গণেশ বন্দনা কী ভাবে করবেন

যিনি খর্বাকৃতি, স্থূল শরীর, লম্বোদর, গজেন্দ্রবদন অথচ সুন্দর, বদন হইতে নিঃসৃত মদগন্ধে প্রলুব্ধ ভ্রমর সমূহের দ্বারা যাঁহার গণ্ডস্থল ব্যাকুলিত, যিনি দন্তাঘাতে শত্রুর দেহ বিদারিত করে তাঁর দন্ত দ্বারা নিজ দেহে সিন্দূরের শোভা ধারণ করিয়াছেন; সেই পার্বতীপুত্র সিদ্ধিদাতা গণপতিকে বন্দনা করি।

Advertisement

পার্থপ্রতিম আচার্য

শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৯ ০০:০৫
Share:

যে কোনও কাজে সমৃদ্ধি তথা সিদ্ধি দান করেন গণেশ। এ ছাড়াও বুদ্ধিভ্রষ্ট মানুষকে বুদ্ধি দান করেন তিনি। তাই গণেশ চতুর্থীর পূজা উপলক্ষে ভগবানের আরাধনার সঙ্গে সঙ্গে উদযাপন করা হয় সুখ ও সমৃদ্ধিকেও। বাড়িতে গণেশ পূজা করলে সেখানে সুখ, শান্তি যেমন বজায় থাকে, তেমনই প্রবেশ করতে পারে না বিপদও। তবে চতুর্থীতে পূজা করার আগে জেনে নিন কী ভাবে গণেশ পূজা করলে আপনার জীবনে আসবে সমৃদ্ধি।

Advertisement

ওঁ শ্রী গণেশায় নমঃ’ বা ‘ওঁ গাং গণেশায় নমঃ ওঁ শ্রী গণেশায় নমঃ’ বা ‘ওঁ গাং গণেশায় নমঃ

এখন জেনে নেওয়া যাক গণেশ পূজার মন্ত্র প্রসঙ্গে:

Advertisement

গণেশ পূজা মন্ত্র:

একদন্তং মহাকায়ং লম্বোদর গজাননম।

বিঘ্নবিনাশকং দেবং হেরম্বং পনমাম্যহম।।

অর্থাৎ, যিনি একদন্ত, মহাকায়, লম্বোদর, গজানন এবং বিঘ্ননাশকারী সেই হেরম্বদেবকে আমি প্রণাম করি।

ধ্যান মন্ত্র:

ওঁ খর্বং স্থূলতনুং গজেন্দ্রবদনং লম্বোদরং সুন্দরং

প্রস্যন্দম্মদগন্ধলুব্ধ মধুপব্যালোলগণ্ডস্থলম্।

দন্তাঘাত বিদারিতারিরুধিরৈঃ সিন্দুরশোভাকরং,

বন্দেশৈল সুতাসুতং গণপতিং সিদ্ধিপ্রদং কামদম্।।

গণেশ বন্দনা:

বন্দ দেব গজানন বিঘ্ন বিনাশন।

নমঃ প্রভু মহাকায় মহেশ নন্দন।।

সর্ববিঘ্ন নাশ হয় তোমার শরণে।

অগ্রেতে তোমার পূজা করিনু যতনে।।

নমো নমো লম্বোদর নমঃ গণপতি।

মাতা যার আদ্যাশক্তি দেবী ভগবতী।।

সর্বদেব গণনায় অগ্রে যার স্থান।

বিধি-বিষ্ণু মহেশ্বর আর দেবগণ।।

ত্রিনয়নী তারার বন্দিনু শ্রীচরণ।

বেদমাতা সরস্বতীর লইনু শরণ।।

মন্ত্রঃ – ওঁ গাং গণেশায় নমঃ।

আরও পড়ুন: বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা মতে গণেশ চতুর্থীর নির্ঘণ্ট সময়সূচি

