প্রতীকী ছবি।
নাগরিকত্ব ও অনান্য তথ্য প্রমাণ দেওয়া সত্ত্বেও ত্রিপুরায় ধৃত ১২ জন বাংলাদেশি নাগরিককে ফেরত নিচ্ছে না বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। দু’সপ্তাহ ধরে বিজিবি-র টালবাহানায় প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে এঁদের, যার মধ্যে ৪ জন মহিলা ও ৭ জন শিশু। শেষ পর্যন্ত বিজিবি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, ওই ১২ জনকে বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না। তার পরে আজ তাঁদের ত্রিপুরা পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে বিএসএফ। পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতীয় পাসপোর্ট আইনে মামলা করে আদালতে তোলে। আদালত ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে ১২ জনকে।
মধুপুর থানার কমলাসাগরের মিয়াঁপাড়া সীমান্ত এলাকায় ১১ জুলাই ওই ১২ জনকে বিএসএফ আটক করে৷ এঁদের বাড়ি বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার চান্দিনা থানার হরিকোলা গ্রামে৷ বিএসএফের এক কর্তা জানান, কুলসুম বিবি (৬০), বার্শিদা বেগম (৩৫), রাজিতা বেগম (৩০), মহিনুদ্দিন (২২), সাজানা বেগম (২১), সাকিল মিয়া (১৪), রবিনা খাতুন (১২), সাকিব (১১), রাজা হোসেন (৯), রেশমি আখতার(৪), আলিয়া খাতুন(৩) এবং রাজাউল হোসেন (২)— এঁরা প্রত্যেকেই বাংলাদেশি নাগরিক। তাঁদের কাছে তার তথ্যপ্রমাণও রয়েছে। পুলিশের জেরায় তাঁরা জানিয়েছেন, বেদে সম্প্রদায়ের মানুষ তাঁরা। সাপ ধরা ও জড়িবুটি বিক্রি করে উপার্জন করেন।
ধরা পড়ার পরে বিএসএফ তাঁদের বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীদের হাতে তুলে দিতে চাইলে বিজিবি তাঁদের নিতে রাজি হয়নি। তার পরে এত দিন দু’দেশের সীমান্তের মধ্যবর্তী এক ফালি ‘জিরো পয়েন্টে’ একটি ছোট্ট ঘরে অবর্ণনীয় দুর্দশার মধ্যে কোনও ক্রমে মাথা গুঁজে ছিলেন এই ১২ জন। বিএসএফের ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় মানুষেরা তাঁদের দু’বেলা খাবারের ব্যবস্থা করে। জল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীও তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল।
এঁদের বিষয়টি নিয়ে বিজিবি এবং বিএসএফের মধ্যে কয়েক বার ফ্ল্যাগ মিটিং হলেও সমাধান মেলেনি৷ বিজিবি-র তরফ থেকে বলা হচ্ছে, এঁরা যে বাংলাদেশি নাগরিক, তার সন্তোষজনক প্রমাণ নেই৷ বিএসএফ বলছে, ধৃতরা যে প্রত্যেকেই বাংলাদেশের নাগরিক, তা নিয়ে সন্দেহ নেই৷ তাঁদের কাছে তার কাগজপত্রও রয়েছে।