পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্ট। ফাইল চিত্র।
১৫ বা তার থেকে বেশি বয়সি কোনও মুসলিম কিশোরী যদি নিজের ইচ্ছেয় বিয়ে করেন, সেই বিয়ে আইনত বৈধ। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আইন এ ক্ষেত্রে কার্যকর করা যায় না। একটি মামলার রায় দিতে গিয়ে এ কথা জানিয়েছে পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্ট। এই মামলায় ১৬ বছর বয়সি স্ত্রীকে তার স্বামীর কাছে পাঠানোরও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
২৬ বছর বয়সি আবেদনকারী জাভেদ আইনজীবীর মাধ্যমে পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টে জানিয়েছিলেন, তাঁর ১৬ বছর বয়সি মুসলিম স্ত্রীকে হরিয়ানার পঞ্চকুল্লায় সরকারি হোমে রেখে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা নিজেদের ইচ্ছেয় বিয়ে করেছেন এবং বিয়ের সময়ে স্ত্রী-র বয়স ছিল ১৬। গত ২৭ জুলাই চণ্ডীগড়ের মনি মাজরায় একটি মসজিদে তাঁদের নিকাহ্ হয়েছে। সেই বিয়েতে কোনও পক্ষের উপরেই চাপ সৃষ্টি করা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে সরকারি হোম থেকে তাঁর স্ত্রীকে তাঁর কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আদালতে আর্জি জানান জাভেদ।
তবে সরকারি আইনজীবী এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বলেন, ওই কিশোরী যে হেতু নাবালিকা, তাই আশিয়ানা হোমে তাকে রাখা হয়েছে। জাভেদের আর্জি খারিজ করার জন্য সওয়াল করেন তিনি। জাভেদের আইনজীবী এই বিষয় নিয়ে ‘ইউনুস খান বনাম হরিয়ানা সরকার’ মামলাটির পর্যবেক্ষণের কথা উল্লেখ করেন। তাঁর যুক্তি, ওই মামলায় হাই কোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তার পরে তাঁর মক্কেল জাভেদের স্ত্রীকে হোম থেকে নিয়ে আবেদনকারীর কাছেই ফিরিয়ে দেওয়া উচিত।
পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টের বিচারপতি বিকাশ বহেলের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জাভেদের হেবিয়াস কর্পাস পিটিশনের বিচার করতে গিয়ে ইউনুস খানের মামলার রায়ের প্রসঙ্গ টেনে এনেছে। আদালত জানিয়েছে, মুসলিম পার্সোনাল ল অনুযায়ী মুসলিম মহিলাদের বিয়ে হয়ে থাকে। আর হাই কোর্টের বেঞ্চ মুসলিম সম্প্রদায়ের সেই আইনের মূল নীতির উপর বিশ্বাস রাখে। ১৫ বছর বয়সে মুসলিম মহিলাদের যৌবনারম্ভ হয় বলে ধরে নেওয়া হয়। এবং তার পরে সেই মহিলা নিজের ইচ্ছেয় পছন্দের কাউকে বিয়ে করতেই পারেন। হাই কোর্ট বলেছে, ‘‘এই ধরনের বিয়েকে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আইন, ২০০৬-এর ১২ নম্বর ধারা অনুযায়ী বাতিল করা সম্ভব নয়।’’ হাই কোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, ‘‘ইউনুস খান মামলার রায় এই ক্ষেত্রেও কার্যকর হবে।’’ এর পরেই ওই হোমকে আদালত নির্দেশ দিয়েছে, জাভেদের ১৬ বছর বয়সি স্ত্রীকে তাঁর কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হোক।