অর্থাৎ, যিনি খর্বাকৃতি, স্থূল শরীর, লম্বোদর, গজেন্দ্রবদন অথচ সুন্দর, বদন হইতে নিঃসৃত মদগন্ধে প্রলুব্ধ ভ্রমর সমূহের দ্বারা যাঁহার গণ্ডস্থল ব্যাকুলিত, যিনি দন্তাঘাতে শত্রুর দেহ বিদারিত করে তাঁর দন্ত দ্বারা নিজ দেহে সিন্দূরের শোভা ধারণ করিয়াছেন; সেই পার্বতীপুত্র সিদ্ধিদাতা গণপতিকে বন্দনা করি।

ধ্যান মন্ত্র:

ওঁ খর্বং স্থূলতনুং গজেন্দ্রবদনং লম্বোদরং সুন্দরং প্রস্যন্দম্মদগন্ধলুব্ধ মধুপব্যালোলগণ্ডস্থলম্। দন্তাঘাত বিদারিতারিরুধিরৈঃ সিন্দুরশোভাকরং , বন্দেশৈল সুতাসুতং গণপতিং সিদ্ধিপ্রদং কামদম্।।

মন্ত্র: ওঁ শ্রী গণেশায় নমঃ’ বা ‘ওঁ গাং গণেশায় নমঃ

অর্থাৎ, যিনি খর্বাকৃতি, স্থূল শরীর, লম্বোদর, গজেন্দ্রবদন অথচ সুন্দর; বদন হইতে নিঃসৃত মদগন্ধে প্রলুব্ধ ভ্রমর সমূহের দ্বারা যাঁর গণ্ডস্থল ব্যাকুলিত; যিনি দন্তাঘাতে শত্রুর দেহ বিদারিত করিয়া তাঁর দন্ত দ্বারা নিজ দেহে সিন্দূরের শোভা ধারণ করিয়াছেন; সেই পার্বতীপুত্র সিদ্ধিদাতা গণপতিকে বন্দনা করি।

মনে রাখবেন, ধর্মীয় মতে এই মন্ত্রটি দিনে কম করে ১০৮ বার পাঠ করলে ফল মিলতে বাধ্য। ফিরবে ভাগ্য। বদলে যাবে জীবন। যাঁরা এই সময় খুব দুঃখের মধ্যে আছেন, তাঁরা আজ থেকেই এই মন্ত্রটি পাঠ করা শুরু করে দিন। কে বলতে পারে, হয়ত সুখ আর কয়েক দিনের মধ্যেই দরজায় কড়া নাড়বে। মন্ত্রটি হল- ‘ওম সৌভাগ্য-বর্ধনাহাহ নমহঃ।’ প্রসঙ্গত, মন্ত্রটি পাঠ করার সময় মনে কোনও খারাপ চিন্তা আনবেন না। তা হলেই সুফল মিলতে শুরু করবে।

আরও পড়ুন: রাশি অনুযায়ী আপনি সন্তান হিসেবে কেমন, জেনে নিন

ওঁ ধ্যায়েন্নিত্যং গনপতিং বিদ্যুদ্বর্ণং গজাননং ।

শ্বেতাম্বরং সিতাব্জস্থং স্বর্ণমুকুট শোভিতম্ ।।

শ্বেতমূষিক পৃষ্ঠন্যস্তবামচরনং সিদ্ধিদং ।

বামজান্বারোপিতদক্ষিনপদং চতুর্ভুজম্ ।।

অর্থাৎ যিনি বিদ্যুৎবর্ণ, গজানন, শ্বেতবস্ত্র পরিহিত, শ্বেতপদ্মে অবস্থিত, মাথায় স্বর্ণমুকুট শোভাস্থিত, যাঁর বামচরণ শ্বেতমূষিকের পৃষ্ঠে রাখা এবং বাম পা হাঁটুর ওপর অবস্থিত। যিনি সিদ্ধিদাতা ও চতুর্ভুজ, বাম দিকের দুই হাতে শঙ্খ ও চক্র, ডান দুই হাতে পুস্তক ও লেখনী ধারণকারী সেই সিদ্ধিদাতা শ্রীগণেশকে আরাধনা করি।

