পুলিশ জানিয়েছে, মৃত মহিলার নাম রাজ্যলক্ষ্মী (৪১)। পেশায় তিনি একটি বেসরকারি কলেজের শিক্ষিকা। তাঁর বছর দশেকের একটি ছেলে রয়েছে। নাম শ্যাম কিশোর। তিরুপতিতে ছেলেকে নিয়ে একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন রাজ্যলক্ষ্মী।
প্রতীকী ছবি।
মেঝেতে নিথর পড়ে আছেন মা। বছর দশেকের ছেলে ভেবেছিল মা নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছেন। অতএব তাঁকে জ্বালাতন না করাই ভাল। তাই মায়ের ঘুমের ব্যাঘাত না ঘটিয়েই সকাল হতেই উঠে নিজে স্নান করে, ঘরে রাখা খাবার খেয়ে স্কুলে চলে যেত। স্কুল থেকে ফিরে মাকে না ডেকে নিজের কাজ করে ফের মায়ের পাশেই শুয়ে পড়ত।
এ ভাবে এক, দু’দিন, তিন দিন কেটে গিয়েছিল। মহিলাকে না দেখতে পেয়ে পড়শিরা ছেলেটিকে জিজ্ঞাসা করেছিল, ‘তোর মা কোথায় রে? দেখা যাচ্ছে না কেন?’ নির্লিপ্ত সুরে ছেলেটি তাঁদের প্রতি দিনই বলত, ‘মা ঘুমোচ্ছে।’ কিন্তু চতুর্থ দিনে মহিলার গা থেকে দুর্গন্ধ বেরোতে শুরু করায় ছেলেটি তার মামাকে ফোন করে। তাঁকে বলে, ‘মামা, মায়ের গায়ের থেকে কেমন যেন পচা গন্ধ বেরোচ্ছে!’ ছেলেটিকে তার মামা এর পর জিজ্ঞাসা করে, ‘তোর মা কোথায়?’ ছেলেটি বলে, ‘মা তো চার দিন ধরে মেঝেতে ঘুমোচ্ছে!’ ভাগ্নের কথা শুনে একটু সন্দেহ হওয়ায় সোজা চলে আসেন বোনের বাড়িতে। ঘরে ঢুকতেই চমকে ওঠেন তিনি। মেঝেতে নিথর হয়ে পড়ে রয়েছেন তাঁর বোন। ঘরে কটূ গন্ধে ভরে গিয়েছিল। তিনি সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। ঘটনাটি হায়দরাবাদের তিরুপতির।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত মহিলার নাম রাজ্যলক্ষ্মী (৪১)। পেশায় তিনি একটি বেসরকারি কলেজের শিক্ষিকা। তাঁর বছর দশেকের একটি ছেলে রয়েছে। নাম শ্যাম কিশোর। তিরুপতিতে ছেলেকে নিয়ে একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন রাজ্যলক্ষ্মী। কর্নাটকে পিএইচডি করছিলেন তিনি। সম্প্রতি সেই পড়া শেষ হয়েছে। ৯ মার্চ সেই ডিগ্রির শংসাপত্র আনতে কর্নাটকের বেলগাভিতে যাওয়ার কথা ছিল। সব ঠিকঠাক হয়ে গিয়েছিল। বিষয়টি তাঁর ভাই দুর্গাপ্রসাদকেও জানিয়েছিলেন রাজ্যলক্ষ্মী। সেই সঙ্গে জানিয়েছিলেন গত কয়েক দিন ধরে মাথা যন্ত্রণায় ভুগছেন। কর্নাটক থেকে ফিরে চিকিৎসকের কাছে যাবেন।
কিন্তু ৯ মার্চ রাতেই বিছানা থেকে পড়ে মাথায় আঘাত পেয়ে মৃত্যু হয় রাজ্যলক্ষ্মীর। প্রাথমিক ভাবে মনে করছে পুলিশ। কিন্তু রাজ্যলক্ষ্মীর যে মৃত্যু হয়েছে সেটা তার ছেলে বুঝতে পারেনি। মা ঘুমোচ্ছে ভেবে সে নিজেই স্নান, খাওয়া সেরে স্কুলে চলে যেত। আবার রাতে মায়ের পাশেই শুয়ে পড়ত। তিন দিন এ ভাবে কাটার পর গত শনিবার মায়ের গায়ে পচা গন্ধ পেয়েই ছেলেটি তার মামাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, ছেলেটি মানসিক ভারসাম্যহীন।