প্রথমে আমরা জানতে চেষ্টা করব, দ্রেক্কাণ কাকে বলে? জ্যোতিষ মতে একটা রাশিকে তিনভাগ করলে, এক একটা ভাগকে দেক্কাণ বলে। আমরা সবাই জানি, একটা রাশি ৩০০ডিগ্রী করে হয়। তাই একটা রাশি তিন ভাগ করলে, একটা দ্রেক্কাণ হবে ১০০ ডিগ্রী। মোট রাশি ১২ টা হলে, মোট দ্রেক্কাণ হবে ৩৬ টি। সেই হিসেবে একটা রাশিতে ৩ টি করে দ্রেক্কাণ পাওয়া যাবে।
২২তম দ্রেক্কাণ কি? ২২ নম্বর দ্রেক্কাণ পরে অষ্টম ঘরে। প্রতিটি রাশি ৩০০ডিগ্রী হলে। সাতটি রাশি অতিক্রম করে অর্থাৎ ৩০০ডিগ্রী ৭=২১০০ডিগ্রী অতিক্রম করে ২২০০ডিগ্রীর মধ্যে ২২তম দ্রেক্কাণ পড়বে। এক কথায় ২২তম দ্রেক্কাণ।
সব সময় অষ্টম ভাবে পড়বেই। আর অষ্টম ভাব মানেই মৃত্যুর কারনের ভাব বা ঘর। অষ্টম ভাবেই লেখা থাকে আমরা কিভাবে মৃত্যু বরণ করবো।
এবার প্রতিটি দ্রেক্কাণে যে মৃত্যুর কারণ রয়েছে তা নিম্নে পরপর ক্রমিকভাবে লিপিবদ্ধ করা হলঃ
মেষঃ প্রথম দ্রেক্কান= সর্প, বিষ, জল, পিত্তঘটিত রোগ,
দ্বিতীয় দ্রেক্কাণ = জল, কীটপতঙ্গ, বন, বরফ
তৃতীয় দ্রেক্কাণ= জলে ডোবা, সাগর, পুকুর।
বৃষঃ প্রথম দ্রেক্কাণ = ঊট, ঘোড়া, গাধা,
দ্বিতীয় দ্রেক্কাণ = পিত্ত প্রকোপ, আগুন, বাতজনিত রোগ, ডাকাতি
তৃতীয় দ্রেক্কাণ = গাড়ী থেকে পড়ে যাওয়া, সাগরে, যুদ্ধক্ষেত্র, অস্ত্রশস্ত্র।
মিথুনঃ প্রথম দ্রেক্কাণ = ব্রঙ্কাইল সংক্রান্ত কোনও রোগ,
দ্বিতীয় দ্রেক্কাণ = বিষ প্রয়োগ, চতুষ্পদ জন্তু, জ্বর,
তৃতীয় দ্রেক্কাণ = বাত, চতুষ্পদ জন্তু, উঁচু কোনও স্থান থেকে পতন।
কর্কটঃ প্রথম দ্রেক্কাণ = অমঙ্গলজনক স্বপ্ন, কুমির থেকে বিপদ (মতান্তরে কোনও জলজ জন্তু থেকে বিপদ) শত্রুতা।
দ্বিতীয় দ্রেক্কাণ = বিদ্যুত, অগ্নি, বিষ প্রয়োগ, অস্ত্র দিয়ে আঘাত।
তৃতীয় দ্রেক্কাণ= যৌন রোগ (ভেনের্যাল ডিজিস), তাপ প্রবাহ।
সিংহঃ প্রথম দ্রেক্কণ = জলে ডোবা, বিষ প্রয়োগ, পায়ের পাতায় কোনও রোগ।
দ্বিতীয় দ্রেক্কাণ = শোথ বা উদরী, বনে।
তৃতীয় দ্রেক্কাণ = পতন, হটাৎ অস্ত্র দিয়ে আঘাত, অস্ত্র দ্বারা ক্ষত।
কন্যাঃ প্রথম দ্রেক্কাণ = মস্তকে কোনও রোগ, বাত।
দ্বিতীয় দ্রেক্কাণ = বিশাক্ত কোনও প্রানী, অবহেলায় মৃত্যু কোনও অজ্ঞাত স্থানে।
তৃতীয় দ্রেক্কাণ = বজ্রপাত, চতুস্পদ জন্তু, কোনও সন্দেহজনক নারী দ্বারা তৈরী কোনও রসায়ণ ঔষধ।
