এ বার দেবীর আগমন-গমন দুয়েই ঘোটকে, এর ফল কী জানেন?

কী ভাবে দেবীর বাহন প্রতি বছর বেছে নেওয়া হয়, জানেন? অর্থাৎ তিনি কিসে চেপে আসবেন ও যাবেন, সেটা জানার জন্য একটা মজার অঙ্ক আছে। মজার ব্যাপার হল দেবী দুর্গা সিংহবাহনী৷ তা হলে ঘোড়ায় আগমন, দোলায় গমন, গজে গমনের মতো প্রশ্নগুলি আসে কী করে! বিষয়টি বেশ মজার৷

Advertisement

পার্থপ্রতিম আচার্য

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:০৫
Share:

পঞ্জিকা বলছে, এ বার মা আসছেন ঘোটকে বা ঘোড়ায় চেপে। দশমীর দিন তিনি ফিরেও যাচ্ছেন ঘোড়ায় চেপে। অর্থাৎ এই বছরে দেবীর আগমন ও গমন ঘোটকে। পণ্ডিতরা বলছেন, ঘোড়ায় আগমন ও গমন মোটেই শুভ নয়। ঘোড়া ছটফটে প্রাণী। সে যখন যায়, সব কিছু ছত্রভঙ্গ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই দেবীর ঘোটকে আগমন ও গমনে প্রমাদ গুনছেন শাস্ত্রজ্ঞরা। এতে ফসল নষ্ট হওয়ার এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন বন্যা ও খরা হতে পারে। দেখা দিতে পারে মহামারী ও রাজনৈতিক অস্থিরতা।

Advertisement

কী ভাবে দেবীর বাহন প্রতি বছর বেছে নেওয়া হয়, জানেন? অর্থাৎ তিনি কিসে চেপে আসবেন ও যাবেন, সেটা জানার জন্য একটা মজার অঙ্ক আছে। মজার ব্যাপার হল দেবী দুর্গা সিংহবাহনী৷ তা হলে ঘোড়ায় আগমন, দোলায় গমন, গজে গমনের মতো প্রশ্নগুলি আসে কী করে! বিষয়টি বেশ মজার৷

জেনে নেওয়া যাক দেবীর আগমন ও গমনের বার ও বাহন অনুযায়ী ফলাফল:

Advertisement

আরও পড়ুন: বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে ১৪২৬ সনের মহালয়া এবং দুর্গাপূজার নির্ঘণ্ট ও সময়সূচি

শ্রাস্ত্র আছে, দেবীর গমনাগমন যদি রবিবার বা সোমবার হয়, তা হলে তাঁর বাহন হয় গজ৷ আবার দেবীর গমনাগমন শনিবার বা মঙ্গলবার হলে তিনি চড়েন ঘোটকে৷ কিন্তু, বৄহস্পতিবার বা শুক্রবার যদি দেবীর গমনাগমন হয়, তা হলে তিনি দোলায় যাতায়াত করেন৷ আর বুধবার হলে তাঁর যাতায়াতের যানবাহন হয় নৌকা৷

দেবী যদি গজে গমনাগমন করেন, তা হলে পৃথিবীতে জলের সমতা বজায় থাকে এবং ফলন ভাল হয়৷ সুখ সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ থাকে মর্ত্যভূমি৷

হাতি হল অন্নপূর্ণা এবং দেবশিল্পী বিশ্বকর্মার বাহন৷ অন্নপূর্ণার আশীর্বাদে শস্য শ্যামলা হয়ে ওঠে বসুন্ধরা। বিশ্বকর্মার বাহন যেমন গজ, তেমনই বিশ্বকর্মা হলেন শিল্পের দেবতা৷ তাই গজে গমনাগমনের ফলে পৃথিবীতে কৃষিকাজের পাশাপাশি শিল্পের উন্নতি ও প্রসার হয়৷

দেবী দুর্গা যদি দোলায় চড়ে গমনাগমন করেন, তার ফল মর্ত্যে বহু মৃত্যু৷ এই বহু মৃত্যু হতে পারে প্রাকৄতিক দুর্যোগের কারণে কিংবা যুদ্ধ হানাহানির কারণে।

দোলা হল পালকির মতো একটি যান ৷ যার স্থিরতা কম, সদা দোদুল্যমান, অল্পে ভঙ্গুর এবং অনেক সময়ই বিপদের কারণ৷ তাই দুর্গার দোলায় গমনাগমনে মর্ত্যভূমির স্থিরতা ব্যাহত হতেই পারে।

আরও পড়ুন: গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা মতে দুর্গাপূজার নির্ঘণ্ট ও সময়সূচি

দেবী দুর্গার গমনাগমন ঘোটকে হলে চরম বিশৃঙ্খলা এবং ক্ষয়ক্ষতি দেখা দেয়৷ ঘোটক অত্যন্ত ক্ষিপ্রগামী, বুদ্ধিমান এবং প্রভুভক্ত৷ তবুও কখনও কখনও তার আচরণে উদভ্রান্ত ভাব লক্ষ্য করা যায়৷ এমন সময় ঘোড়া ছুটতে থাকে লক্ষ্মীর বিপরীতে৷

ঘোড়ার এমন স্বভাবের প্রভাবই মর্ত্যের উপর পড়ে, যখন দুর্গা গমনাগমন করেন ঘোটকে৷ এ ছাড়া দেখা যাচ্ছে দেবী ঘোটকে গমনাগমন করেন মঙ্গলবার বা শনিবার৷ মঙ্গল গ্রহের সেনাপতি, তেজস্বী ও বীরদর্পী৷ আর শনি হল কূট বুদ্ধি সম্পন্ন, প্রায়শই অনিষ্টকারী৷

দেবী দুর্গা নৌকায় গমনাগমন করলে মর্ত্যভূমিতে শস্য খুব ভালো হয়ে থাকে৷ কিন্তু, অতি বৄষ্টি বা বন্যার আশঙ্কাও থাকে৷ এক কথায়-জল বৄদ্ধির প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে মর্ত্যভূমিতে।

দুর্গা বুধবার যাতায়াত করলেই তার যানবাহন হয় নৌকা৷ বুধবার হল সৌম্যবার৷ খুব শান্ত সৌম্য, শান্তিপ্রিয় হলেও বালক স্বভাবের৷ তাই বুধ সরল কিন্তু চঞ্চল মানসিকতা সম্পন্ন৷ দুর্গা বুধবার যাতায়াত করলেই তার যানবাহন হয় নৌকা৷ বুধবার হল সৌম্যবার৷ খুব শান্ত সৌম্য, শান্তিপ্রিয় হলেও বালক স্বভাবের। তাই বুধ সরল কিন্তু চঞ্চল মানসিকতা সম্পন্ন৷

পঞ্জিকা অনুযায়ী এবছর (১৪২৬ সন) দেবী আসছেন ঘোড়ায়। পঞ্জিকা মতে এর ফল ‘ছত্রভঙ্গ’। দশমীর দিন এবার মা দূর্গার গমন হচ্ছে ঘোড়ায়। পঞ্জিকা অনুযায়ী এভাবে গমনের ফল ‘ছত্রভঙ্গ’।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement