চুল খোলা রাখলে যন্ত্রণা হবে না? ছবি: সংগৃহীত।
পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে চুলেও নানা রকম কায়দা করতে ভাল লাগে। ছোটবেলায় মা-কাকিমারা চুলে নানা রকম বিনুনি কিংবা ঝুঁটি বেঁধে দিতেন। তার চারপাশে থাকত রংবেরঙের ক্লিপ। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পেরেছেন চুল বাঁধা শুধু কায়দার জন্য নয়। চুল বাঁধা থাকলে বাইরের ধুলোময়লা, দূষণ থেকে প্রাথমিক ভাবে বাঁচা যায়। কিন্তু এখন আর বেশি ক্ষণ চুল বেঁধে রাখতে পারেন না। গরমে ঘেমেনেয়ে গেলেও পিঠের উপর চুল খুলে রাখতে হয়। কায়দার জন্য নয়। মাথার অসহ্য যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে। চুল বাঁধা থাকলেই এমন যন্ত্রণা কেন হয়?
চিকিৎসকেরা বলছেন, শুধু বিনুনি বা ঝুঁটি নয়। পাতলা চুলে দীর্ঘ ক্ষণ ভারী কোনও গয়না বা ‘অ্যাকসেসরিজ়’ পরে থাকলেও মাথা যন্ত্রণা হতে পারে। অনেকেই এই ধরনের সমস্যাকে মাইগ্রেন বলে ভুল করেন। কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে ‘এক্সটার্নাল-ট্র্যাকশন হেডএক্স’ বলা হয়। অনেকে ‘পনিটেল হেডএক্স’ নামেও চেনেন। দীর্ঘ দিন ধরে এমনটা চলতে থাকলে চুল ঝরে পড়ার পরিমাণও বেড়ে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়। আসলে মাথার ত্বকের সঙ্গে একাধিক স্নায়ুর শেষ প্রান্ত এসে যুক্ত হয়েছে। চুল বাঁধার দোষে স্পর্শকাতর সেই স্নায়ুগুলিতে টান পড়ে। সেখান থেকেই যন্ত্রণার সূত্রপাত। তবে সে কারণেই স্নায়ুর সরাসরি ক্ষতি হয় না।
কতটা টেনে চুল বাঁধলে মাথা যন্ত্রণা হতে পারে?
শক্ত করে অনেক ক্ষণ চুল বেঁধে রাখার পর হঠাৎ যদি মাথা বা ঘাড়ের কাছে চাপ অনুভূত হয় কিংবা চোখে তীব্র আলো লাগলে যেমন অনেকের মাথা ধরে, তেমন মৃদু কষ্ট শুরু হয় এ ক্ষেত্রেও। মাথার ঠিক যে অংশ থেকে টেনে চুল বাঁধা হয় প্রাথমিক ভাবে ব্যথা সেই অংশ থেকেই শুরু হয়। সেখান থেকে ‘ক্রাউন’, অর্থাৎ একেবারে মাথার তালু পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়। অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা যায়, মাথার কষ্ট চোখ, ঘাড়, পিঠ কিংবা কাঁধেও ছড়িয়ে গিয়েছে। এই ধরনের সমস্যা থেকে বাঁচতে হলে আলগা করে চুল বাঁধাই ভাল। শরীরচর্চা কিংবা রান্না করার সময়ে একান্তই যদি টেনে চুল বাঁধতে হয় সে ক্ষেত্রে পনিটেল বা বিনুনি না করে ক্লিপ বা রবার ব্যান্ড ব্যবহার করা যেতে পারে।
আর কী কী সমস্যা হয়?
কোমরছোঁয়া লম্বা চুল খুলে রাখা যায় না। খেয়াল করে দেখবেন, অনেকেই উঁচু করে খোঁপা বেঁধে রাখেন। সারা ক্ষণ এই ভাবে টেনে চুল বেঁধে রাখলে মহিলাদের মাথার তালু বা ‘ক্রাউন’ অঞ্চল থেকে চুল উঠতে শুরু করে। কপালের অংশ থেকে ‘হেয়ারলাইন’ ক্রমশ উপরের দিকে উঠতে শুরু করে। খুব সহজে মাথায় নতুন চুল গজায় না। ঘরোয়া টোটকা, ওষুধে কাজ না হলে অনেকেই চুল প্রতিস্থাপন করানোর সিদ্ধান্ত নেন।