প্রণাম মন্ত্র:

একদন্তং মহাকায়ং লম্বোদর গজাননম।

বিঘ্নবিনাশকং দেবং হেরম্বং পনমাম্যহম।।

অর্থাৎ,যিনি একদন্ত, মহাকায়, লম্বোদর, গজানন এবং বিঘ্ননাশকারী সেই হেরম্বদেবকে আমি প্রণাম করি।

ওঁ সর্ববিঘ্ন বিনাশয় সর্বকল্যাণ হেতবে।

পার্বতী প্রিয় পুত্রায় গণেশায় নমো নমঃ।।

এ বার জেনে নিন এই পুজোর কেমন করে করবেন।

পুজো সামগ্রী:

এই পুজোর প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে -ধূপ, আরতির থালা, সুপুরি, পান পাতা, গণেশের জন্য নতুন পোশাক, চন্দন কাঠ।

এ বার ‘ওম গণ গণপতায় নমঃ’ মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে শুরু হয় গণেশ আরাধনা। আরতির থালায় সুগন্ধি ধূপ জ্বালিয়ে সূচনা করুন গণেশ পুজোর। এর পর চন্দন কাঠের সামনে সাজিয়ে রাখুন পান পাতার ওপর সুপুরি।

যাঁরা গণেশ চতুর্থীর আগেই বাড়িতে মূর্তি নিয়ে আসছেন, তাঁরা নির্দিষ্ট দিনের আগে পর্যন্ত নতুন কাপড়ে বিগ্রহের মুখ ঢেকে রাখবেন। পুজোর দিন মূর্তি স্থাপনের আগে মুখ খুলবেন না।

গণেশ নিয়ে ঘরে প্রবেশের আগে চাল ছড়াতে ভুলবেন না। মূর্তি স্থাপনের আগেও ছড়িয়ে দিন চাল। ওপরে রাখুন সুপুরি, কাঁচা হলুদ, লাল কুমকুম ও দক্ষিণা।

পুজোর মূল পর্বের প্রয়োজনীয় সামগ্রী হল মূর্তি স্থাপনের পর প্রয়োজন লাল ফুল, দূর্বা ঘাস, মোদক, নারকেল, লাল চন্দন, ধুনো ও ধূপ।

পুজো পদ্ধতি:

বাড়িতে গণেশ মূর্তি স্থাপনের আগে সারা বাড়ি পরিষ্কার করুন। স্নান সেরে মন্ত্রের মাধ্যমে মূর্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠার পর শুরু হবে পুজো। ঋক বেদ বা গণেশ সুক্তায় পাবেন প্রাণ প্রতিষ্ঠার মন্ত্র। প্রাণ প্রতিষ্ঠার পরই ধূপ ও প্রদীপ জ্বালিয়ে শুরু করুন আরতি।

এরপর ষোড়শপচারে গণেশ আরাধনা করুন। গণেশ বন্দনার ১৬টি রীতির নামই ষোড়শপচার। এরপর ২১টি দূর্বা ঘাস, ২১টি মোদক ও লাল ফুল গণেশের সামনে সাজিয়ে রাখুন। মূর্তির মাথায় আঁকুন লাল চন্দনের টিকা। এরপর গণেশ মূর্তির সামনে নারকেল ভেঙে অশুভ শক্তিকে দূর করুন। তারপর গণেশের ১০৮ নাম জপ করুন। মূর্তির সামনে করজোড়ে প্রার্থনা করুন পরিবারের সুখ, সমৃদ্ধি।

ওঁ শ্রী গণেশায় নমঃ’ বা ‘ওঁ গাং গণেশায় নমঃ ওঁ শ্রী গণেশায় নমঃ’ বা ‘ওঁ গাং গণেশায় নমঃ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement