গণেশ সিদ্ধিদাতা। তাঁর নাম স্মরণে যাত্রা শুভ হয়, কার্যসিদ্ধি ঘটে, অঘটন রোধ সম্ভব হয়। কিন্তু জ্যোতিষ ও বাস্তুচিন্তকদের মধ্যে সব গণেশ মূর্তিই সমান ফলদায়ী নয়। গণপতি মূর্তির উপাদান, তার গঠন বৈচিত্র্য ইত্যাদির সঙ্গে তার গুণাগুণও যুক্ত থাকে। বাস্তু ও তন্ত্র মতে, বামাবর্ত শুঁড়বিশিষ্ট গণপতিই সবথেকে শুভ মূর্তি। এই মূর্তি বাড়িতে রাখলে সব কাজে সাফল্য আসে।
কী এই মূর্তির রহস্য?
পুরাণ অনুসারে, গণেশের জন্ম হয়েছিল মা পার্বতীর নিজস্ব ইচ্ছায়। তাঁর জন্মে শিবের কোনও ভূমিকা ছিল না। বরং পার্বতীর স্নানকক্ষে প্রবেশের পথে বাধা পেয়ে শিব দ্বাররক্ষী গণেশের সঙ্গে যুদ্ধ করেন এবং তাঁর মস্তকছেদন করেন। পরে তাঁর মস্তকে হস্তিমুণ্ড স্থাপন করে পার্বতীর রোষ থেকে মুক্ত হন শিব।
আরও পড়ুন: পঞ্চমুখী গণেশের পুজো করলে কত রকম সমস্যার সমাধান হয় জানেন?
এই দিক থেকে দেখলে গণেশের দেহ তাঁর মায়ের এবং মস্তক তথা চেতনা তাঁর পিতার দান। পুরাণ অনুযায়ী, পার্বতী অন্নপূর্ণা আর শিব সংসারে উদাসীন এক পুরুষ। গণেশের মধ্যে এই দুই গুণের সমাহার ঘটেছে বলে মনে করা হয়।
মূর্তি তত্ত্ব অনুসারে, পার্বতীর স্থান শিবের বাম দিকে। তিনি তাই ‘বামিনী’ নামেও পরিচিত। গণেশের স্থান শিব ও পার্বতীর ঠিক মধ্যস্থলে। এই অবস্থায় তাঁর শুঁড় যদি ডান দিকে কুণ্ডলী পাকিয়ে থাকে, তবে ধরতে হবে, সেই মূর্তির মধ্যে সংসার-ঔদাসীন্য বর্তমান। তিনি সিদ্ধিবিনায়ক হলেও তাঁর কাজ মোক্ষ প্রদান। জাগতিক শুভাশুভের ঊর্ধ্বে তিনি।
কিন্তু তাঁর শুঁড় যদি বাম দিকে কুণ্ডলী পাকিয়ে থাকে, তবে তিনি মা পার্বতীর গুণাবলির দিকে ধাবিত। অর্থাৎ, তিনি গৃহ-সুখের সন্ধান দিতে সমর্থ। তাঁর কৃপায় গৃহে শান্তি-সমৃদ্ধি স্থায়ী হয়। গৃহে তাই বামাবর্ত শুঁড়বিশিষ্ট গণেশ মূর্তি রাখাই শ্রেয় বলে মনে করা হয়।