ছবি : সংগৃহীত।
গাঢ় রঙের পাত্রে খাবার সাজিয়ে দিলে খাবারের বর্ণময়তা আরও ফুটে ওঠে। হয়তো সেই কারণেই বহু রেস্তরাঁ বা ক্যাফেতে খাবার পরিবেশন করা হয় কালো প্লাস্টিকের বাহারি থালা-বাটি-ট্রেতে। কোনওটি হয়তো দেখতে আধখানা বোতলের মতো, কোনওটি পাতা কিংবা গাছের গুঁড়ির আদলের। সেই সব পাত্রে সাজানো খাবার দেখতে ভাল লাগে বলেই বোধ হয় ইদানীং গেরস্তের রান্নাঘরেও চল হয়েছে কালো প্লাস্টিকের থালা-বাটি এবং রান্নার সরঞ্জাম ব্যবহারের। ভাজাভুজির জন্য খুন্তি হোক বা স্প্যাচ্যুলা— গরম ক়ড়াইয়ে কালো রঙের প্লাস্টিকে তৈরি সরঞ্জাম দিয়ে দিব্য রান্না বান্না হয়। কালো প্লাস্টিকের থালা-বাটিতে ঢেলেও দেওয়া হয় গরম খাবার। কিন্তু সাম্প্রতিক একটি গবেষণা বলছে, এতে অজান্তেই শরীরে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ছে।
ছবি: সংগৃহীত।
আমেরিকার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘টক্সিক ফ্রি ফিউচার’ এবং আমস্টারডামের পাবলিক রিসার্চ ইউনিভার্সিটি ভ্রেইয়া ইউনিভার্সিটাইট-এর বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন কালো প্লাস্টিকের বাসন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তৈরি হয় এক ধরনের অগ্নি নিরোধক রাসায়নিক দিয়ে। সাধারণত ওই রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় টিভি, কম্পিউটার বা বিদ্যুতের তারের বাইরের আবরণ তৈরি করার জন্য।
ছবি: সংগৃহীত।
অগ্নি নিরোধক হওয়ায় মূলত বৈদ্যুতিন শিল্পেই ওই রাসায়নিকের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। কিন্তু পরে ফেলে দেওয়া, বিদ্যুতের তার, টিভি-কম্পিউটারের বহিরাবরণকে প্রক্রিয়াজাত করে সেগুলি পুনর্ব্যবহারও করা হয়। তা দিয়েই তৈরি হয় কালো প্লাস্টিকের কাপ, ডিশ, থালা, বাটি, ট্রে, হাতা, খুন্তি, খাবারের কন্টেনারের মতো জিনিসপত্র। এমনকি, কালো প্লাস্টিকের খেলনাতেও ওই রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় বলে জানাচ্ছেন ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিদার স্টেপলটন। যাতে থাকা বিষাক্ত রাসায়নিক, ক্যানসারের কারণ হতে পারে, এমনকি, শরীরে হরমোনের ভারসম্যও নষ্ট করতে পারে।
ছবি: সংগৃহীত।
কেমোস্ফিয়ার নামে একটি পত্রিকায় গবেষণা সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে সম্প্রতিই। তাতে বলা হয়েছে, কালো প্লাস্টিকে তৈরি ২০৩ রকমের গেরস্তালির জিনিসপত্র পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, তার ৮৫ শতাংশই তৈরি হয়েছে ওই অগ্নি নিরোধক রাসায়নিক পুনর্ব্যবহার করে।
ছবি: সংগৃহীত।
ওই গবেষণা সংক্রান্ত প্রতিবেদনের সহ-লেখিকা তথা টক্সিক ফ্রি ফিউচারের পলিসি ম্যানেজার বলছেন, ‘‘ক্যানসারকে শরীরে আমন্ত্রণ জানাতে পারে এমন রাসায়নিক ব্যবহার করাই উচিত নয়। অথচ দেখুন প্রক্রিয়াজাত হয়ে ওই রাসায়নিক আমাদের বাড়িতে তো বটেই রান্নাঘরেও ঢুকে পড়ছে।’’