ঋতুস্রাব শুরু হলেই গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণা হয়? —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ঋতুস্রাব চলাকালীন পেটে যন্ত্রণা, শারীরিক নানা রকম অস্বস্তির সম্মুখীন হন মেয়েরা। জরায়ুর পেশি সঙ্কোচন-প্রসারণের ফলে এবং হরমোনের হেরফেরে এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে ‘ডিসমেনোরিয়া’ বলা হয়। অনেক মহিলাই বলেন, ঋতুস্রাব শুরু হলে শরীরের বিভিন্ন অস্থিসন্ধি, যেমন কোমর, হাঁটু কিংবা পায়ের গোছের ব্যথা বেড়ে যায়। ঋতুস্রাবের সঙ্গে কি অস্থিসন্ধির ব্যথার কোনও যোগ রয়েছে?
চিকিৎসকেরা বলছেন, এই গোটা প্রক্রিয়াটিই হরমোনের ওঠা-পড়ার উপর নির্ভর করে। ঋতুচক্র শুরুর আগেই পেশির সঙ্কোচন-প্রসারণ শুরু হয়। ফলে শরীরে প্রদাহ বা ইনফ্লেমেশন বৃদ্ধি পায়। সেখান থেকেই এই ধরনের ব্যথা বা অস্বস্তি শুরু হতে পারে। এই কষ্ট লাঘব করতে সাধারণত গরম সেঁক, ব্যথা কমানোর কিংবা প্রদাহনাশক ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। অনেকেই মনে করেন, এই সময়ে ব্যায়াম করলে পেটে যন্ত্রণা আরও বেড়ে যেতে পারে। ক্লান্তি কিংবা দুর্বলতা বেড়ে যেতে পারে। কিন্তু চিকিৎসকেরা শরীরচর্চা করার পক্ষেই।এই সময়ে হরমোনের হেরফেরে মনমেজাজও বিগড়ে থাকে। ব্যায়াম করলে সেই সংক্রান্ত সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে এ সময়ে ভারী কোনও ব্যায়াম না করলেও হাঁটাহাঁটি করা যেতে পারে। কার্ডিয়ো, স্ট্রেচিংয়ের মতো ব্যায়াম করলেও শরীরের ক্ষতি হবে না। তবে ঋতুস্রাবের সময় সবচেয়ে ভাল কাজ দেয় যোগাসন এবং প্রাণায়াম। তবে সকলের শারীরিক অবস্থা এক রকম নয়। তাই ব্যায়াম করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেওয়াই শ্রেয়।
এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন খনিজের অভাব হলে ঋতুস্রাবজনিত কষ্ট বেড়ে যেতে পারে। ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের ঘাটতি হলে ঋতুস্রাবজনিত কষ্ট বেড়ে যেতে পারে। তাই এই সময়ে বেশি করে মাছ, বিভিন্ন ধরনের বীজ কিংবা বাদাম, শাকপাতা খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।