিশের যৌথবাহিনী ওই এলাকায় তল্লাশি অভিযানে যায়। পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে তল্লাশি চালাচ্ছিল বাহনী।
পুলিশ সূত্রে খবর, বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে জঙ্গলের ভিতর থেকে তাদের লক্ষ্য করে মুহুর্মুহু গুলি ছুটে আসে। পাল্টা জবাব দেয় বাহিনীও। রাতভর গুলির লড়াই চলেছে। শনিবার ভোরেও গুলির লড়াই জারি ছিল। পুলিশের দাবি, এই সংঘর্ষে ১৬ জন মাওবাদী নিহত হয়েছেন। মাওবাদীরা সংখ্যায় কত জন ছিলেন সেই সংখ্যাটি স্পষ্ট হয়নি। তবে তাঁদের দলে যে অনেকেই ছিলেন প্রাথমিক ভাবে সেই অনুমান করা হচ্ছে। ১৬ মাওবাদীর দেহ উদ্ধার হয়েছে। বাকি মাওবাদীদের খোঁজে জঙ্গলে চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে বাহিনী।
গত ১৯ মার্চ দান্তেওয়াড়া জেলার সীমানার কাছে বীজাপুরের গঙ্গালুর থানা এলাকায় রাজ্য পুলিশের টাস্ক ফোর্স এবং ডিস্ট্রিক্ট রিজ়ার্ভ গার্ডের যৌথ বাহিনীর সঙ্গে মাওবাদীদের গুলির লড়াইয়ে ২৬ জন সন্দেহভাজন মাওবাদীর দেহ উদ্ধার হয়। প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র এবং বিস্ফোরকও উদ্ধার হয়। ওই অভিযানে ডিস্ট্রিক্ট রিজ়ার্ভ গার্ডের এক জওয়ানেরও মৃত্যু হয়েছিল। গত মঙ্গলবার দান্তেওয়াড়া এবং বিজাপুর জেলার সীমানায় নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে তিন মাওবাদী নিহত হন।
গত ১৯ জানুয়ারি থেকে ছত্তীসগঢ়, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা আন্তঃরাজ্য অভিযান চালাচ্ছে যৌথবাহিনী। ইতিমধ্যেই সংঘর্ষে দুশোর বেশি মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে ওই তিন রাজ্যে। নিহতদের তালিকায় রয়েছেন মাওবাদী কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জয়রাম ওরফে চলপতি। আত্মসমর্পণ করেছেন নিহত মাওবাদী নেতা মাল্লোজুলা কোটেশ্বর রাও ওরফে কিষেণজির ভ্রাতৃবধূ বিমলা। তাঁর স্বামী মাল্লোজুলা বেণুগোপাল রাও ওরফে ভূপতি ওরফে বিবেক ওরফে সোনু নিষিদ্ধ সংগঠন সিপিআই (মাওবাদী)-র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।
২০২৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে দেশ ‘মাওবাদীমুক্ত’ করার ঘোষণা আগেই করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ২০২৩ সালে বিজেপি ছত্তীসগঢ়ের ক্ষমতায় আসার পরে মাওবাদী দমনে যৌথ বাহিনীকে খোলা ছাড় দেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসনিক কিছু সূত্রের দাবি। তার পর থেকেই পুরো শক্তি কাজে লাগিয়ে মাওবাদী দমন অভিযান চলছে।