ওয়াকিং নিউমোনিয়ার উপসর্গ কী কী? ছবি: ফ্রিপিক।
দোরগোড়ায় শীত। এই সময়ে সর্দি-কাশি, অ্যালার্জির সমস্যা বাড়ে। নিউমোনিয়ার সংক্রমণ ছড়াতেও দেখা যায়। তবে আরও এক ধরনের নিউমোনিয়া চুপিসারে ছড়িয়ে পড়ছে বলে খবর। উপসর্গ সাধারণ সর্দি-কাশি, গলাব্যথার মতোই। তবে পরীক্ষা করালে নিউমোনিয়ার জীবাণু পাওয়া যাচ্ছে। রোগ খুব মারাত্মক আকার না নিলেও সতর্ক থাকা প্রয়োজন বলেই মনে করছেন চিকিৎসকেরা।
চিনে গত বছর এই ধরনের নিউমোনিয়া ছড়িয়ে পড়েছিল বলে শোনা গিয়েছিল। ভারতেও তা নতুন নয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে ‘ওয়াকিং নিউমোনিয়া’। এর কারণ এক বিশেষ ধরনের ব্যাক্টেরিয়া, যার নাম 'মাইকোপ্লাজ়মা নিউমোনি'। করোনার সময়ে এই ধরনের নিউমোনিয়ার সংক্রমণও দেখা গিয়েছিল অনেকের মধ্যে। তার পর এর প্রকোপ কমে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ফের ওয়াকিং নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
এই বিষয়ে চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের মত, ‘ওয়াকিং নিউমোনিয়া’ খুব জটিল অসুখ নয়। মাইকোপ্লাজ়মা নিউমোনি ব্যাক্টেরিয়ার হানায় ফুসফুসে সংক্রমণ ছড়ায়। শিশুদের সাধারণ জ্বর, সর্দিকাশির মতোই এর উপসর্গ। তবে রোগ বাড়লে শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। হাঁপানি বা সিওপিডি থাকলে, শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা আচমকা কমে যেতে পারে।
‘ওয়াকিং নিউমোনিয়া’ খুবই ছোঁয়াচে। বাতাসের ধুলোবালি, আক্রান্তের হাঁচি-কাশি, থুতু বা লালা থেকে রোগ দ্রুত ছড়াতে পারে। জ্বর কমতেই চাইবে না। শ্বাসকষ্ট বাড়বে। বুকে ব্যথা থাকবে। কাশির সাথে কফ উঠে আসবে। দুর্বলতা বাড়বে। লক্ষণগুলি দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। একমাত্র তাঁর পক্ষেই বোঝা সম্ভব যে, সাধারণ ভাবে ঠান্ডা লেগে এমন হয়েছে, না কি নিউমোনিয়া বাসা বেঁধেছে। তার পরে নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কয়েকটা পরীক্ষা করাতে হয়। যেমন, অনেক সময় এক্স-রে, সিটি স্ক্যান করে দেখা হয়।
নিউমোনিয়া হলে রোগীকে পরিমিত জল খাওয়ানো উচিত। জলশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন নিউমোনিয়া রোগীর জন্য ক্ষতিকর। বাইরে বেরোলে ছোটদের মাস্ক পরাতেই হবে। পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। খাওয়ার আগে ভাল করে হাত ধুতে হবে। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ব্যাক্তির থেকে শিশুকে দূরে রাখুন। নিজে থেকে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়াও বিপজ্জনক হতে পারে। সময় মতো চিকিৎসা শুরু হলে জটিলতা বাড়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়।