ভারতবর্ষ আধ্যাত্মিকতার দেশ। ধর্ম, দেবদেবীর- দেবালয়, এদেশের মানুষের জীবন যাত্রার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
পথে- প্রান্তরে, জনপদে, দুর্গম পাহাড়ে বন্দরে এদেশে দেবালয়ে প্রতিষ্ঠা হয়ে আসছে আবহমান কাল থেকে।জনজীবনের সঙ্গে মন্দির বা দেবালয় নির্মানের সর্ম্পক এমনই ঘনিষ্ঠতা পেয়েছে যে এক্ষেত্রে শুভাশুভ বিচারের প্রয়োজন বোধ করছে প্রাচীন বাস্তুশাস্ত্র। বাস্তুশাস্ত্রে মন্দির নির্মান সর্ম্পকে কয়েকটি বিধান ও নির্দেশঃ-
১। মন্দির নির্মাণ হওয়া উচিত জনবসতির কাছাকাছি কোন নির্জন অঞ্চলে।
২। জনবহুল কোলাহলপূর্ন স্থানে মন্দির নির্মাণ করা উচিত নয়।
৩।মন্দির নির্মাণের উদ্দেশ্যে বর্গাকার অথবা আয়তাকার জমি সংগ্রহ করা উচিত।
৪। মন্দিরের পক্ষে অনুকুল জমি সেইটি যার পশ্চিমদিকে, দক্ষিণদিকে অথবা দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে পাহাড় বা উচ্চভূমি থাকবে।
৫। উত্তর, পূর্ব ও উত্তর-পূর্বমুখে প্রবাহিত নদীর পাশের জমি মন্দির নির্মাণের পক্ষে প্রশস্ত।
৬। মন্দিরের পূর্বমুখী বা উত্তরমুখী দ্বার বিশেষ শুভদায়ক।
বিঃ দ্রঃ- আজকাল শহরে গ্রামে, বিশেষ বিশেষ মহল্লায়, মানুষের বসবাসের স্থানের গা ঘেঁষাঘেঁষি করে সমাজ, সম্প্রদায়ের নামে অর্থশালী ভক্তদের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় মন্দির স্থাপন হয়ে চলেছে। এসব মন্দির প্রায়শঃই শাস্ত্রানুমোদিত বিধি মতে প্রতিষ্ঠিত হয় না, বাস্তু বিধিও প্রতিপালিত হয় না। কাজেই এ সকল মন্দির আশানুরূপ ফল প্রদানে অক্ষম। পূজাপাঠ এসব দেবাস্থানে নিস্ফল হয়। আড়ম্বর আর অর্থহীন আচার অনুষ্ঠানই প্রাধান্য পায় এ সকল মন্দিরে।