তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় ঘটে থাকে এই ঘটনা। প্রতীকী ছবি।
সারা দিন খাটনির পর বাড়ি ফিরে অঘোরে ঘুমাচ্ছেন। গভীর ঘুমের মধ্যেই হঠাৎ তুমুল ঝটকায় ভেঙে গেল ঘুম। কোনও না কোনও সময় এই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন অনেকেই। শুধু ঝাঁকুনি নয়, কারও কারও মনে হয় যে, হঠাৎ করে শূন্য থেকে পড়ে যাচ্ছেন। ঘুমের মধ্যে কেন এমন অদ্ভুতুড়ে ঘটনা ঘটে, তা নিয়ে কৌতূহল জেগেছে অনেকেরই।
ঘুমের মধ্যে এই হঠাৎ চমকে ওঠা, পড়ে যাওয়া বা ঝাঁকুনি দিয়ে ওঠাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলে ‘হিপনিক জার্ক’। এর আরও একটি নাম আছে, অনেকে একে বিনাইন মায়োক্লোনিক জার্ক বা স্লিপ সুইচও বলেন।
মূলত তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় ঘটে থাকে এই ঘটনা। ঘুম যখন পাতলা থাকে তখন স্বপ্ন দেখা শুরু হয়। কিন্তু মস্তিষ্কের সেরিব্রাম কর্টেক্স অংশটি কখনও কখনও তৎক্ষণাৎ বুঝতে পারে না। ফলে মস্তিষ্কের সঙ্কেত পরিবহণে গোলমাল হয়ে যায়। মস্তিষ্কের স্নায়ু সংবেদ পরিবহণকারী পদার্থ বা নিউরোট্রান্সমিটারের স্থিতিশীলতা নষ্ট হলেও হিপনিক জার্ক হয়ে থাকে।
কেউ কেউ আবার মনে করেন, বিশেষ কিছু রাসায়নিকের মাত্রা বেড়ে গেলে, শরীর ঝাঁকুনি দিয়ে ওঠে। মস্তিষ্ক তা না-বুঝে উঠতে পেরে নিজের মতো ব্যাখ্যা করে তড়িঘড়ি জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করে। তাতেও দেখা দিতে পারে হিপনিক জার্ক।
ঘুম যখন পাতলা থাকে তখন স্বপ্ন দেখা শুরু হয়। প্রতীকী ছবি।
ক্যাফিন বা নিকোটিন সমৃদ্ধ চা, কফি বেশি খেলে, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপের ফলে ও ম্যাগনেশিয়াম, আয়রনের মতো প্রয়োজনীয় কিছু উপাদানের ঘাটতি থাকলে এই সমস্যার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
মোটের উপর এই হিপনিক জার্ক ঘুমন্ত অবস্থায় ঘটলেও কখনও কখনও আধঘুম অবস্থাতেও একই সমস্যা দেখা দেয়। ক্লান্তিতে শরীর ছেড়ে দিলে, মস্তিষ্ক যখন দ্রুত ঝিমিয়ে আসে, তখনও এমন ঘটনা ঘটতে পারে। মূলত ক্লান্তির কারণে শরীর আকস্মিক নিস্তেজ হয়ে আসাই এর কারণ। তবে এমন ঘটনা বিরল বলেই দাবি বিজ্ঞানীদের।