তুলসী দেবীর অভিষেক কী ভাবে করবেন

শালগ্রাম শিলায় নৈবেদ্য অর্পণের মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে তুলসী অর্পণ অনিবার্যরূপে মানা হয় এবং এই ক্রিয়াকেই উপাসনার প্রথম এবং প্রধান অঙ্গরূপে গণ্য করা হয়। বিষ্ণু, রাম, কৃষ্ণ, নৃসিংহ, বামন, লক্ষ্মী-নারায়ণ যে কোনও দেবদেবীর আরাধনায় তুলসী অর্পণ করা পরম সৌভাগ্যজনক বলে মনে করা হয়।

Advertisement

পার্থপ্রতিম আচার্য

শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:০৫
Share:

ভগবান শ্রীহরি শালগ্রাম শিলা স্বরূপ হলেও আজও পর্যন্ত কিন্তু তুলসী বিনা তার পূজা সম্পূর্ণ হয় না। ভগবান নারায়ণের স্নানাভিষেক, নৈবেদ্য, আচমন, চন্দন, গঙ্গাজল এবং পুষ্প ইত্যাদির সঙ্গে সঙ্গে তুলসীও অনিবার্য রূপে গণ্য হয়। শালগ্রাম শিলায় নৈবেদ্য অর্পণের মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে তুলসী অর্পণ অনিবার্যরূপে মানা হয় এবং এই ক্রিয়াকেই উপাসনার প্রথম এবং প্রধান অঙ্গরূপে গণ্য করা হয়। বিষ্ণু, রাম, কৃষ্ণ, নৃসিংহ, বামন, লক্ষ্মী-নারায়ণ যে কোনও দেবদেবীর আরাধনায় তুলসী অর্পণ করা পরম সৌভাগ্যজনক বলে মনে করা হয়। এ ছাড়াও প্রায় সমস্ত দেবদেবীর পূজার ফুল দুর্বার সঙ্গে তুলসী অর্পণে দেবদেবী অত্যন্ত প্রসন্ন হন এবং ভক্তের মনোবাঞ্ছা পূরণ করেন।

Advertisement

এখন জেনে নেওয়া যাক শুধুমাত্র তুলসী দেবীর অভিষেক কী ভাবে করবেন এবং কোন কারণে কোন মন্ত্র পাঠ করবেন:

১। দেবী তুলসীকে সর্বদা প্রসন্ন করার জন্য অভিষেক:

Advertisement

প্রতি দিন স্নানের পর সিক্ত বস্ত্রে একটি ঘটিতে গঙ্গাজল অথবা পরিষ্কার জল নিয়ে নিম্নলিখিত মন্ত্র পাঠ করুন:

মন্ত্র: ‘নমঃ তুলসী কল্যাণী নমো বিষ্ণুপ্রিয়ে শুভে। নমো মোক্ষপ্রদে দেবী নমঃ সম্পৎপ্রদায়িকে’।

ফল: এই মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে জল ধীরে ধীরে তুলসী মূলে ঢেলে দিয়ে অভিষেক সম্পন্ন করলে মাতা তুলসী সর্বদা প্রসন্না থাকবেন এবং তাঁর আশীর্বাদে ধনসম্পদ এবং মোক্ষ লাভ হয়।

আরও পড়ুন: দশমহাবিদ্যার দশ রূপ ও তার ব্যাখ্যা (দ্বিতীয় পর্ব)

২। মনকে পবিত্র রাখার জন্য অভিষেক:

একটি ঘটিতে পরিষ্কার জল নিয়ে তার মধ্যে অল্প পরিমাণ কাঁচা দুধ দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে সেই মিশ্রণটি নিয়ে উল্লেখিত মন্ত্রটি পাঠ করুন:

মন্ত্র: তুলসী পাতু মাং নিত্যং সর্বাপৎভোপি সর্বদা। কীর্তি তাপি স্মৃতা বাপি পবিত্রতি মানবম্।

ফল: এই মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যম তুলসী গাছের গোড়ায় ঢেলে দিয়ে অভিষেক সম্পন্ন করতে হবে। মাতা তুলসীর আশীর্বাদে সর্বদা চিত্ত প্রফুল্ল এবং পবিত্র থাকবে।

৩। গৃহের পরিবেশ শুদ্ধ রাখার জন্য অভিষেক:

একটি ঘটিতে পরিষ্কার জল নিয়ে তার মধ্যে অল্প কাঁচা দুধ এবং সামান্য পরিমাণে কেশর দিয়ে ভাল করে মিলিয়ে নিন। এর পর মিশ্রণটি নিয়ে মন্ত্র পাঠ করুন:

মন্ত্র: তুলসী নাপরং কিঞ্চিদ্দৈবতং জগতী তলে। ময়া পবিত্রতো লোকো বিষ্ণুণা বৈষ্ণবো যথা।।

ফল: এই মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে তুলসী গাছের গোড়ায় ঢেলে দিয়ে অভিষেক সম্পন্ন করতে হবে। মা তুলসীর করুণায় সমস্ত পরিবেশ শুদ্ধ এবং শান্তিময় হয়ে উঠবে।

আরও পড়ুন: বাস্তুশাস্ত্র অনুযায়ী তুলসী গাছের এই গুণগুলি সম্পর্কে জানতেন?

৪। অবিবাহিতা মহিলাদের বিবাহের জন্য অভিষেক:

একটি ঘটিতে পরিষ্কার জল নিয়ে তার মধ্যে অল্প কাঁচা দুধ এবং সামান্য কাঁচা হলুদ বাটা অথবা হলুদ গুঁড়ো দিয়ে ভাল করে মিলিয়ে নিন। এর পর এই মন্ত্র পাঠ করুন:

মন্ত্র: তুলস্যাঃ পল্লবং বিষ্ণাঃ শিরস্যারোপতিং কলৌ। আনরাপয়তি সব্বানি শ্রেয়ানি বরমস্তকে।

ফল: এই মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে তুলসী গাছের গোড়ায় ঢেলে দিয়ে অভিষেক সম্পন্ন করতে হবে। এই অভিষেকের ফলে বিষ্ণু তথা বিষ্ণুপ্রিয়ার আশীর্বাদে বিবাহ ত্বরান্বিত হবে।

৫। বিদ্যার্থীদের পূর্ণ বিদ্যালাভের জন্য অভিষেক:

একটি ঘটিতে গঙ্গাজল নিয়ে তার মধ্যে সামান্য পরিমাণে গোরোচন এবং গব্য ঘি দিয়ে ভাল করে মিলিয়ে নিতে হবে। এর পর মিশ্রণটি বিদ্যার্থী অথবা তার পরিবর্তে অন্য কেউ নিয়ে নিয়ে মন্ত্র পাঠ করুন:

মন্ত্র: তুলসী শ্রীর্মহালক্ষ্মীবিদ্যাবিদ্যা যশস্বিনী। ধর্ম্ম্যা ধর্ম্মাননা বৃন্দা দেবদেবমনঃ প্রিয়া।

ফল: এই মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে তুলসী গাছের গোড়ায় ঢেলে দিয়ে অভিষেক সম্পন্ন করতে হবে। মাতা তুলসীর আশীর্বাদে বিদ্যার্থীর বিদ্যালাভে ক্রমোন্নতি হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement