ভেঙে পড়া সেই বিলবোর্ড। ছবি: পিটিআই
মুম্বইয়ের ঘাটকোপরে বিলবোর্ড ভেঙে পড়ার ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ১৪। আহতের সংখ্যা অন্তত ৬০। বিলবোর্ডের নীচে আর কেউ চাপা পড়ে রয়েছেন কি না, তা দেখতে এখনও অভিযান চালাচ্ছেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যেরা। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী তথা শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্ডে নিহতদের ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে মুম্বই শহরের বিলবোর্ডগুলি নিয়ম মেনে লাগানো হচ্ছে কি না, তার তদন্ত করারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। রাজ্য প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে, এই বিলবোর্ডগুলি যে ধাতব কাঠামোর উপরে লাগানো হয়, সেগুলির রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে কি না, সে দিকে নজর দিতে হবে।
সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ হঠাৎই আকাশ কালো করে ঝড় ওঠে মুম্বইয়ে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই শুরু হয় ধুলো ঝড়। সঙ্গে মুষলধারে বৃষ্টিও। ঝড়ের ধাক্কায় ঘাটকোপর এলাকায় উপড়ে যায় বিজ্ঞাপনের বিশালাকার ধাতব বোর্ডটি। ভেঙে পড়া সেই বিলবোর্ডের নীচে চাপা পড়েন অনেকেই। ঘটনাস্থলের যে সমস্ত ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসে, তাতে দেখা যায়, বিজ্ঞাপনী বোর্ডটি ভেঙে পড়ছে একটি পেট্রল পাম্পের উপর। যার আঘাতে দুমড়ে গিয়ে নীচে নেমে আসে পেট্রল পাম্পের ছাদ। চাপা পড়ে পেট্রল পাম্পে দাঁড়িয়ে থাকা কিছু গাড়িও। বিলবোর্ডের ধাতব কাঠামো বহু গাড়ির ছাদ ফুঁড়ে ঢুকে যায়।
স্থানীয়দের তরফে জানা গিয়েছে, ঝড়বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছিলেন পেট্রল পাম্পে। কেউ কেউ এসেছিলেন তেল ভরাতেও। আর সেই সময়েই ঘটে যায় দুর্ঘটনা। মহারাষ্ট্রের পন্থনগরের বাসিন্দা বালাজি শিন্ডেও বিলবোর্ডের নীচে চাপা পড়েছিলেন। তবে কোনও ক্রমে প্রাণে বেঁচে যান। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে বিলবোর্ডের নীচে আটকে থাকার পর তাঁকে উদ্ধার করেন বিপর্যয় মোকাবিলায় আসা দলের সদস্যেরা। তাঁর স্ত্রী রমা বলেন, “সন্ধ্যায় একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় তেল ভরার জন্য আমরা গাড়ি নিয়ে পেট্রল পাম্পটায় ঢুকি। তার পরেই এই দুর্ঘটনা। গোবান্দির বাসিন্দা স্বপ্নিল খুপতের গলায় আক্ষেপের সুর। তাঁর কথায়, “ঝড়বৃষ্টি থেকে বাঁচতে দৌড়ে পেট্রল পাম্পে ঢুকলাম। তার পরেই বিশাল আকারের বিলবোর্ডটা ভেঙে পড়ল। নিজে বেঁচে গিয়েছি। তবে কত লোককে যে চোখের সামনে চাপা পড়তে দেখলাম!”