চিকিৎসা পরিভাষায় এর নাম ‘অ্যাটপিক ডার্মাইটিস’। ছবি- সংগৃহীত
চামড়ার অসুখ হিসাবে এগজিমা খুবই পরিচিত নাম। চিকিৎসা পরিভাষায় এর নাম ‘অ্যাটপিক ডার্মাইটিস’। ত্বক শুষ্ক হয়ে ফেটে যাওয়া, চুলকানি, খসখসে হয়ে যাওয়া, ফোস্কা পড়া এগজিমার অন্যতম লক্ষণ। চিকিৎসকরা বলছেন, ৬০ শতাংশ শিশুর ক্ষেত্রে ২ বছরের কম বয়স থেকে, ৮০ শতাংশ শিশুর ক্ষেত্রে ৫ বছরের নীচে এবং ১০ শতাংশ মানুষের ক্ষেত্রে ১৮ বছর বয়সের পর এই রোগের লক্ষণ শুরু হয়। বড়দের ক্ষেত্রে এমন রোগকে বলা হয় অ্যাডাল্ট অনসেট এগজিমা।
বিভিন্ন কারণে এগজিমার সমস্যা হয়ে থাকে। বিশেষ করে পরিবারে কারও এগজিমা থাকলে এই সমস্যা আরও বেশি করে দেখা দেয়। তা ছাড়াও অত্যধিক গরমে ঘাম জমে জমে এমন হতে পারে। মহিলাদের ক্ষেত্রে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থা কিংবা ঋতুস্রাবচলাকালীন হরমোনের ওঠানামায় এই রোগ হতে পারে। একটা সময় পর্যন্ত বলা হত, এই রোগের কোনও চিকিৎসা নেই। চিকিৎসকরা অবশ্য অন্য কথা বলছেন। তাঁদের মতে, সঠিক চিকিৎসা করলে এগজিমা থেকে সম্পূর্ণ রূপে সেরে ওঠা যায়। বয়স, রোগের লক্ষণ এবং শরীরে অন্যান্য অসুখের নিরিখে চিকিৎসার ধরন ঠিক করা হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য রোজের জীবনে অবশ্যই কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি।
সারা বছর ঈষদুষ্ণ জলে স্নান করুন। প্রত্যেক দিন স্নান করার তিন মিনিটের মধ্যে সারা শরীরে ভাল করে মেখে নিতে হবে ময়েশ্চারাইজার।
এগজিমা হলে সব সময় সুতির জামাকাপড় পরা জরুরি। ব্যবহৃত পোশাক নিয়মিত কেচে পরিষ্কার করা জরুরি।
খেয়াল রাখতে হবে সাবান যেন মৃদু প্রকৃতির হয়। অর্থাৎ, তীব্র ক্ষারযুক্ত সাবান, যা ত্বকের সব জল টেনে নিয়ে ত্বককে খসখসে করে তোলে, তেমন সাবান ব্যবহার করা যাবে না। মোট কথা চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে এগজিমা থেকে দ্রুত সেরে ওঠা সম্ভব।
বর্ষাতেও ত্বকের বিভিন্ন সংক্রমণের পাশাপাশি এগজিমার সমস্যা দেখা যায়। তবে সব সংক্রমণই এগজিমা নয়। বর্ষার সময়ে ত্বকে যে র্যাশ, চুলকানির মতো সমস্যা দেখা দেয় তার কারণ সব সময়ে এগজিমা নয়। দু’টি জিনিস গুলিয়ে ফেললে চলবে না। এগজিমা হোক বা ত্বকের অন্য কোনও সংক্রমণ— দু’ক্ষেত্রেই সমান গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা শুরু করা জরুরি। ত্বকের সাধারণ সংক্রমণের থেকে এগজিমার উপসর্গ অনেকটাই আলাদা। এগজিমা হলে সারতে বেশ কিছুটা সময় লাগে। আবহাওয়ার কারণে ত্বকে র্যাশ, চুলকানি বেশি দিন স্থায়ী হয় না। যদি দেখেন ত্বকের সমস্যা দীর্ঘ দিন ধরে রয়ে গিয়েছে, সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।