সৌরমণ্ডলের ষষ্ঠ, এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রহ শনি।
সূর্য এবং ছায়ার পুত্র শনিদেব। প্রবাদ আছে, শনিদেব যার দিকে তাকাবেন, তিনিই ধ্বংস হবেন। স্ত্রীর প্রতি অবহেলার কারণেই প্রাপ্ত এই অভিশাপ। শনিদেবও কারও দিকে তাকিয়ে কথা বলেন না। পার্বতী পুত্র গণেশের জন্মের পর পার্বতী শনিদেবকে পুত্রের মুখ দেখে আশীর্বাদ করতে অনুরোধ করেন। শনিদেব অনিচ্ছা প্রকাশ করেন। পার্বতীও নারাজ। বাধ্য হয়েই পার্বতী পুত্রের মাথায় দৃষ্টি দিতেই মাথা পুড়ে ছাই। ক্ষুব্ধ পার্বতী অচেতন হলেন, ভগবান বিষ্ণুর তৎপরতায় এক হস্তি মস্তক এনে পার্বতী পুত্রের মাথায় রাখতেই জীবন ফিরে পান। দেবীর জ্ঞান ফিরে পুত্রের রূপ দেখে ক্ষুব্ধ পার্বতী শনিদেবকে শাপমুক্ত করেন এবং গ্রহের স্থান দেন।
জ্যোতিষ শাস্ত্রে পরম যোগী, পরম ত্যাগী, পরম পবিত্র, পরিশ্রমী, শৃঙ্খলা, ন্যায়পরায়ণ এবং ন্যায়বিচারক গ্রহ শনি। শনি সাধারাণত মারক গ্রহ নয়। মানুষের মনুষ্যত্ব জাগ্রতকারী গ্রহ শনি। লোহা এবং সোনা যেমন আগুনে পুড়িয়ে শুদ্ধ করে ব্যবহারের উপযোগী করা হয়, ঠিক তেমনই দুঃখ এবং কষ্টের আগুনে পুড়িয়ে আমাদের পরিশুদ্ধ করেন শনিদেব।
আরও পড়ুন: অশুভ গ্রহের কুফল নষ্ট করতে পারে বৃহস্পতির শুভ প্রভাব
শনি একটি রাশিতে সবচেয়ে বেশি দিন (আড়াই বছর) অবস্থান করেন। সঞ্চার কালে একাদশে (লগ্নের) অধিক অর্থলাভের সুযোগ দিয়ে পরীক্ষা করেন। সেই সময় অসৎ বা উশৃঙ্খল জীবনযাপন করলে পরবর্তী রাশিতে অশুভ ফল মেলে। শনি বৃহস্পতির প্রভাবকে সদা সম্মান করেন। সামনে পিছনে দেবগুরু বৃহস্পতিকে নিয়েই চলেন।
শনি শুভ ভাবে থাকলে, পাণ্ডিত্য, শান্ত ভাব, ঐশ্বর্য, প্রজ্ঞা, গাম্ভীর্য, ন্যায়বিচার ক্ষমতা দান করে থাকেন। অশুভ ভাবে থাকলে, শোক, দুঃখ, দারিদ্র, কপটতা, নিষ্ঠুরতা, দান করে থাকেন। অর্থহানি, আত্মীয় বিয়োগ, বাস্তুত্যাগ, ন্যায়বিচার ক্ষমতা হ্রাসের মতো অশুভ ফল ও দিতে পারেন।
শনির প্রিয় ধাতু সীসা এবং লোহা। প্রিয় রং নীল। শনির আরাধ্য দেবী দক্ষিণাকালী। শনিবার সন্ধ্যায় শুদ্ধাচারে সর্ষে বা তিলের তেলের প্রদীপ দানে শনিদেব প্রসন্ন হন। শনিবার সাত্বিক থাকার চেষ্টা করুন।