তূলাঃ প্রথম দ্রেক্কাণ = কোনও মহিলা, চতুস্পদ, উচ্চস্থান থেকে পতন।
দ্বিতীয় দ্রেক্কাণ = পেট সংক্রান্ত কোনও রোগে ভোগা।
তৃতীয় দ্রেক্কাণ = সরীসৃপ, হিংস্র কোনও প্রানী, জলজ বিপদজনক কোনও প্রানী।
বৃশ্চিকঃ প্রথম দ্রেক্কাণ = বিষ প্রয়োগ, নারী দ্বারা প্রস্তুত কোনও পানীয়।
দ্বিতীয় দ্রেক্কাণ = গুপ্তস্থানে কোনও রোগ।
তৃতীয় দ্রেক্কাণ = হাড় বা পায়ে কোনও রোগ ভোগ, পাথুরী সংক্রান্ত কোনও রোগ।
ধনুঃ প্রথম দ্রেক্কাণ = যৌন কোনও রোগ, বাত, উচ্চ রক্তচাপ।
দ্বিতীয় দ্রেক্কাণ = বিষ প্রয়োগ, বাত।
তৃতীয় দ্রেক্কাণ = পেট সংক্রান্ত কোনও রোগ, জলে ডোবা।
মকরঃ প্রথম দ্রেক্কাণ = হিংস্র জন্তু দ্বারা আক্রান্ত, জলজ প্রানী (কুমির)
দ্বিতীয় দ্রেক্কাণ = অগ্নি, অপশক্তি দ্বারা আক্রান্ত, জ্বর।
তৃতীয় দ্রেক্কাণ = সেই সব রোগে আক্রান্ত যা নারী দ্বারা করা।
কুম্ভঃ প্রথম দ্রেক্কাণ = আন্ত্রিক কোনও রোগ, জল, বন।
দ্বিতীয় দ্রেক্কাণ = যৌন রোগ, মানসিক বৈকল্য, অসৎ চরিত্রের কোনও নারী।
তৃতীয় দ্রেক্কাণ = চতুস্পদ প্রানী, মুখের কোনও রোগ।
মীনঃ প্রথম দ্রেক্কাণ = সক্রামক যৌন কোনও রোগ, আন্তিক রোগ, কোনও দুষ্ট নারী।
দ্বিতীয় দ্রেক্কাণ = জল, জলজ যানে চলা।
তৃতীয় দ্রেক্কাণ = গোপনে বিষ প্রয়োগ বা ভুল ঔষধ খাওয়া, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ঘটিত কোনও রোগ থেকে।
কারও যদি জন্ম হয় সিংহ লগ্নের ১২০ডিগ্রীতে, তবে তার ২২তম দ্রেক্কাণ পড়বে। অষ্টমে মীন রাশিতে দ্বিতীয় দ্রেক্কাণে (২১০০+১২০ =২২২০)। সিংহ লগ্ন থেকে গণনা করে করে ২২২০ডিগ্রীতে অর্থাৎ মীন রাশিতে। যদি আমরা দেখি, সিংহ থেকে ৭ টা রাশি গুনিতক ৩=২১ টা দ্রেক্কান অতিক্রম করে ২২তম দ্রেক্কানে আমরা পাব মীন রাশিতে, আমদের মৃত্যুর কারণ পাব। এখানে মৃত্যুর কারণে বলা হয়েছে জল থেকে বা নৌকা ডুবি বা সাঁতার না জানার কারণে মৃত্যু হতে পারে।
আবার কারও লগ্ন যদি মেষের ২০ডিগ্রীতে পড়ে, তবে তার ২২তম দ্রেক্কান পড়বে অষ্টম ভাবে বৃশ্চিক রাশিতে মেষ থেকে গণনা করে ২১৪০ডিগ্রীতে অর্থাৎ বৃশ্চিকে প্রথম দ্রেক্কানে। প্রথম দ্রেক্কানে মৃত্যুর কারণে বলা হয়েছে। বিষ প্রয়োগে বলতে ভুল ঔষধ খেয়ে বা ড্রাগের নেশায় মৃত্যু হতে পারে। আবার কোনও ছলনাময়ী নারী কোনও পানীয় খাইয়ে মেরে ফেলতে পারে।