ওজন কমাতে কি তিসির বীজ সত্যিই কাজে আসে? ছবি: শাটারস্টক।
এখন অনেকেই শরীর নিয়ে বেশ সচেতন। ফিট থাকতে নিয়মিত ব্যায়াম, শরীরিক কসরত, হাঁটাহাটি আরও কত কী-ই না করেন তাঁরা! তবু খাবারের সঙ্গে আপস করতে নারাজ অনেকেই। শহরের অলিগলিতে রোজ খুলছে নয়া নয়া ‘ফাস্টফুড’-এর দোকান। রোল, বিরিয়ানি, চাউমিন, মোমো, কাটলেট, কবাব— দেখলেই ডায়েটকে বুড়ো আঙুল দেখাতে মিনিট খানেকও সময় নেন না অনেকে। ভাবেন, কিছু বাড়তি সময় জিমে কাটালেই বুঝি কেল্লা ফতে! এই ধারণা কিন্তু একেবারেই ভুল। শারীরিক কসরতের পাশাপাশি খাওয়াদাওয়ায় রাশ না টানলে আপনার শ্রম বৃথা যাবে। রোজের ডায়েটে পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি করতে অনেকেই ইদানীং খাবারে যোগ করছেন নানা প্রকার বীজ। তার মধ্যে অন্যতম হল তিসি বীজ।
একটা সময় ছিল, যখন অনেক খাবারই রান্না করা হত তিসির তেলে। তিসি বা ‘ফ্ল্যাক্স সিড’ ভাল মানের ফ্যাট, অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট, প্রোটিন ও ফাইবারে ভরপুর।
আদৌ কি এই বীজ ওজন কমাতে সাহায্য করে?
তিসির বীজে ভরপুর মাত্রায় ফাইবার থাকে। ফাইবার জাতীয় খাবার খেলে পেট অনেক ক্ষণ ভরা থাকে। পেট ভরা থাকলে বাইরের ভুলভাল খাবার খাওয়ার ইচ্ছাও কমে। ফলে শরীরে কম ক্যালোরি ঢোকে, ওজনও থাকে নিয়ন্ত্রণে। ফাইবার-সমৃদ্ধ খাবার রোজের খাদ্যতালিকায় রাখলে পেটের স্বাস্থ্যও ভাল থাকে। হজমও ভাল হয়। সব মিলিয়ে ওজনও কমে। তবে শুধুই তিসির বীজ খেলে আপনার ওজন কমবে না। খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। সঙ্গে শরীরচর্চাও।
তিসির বীজে ভরপুর মাত্রায় ফাইবার থাকে। ছবি: শাটারস্টক।
তিসির বীজ খেলে কী কী লাভ হয় শরীরের?
১. তিসির বীজে আলফা লিনোলেনিক অ্যাসিড আর ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। এই বীজ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, হৃদ্যন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখে।
২. কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলেও রোজের ডায়েটে তিসির বীজ রাখতে পারেন, উপকার পাবেন।
৩. তিসির বীজে ফাইবার থাকে। ডায়াবেটিকরাও রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই বীজ খেতে পারেন।
৪. তিসির বীজে থাকা বিভিন্ন উপাদান শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।
তিসির বীজ কী ভাবে খাবেন?
‘ফ্ল্যাক্স সিড’ খেতে গেলে বীজ শুকনো খোলায় ভেজে নেওয়া জরুরি। অনেকে ‘রোস্ট’ করার পরে গুঁড়িয়ে নেন তিসি। তিসির বীজ সরাসরি খেলে হজম হতে সময় নেয়, তাই গুঁড়ো করে খাওয়াই শ্রেয়। আটা-ময়দা মাখার সময়ে ‘ফ্ল্যাক্স’ গুঁড়ো অল্প পরিমাণে মিশিয়ে রুটি তৈরি করতে পারেন। আবার সকালে খালি পেটে এক চা চামচ তিসির গুঁড়ো গরম জলে মিশিয়ে নিয়ে খেতে পারেন। এতে লেবু মিশিয়ে খেলে আরও ভাল ফল পাবেন। এ ছাড়া ‘স্মুদি’, ‘মিল্কশেকের’ সঙ্গেও এই বীজ খেতে পারেন।
এই প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। ক্রনিক অসুখ থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই ডায়েটে বদল আনুন।