শিশু মৃত্যু অব্যাহাত বিহারে। ছবি: পিটিআই।
এনসেফ্যালাইটিসের প্রকোপে বিহারের মৃত্যুমিছিল অব্যাহত। গত ১৬ দিনে সেখানকার হাসপাতালগুলিতে ১০০ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। অ্যাকিউট এনসেফালাইটিস সিন্ড্রোমে (এইএস) আক্রান্ত হয়ে এখনও ৩০০ শিশু ভর্তি সেখানে। আইসিইউ-তে চিকিৎসা চলছে তাদের। এই ঘটনায় প্রশ্নের মুখে নীতীশ কুমার সরকার। সময় মতো চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ আক্রান্তদের পরিবারের।
রাজ্য সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্রীকৃষ্ণ মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে (এসকেএমসিএইচ)-এ এখনও পর্যন্ত ৮৩ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ১৭ শিশু মারা গিয়েছে কেজরীবাল হাসপাতালে। তাদের প্রত্যেকের বয়স ১০ বছরের মধ্যে। তবে বেসরকারি হিসাবে মৃত্যুর সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে বলে খবর। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈশালীতে ১২ এবং মুজফ্ফরপুরে ১০৪ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়াও, মোতিহারি, পটনায় দু’জন এবং সমস্তিপুরে আরও পাঁচ শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর।
কিউলেক্স বিশনুই নামের এক ধরনের মশা এনসেফ্যালাইটিস ছড়ায়। এতে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর, মাথা ধরার মতো উপসর্গ দেখা যায়। এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত হলে শারীরিক ভাবে অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়ে শিশুরা। অবিলম্বে বর্ষা শুরু না হলে, এই মৃত্যু মিছিল চলবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন শ্রী কৃষ্ণ মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিনটেনডেন্ট এসকে শাহী। যদিও আগেই এনসেফ্যালাইটিসের তত্ত্ব উড়িয়ে দেয় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। তাদের দাবি এটি হাইপোগ্লাইসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়েই শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। রক্তে শর্করার মাত্রা অত্যন্ত কমে যাওয়াকে চিকিৎসার ভাষায় হাইপোগ্লাইসেমিয়া বলে।
আরও পড়ুন: জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে পৌঁছল নবান্নের আমন্ত্রণপত্র, তবে মিডিয়ার উপস্থিতি নিয়ে টানাপড়েন এখনও চলছে
আরও পড়ুন: এনআরএস ঘটনার প্রতিবাদে দেশ জুড়ে ধর্মঘট চিকিৎসকদের
মৃতদের পরিবার পিছু ইতিমধ্যেই চার লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রবিবার মুজফ্ফরপুর পৌঁছন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনও। সেখানে আক্রান্ত শিশুদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। চিকিৎসকদের তরফে চেষ্টায় কোনও ত্রুটি রাখা হচ্ছে না বলে দাবি করেন তিনি। তবে সেই সঙ্গে জানিয়ে দেন, এনসেফ্যালাইটিস রুখতে অবিলম্বে বিহারে গবেষণার জন্য উৎকর্ষ কেন্দ্র প্রয়োজন। এনসেফ্যালাইটিস নিয়ে যে সমস্ত সংগঠন কাজ করছে, তাদের একজোট হয়ে কাজ করা উচিত।
গোটা পরিস্থিতির জন্য শুরু থেকেই স্বাস্থ্য দফতরের গাফিলতিকেই দায়ী করে আসছেন সাধারণ মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্যের উত্তরে প্রথম এনসেফ্যালাইটিস ধরা পড়ে। তখনই ব্যবস্থা নিলে এত প্রাণহানি এড়ানো যেত। গ্রামাঞ্চলের বহু মানুষ হাসপাতালে এসে পৌঁছনোর সুযোগটুকুও পাননি বলে দাবি তাঁদের।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।