কালাযাদু, ব্ল্যাক ম্যাজিক, ডাকিনী বিদ্যা, ব্ল্যাক আর্ট— যে নামেই এদের ডাকা হোক না কেন, মূলত এই বিদ্যা বা কাজটি একই। দেশ-কাল-স্থান ভেদে বিভিন্ন নামে এদের অভিহিত করা হয়ে থাকে। এগুলিকে এককথায় ম্যাজিক্যাল ফেনোমেনা বলে।
ম্যাজিক্যাল চর্চায় ভাল ও খারাপ দু’টি ভাগ আছে। হোয়াইট আর্ট বা সাদা জাদু সব সময়েই ভাল, কারণ এতে মানুষের মঙ্গল হয়। যেমন, নানা ধরনের স্পেল (spell) চর্চা বা নানা ধরনের টোটকার উল্লেখ হামেশাই জ্যোতিষে করা হয়ে থাকে। ফেং শ্যুই চর্চা, বাস্তুমতে অশুভ প্রতিকার, নানা যজ্ঞ, দানধ্যান, সব সাদা ম্যাজিকের মধ্যে পড়ে।
সব ধরনে মেডিক্যাল ট্রিটমেন্ট, কবিরাজি, ইউনানি, হেমিওপ্যাথি চর্চা পুরোপুরি সাদা জাদুর মধ্যে পড়ে। জ্যোতিষে যা আমরা ষষ্ঠ ভাব থেকে ম্যাজিক্যাল বিষয় বিচার করি। নার্সিং সাদা জাদুর মধ্যে পড়ে। ইংরেজিতে এই সব আরোগ্যকারী বিদ্যাকে ও ব্ল্যাক ম্যাজিককে একসঙ্গে ম্যাজিক্যাল ফেনোমেনা বলা হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: কালা যাদু বা ব্ল্যাক ম্যাজিক কী (শেষ অংশ)
আর কালা জাদু, ডাকিনীবিদ্যা মানে খারাপ ম্যাজিক। এর উদ্দেশ্য সব সময়েই অন্যের ক্ষতি করা। ব্ল্যাক ম্যাজিকের নানা রকম ভাগ আছে। আমাদের তন্ত্রের অনেকটা অংশ ব্ল্যাক ম্যাজিকের মধ্যে পড়ে। তন্ত্রের বহু কল্যাণকর দিক রয়েছে সেগুলি সাদা জাদুর মধেই পড়ে।
কোনও জাতক/জাতিকার করতলে যদি নীচের উল্লিখিত পাঁচটি চিহ্ন থাকে বা পাঁচটির মধ্যে দুই বা তিনের বেশি চিহ্ন থাকে তবে সেই জাতক/জাতিকা নানা ভাবে কালা জাদুচর্চা করতে পারে। সে যদি সরাসরি চর্চা না-ও করে তা হলেও প্রয়োজনে কালজাদুর সাহায্য নিতে পারে।
নীচের পাঁচটি চিহ্ন হল: ১) মিস্টিক ক্রস, ২) সাইকিক ক্রস, ৩) মিস্টিক ত্রিভুজ (বুধের ক্ষেত্রে), ৪) হিলার মার্ক বা আরোগ্যকারী চিহ্ন (বুধের ক্ষেত্রে), ৫) এস্টাল লাইন যা আয়ুরেখার নীচের দিকে আয়ুরেখা থেকে বেরিয়ে থাকে।
১) মিস্টিক ক্রস বা গুহ্য ক্রস:
করতলে হৃদয়রেখা ও শিরোরেখার মাঝে যে অঞ্চল পড়ে সেখানেই মিস্টিক ক্রস থাকে। তবে মূলত ভাগ্যরেখাকে জুড়ে বা ভাগ্যরেখার পাশে যে ক্রসচিহ্ন থাকে তাকেই মূলত মিস্টিক ক্রস বলে।
হাতে মিস্টিক ক্রস অতি শুভচিহ্ন। বহু জ্ঞানী, বরেণ্য দেশনায়ক, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী, গবেষকের হাতে এই চিহ্ন থাকে।
এই মিস্টিক ক্রস অন্য আর চারটি চিহ্নের সঙ্গে যদি করতলে থাকে তা হলে সে ব্ল্যাক ম্যাজিকের চর্চা করতে পারে।
২) সাইকিক ক্রস:
এই সাইকিক ক্রস চারটি স্থানে গড়ে ওঠে। কারও থাকে বৃহস্পতির মাউন্টে, কারও শনির বা রবির বা বুধের মাউন্টে। কারও একের বেশি মাউন্টে থাকে।
আলাদা ভাবে বৃহস্পতি ছাড়া বাকি তিনটি মাউন্টে সাইকিক ক্রস খারাপ ফল দিয়ে থাকে।
বৃহস্পতির ক্ষেত্রে সাইকিক ক্রস: এ ক্ষেত্রে এই সাইকিক ক্রস দাম্পত্য সুখ ও অর্থসম্পদ বর্ধিত করে থাকে, এরা জ্ঞানী ও গুণী ব্যক্তি হিসেবে সমাজে নাম কিনে থাকে।
শনির ক্ষেত্রে সাইকিক ক্রস থাকলে: শনি মূলত ডাইনি বিদ্যার কারক গ্রহ। তাই বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নানা অস্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপে জড়িয়ে পড়ে। যারা জড়ায় না তারা অবসাদে ভোগে। জীবনকে নঙর্থক দিক থেকে দেখে থাকে।
রবির ক্ষেত্রে সাইকিক ক্রস থাকলে: রবির ক্ষেত্রে এই সাইকিক ক্রস থাকলে এরা মানুষকে মুগ্ধ করে নিজের কাজ হাসিল করে। তাই এদেরকে এনচেন্টার বলে। খুব ভাল ভাবে এই সাইকিক ক্রস থাকলে এরা প্রেম ও সেক্সের ক্ষেত্রে অন্যকে মুগ্ধ করার শক্তিকে কাজে লাগিয়ে নিজের উদ্দেশ্যসিদ্ধির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে থাকে।
বুধের ক্ষেত্রে সাইকিক ক্রস: চারটি মাউন্টের মধ্যে সাইকিক ক্রস সব থেকে খারাপ ফল দিয়ে থাকে, বুধের ক্ষেত্রে এই ক্রস থাকলে। এদেরকে কেউ কেউ ‘বর্ন চিটার’ বলে থাকে, বিশেষ করে যাদের কড়ে আঙুলের গড়ন যদি অস্বাভাবিক থাকে। এরা খুব অল্প বয়স থেকে এই সব গুহ্যবিদ্যার প্রতি আকর্ষিত হয়। নানা স্থানে গিয়ে এই বিদ্যা আয়ত্ত্ব করার চেষ্টা চালিয়ে যায়।