১) বাস্তুশাস্ত্র আর ফেং শ্যুই, উভয়েই মানবকল্যাণে গৃহে পজিটিভ বা ধনাত্মক এনার্জি বৃদ্ধি করে পরিবারের লোকদের সুখসমৃদ্ধি বাড়ায়।
২) ব্রহ্মা আমাদের প্রত্যেকের শরীরকে গড়ে তুলেছেন আত্মার বসবাসের উপযোগী করে তুলেছেন পাঁচটি তত্ত্বের সাহায্যে। যেমন, ক্ষিতি, অপ, তেজ, বায়ু, মরুত, ব্যোম। বাস্তুবিজ্ঞান তাই একই সঙ্গে জাগতিক ও আধ্যাত্মিকতার সঙ্গে জড়িত। বাস্তুবিজ্ঞানে গোটা ‘বাস্তু’কে জীবন্ত কিছু বলে মনে করা হয় যার ভিতর ‘প্রাণ’ আছে। অন্য দিকে ফেং শ্যুই আমাদের শেখায় কী ভাবে পরিবেশের সঙ্গে ব্যালান্স করে বেঁচে থাকা যায়।
৩) বাস্তুর মূলে রয়েছে বিজ্ঞান আর ফেং শ্যুইয়ের মূলে ভূগোল এবং এনার্জি ব্যাল্যান্সিং তত্ত্ব।
৪) বাস্তুবিজ্ঞানের কাছে শুভ উত্তর ও পূর্ব দিক যেখান ভারতীয় বাস্তুমতে ইলেক্ট্রো-ম্যাগনেটিক এনার্জি ও সোলার এনার্জির অফুরন্ত ভাণ্ডার যা গৃহে প্রতিনিয়ত প্রবাহিত হচ্ছে কিন্তু ফেং শ্যুইয়ের কাছে তা অশুভ দিক। অন্য দিকে ফেং শ্যুইয়ের কাছে শুভ দিক দক্ষিণ এবং অগ্নিকোণ (দক্ষিণ-পূর্ব দিক) যেখান থেকে শরীর ও মনের জন্য গরম বা ওয়ার্মথ এনার্জির সরবরাহ। এ দিক আবার অর্থ আসার দিক।
আরও পড়ুন: শুক্রের প্রতিকারে কী করণীয়?
৬) ঘুমের সময়ের দিক নির্ণয়ের ব্যাপারে বাস্তমতে দক্ষিণ বা অগ্নি কোণে মাথা রেখে শোয়ার কথা বলা হয়েছে, কিন্তু ফেং শ্যুই এর মতে ব্যক্তি অনুযায়ী এক এক জন এক এক দিকে মাথা রেখে শোবে, সেটা গণনা করে বের করে নিতে হবে।
৭) ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুত ও ব্যোম— এই পাঁচটি তত্ত্বের উপর ভারতীয় হিন্দুর বাস্তুশাস্ত্র প্রতিষ্ঠিত, এর পর এর সঙ্গে জড়িত জ্যোতিষ, জটিল অঙ্ক ও অ্যাস্ট্রনমি বা জ্যোতির্বিজ্ঞান। অপরদিকে ফেং শ্যুই এর পাঁচটি তত্ত্ব— ধাতু, কাঠ, মাটি, জল ও বায়ু। ফেং শ্যুই এর ফেং জল আর শ্যুই মানে বায়ু।
(৮) ভারতীয় বাস্তু মতে শুভ বা লাকি জিনিস বলতে বোঝায় তুলসিগাছ, গণেশ বা বিনায়ক মূর্তি। ফেং শ্যুই এর মতে লাকি বা শুভ হচ্ছে লাফিং বুদ্ধ, বাঁশগাছের ঝাড় যা অর্থ, ভাগ্য্ ও সম্পদ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে।
(৯) বাস্তু শাস্ত্রের ব্যাপক ভূমিকা মাটি নির্বাচন থেকে ভবন নির্মাণ, কোন ঘর কী কাজে ব্যবহার হবে, তার ব্রহ্মস্থান নির্বাচন, ঈশান কোণ নির্বাচন ইত্যাদি। আর সে দিক থেকে ফেং শ্যুইয়ের দিক নির্দেশনা খুবই সীমিত, ঘরে আসবারপত্রের অবস্থান ফেং শ্যুই করে থাকে, এনার্জি ব্যালেন্সিং ফেং শ্যুই এর অন্যতম প্রধান কাজ।
(ক্রমশ)