বর্যায় ডায়েরিয়ার প্রকোপ থেকে বাঁচবেন কী ভাবে? ছবি: শাটারস্টক।
বর্ষার মরসুম মানেই বিশেষ কিছু অসুখের বাড়বাড়ন্ত। কখনও ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি, কখনও আবার চড়া রোদ, এমন আর্দ্র আবহাওয়ায় ঘেমেনেয়ে একশা হয়ে যখন-তখন ঠান্ডা পানীয়ে চুমুক বা একটু খাওয়াদাওয়ার এ দিক-ও দিক— এ সবের হাত ধরেই হানা দেয় নানা অসুখ। এদের মধ্যে অন্যতম ডায়েরিয়া। আর এক বার এই রোগের পাল্লায় পড়লে এক দিনেই শরীর দুর্বল। এমনকি, বাড়াবাড়ি হলে হাসপাতাল পর্যন্ত গড়ায় অসুখ।
ডায়েরিয়ার মতো অসুখে বেশি আক্রান্ত হয় শিশুরা। বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতাও কম থাকে। তবে বড়দের ক্ষেত্রেও সময় মতো চিকিৎসা শুরু না করলে এই অসুখ মারাত্মক আকার নিতে পারে। এই সময় তেল-মশলাদার খাবার বেশি খেলেই পেটের গোলমাল শুরু হয়। তার উপর হজমশক্তিও কমে যায়। এই সময় তেষ্টা মেটাতে অনেক সময় বাইরের জল খাওয়া হয়। তা থেকেও শরীরে এই রোগ ঢুকতে পারে।
ডায়েরিয়া মূলত জলবাহিত ব্যাক্টেরিয়া থেকে ছড়ায়। শরীরের জল বেরিয়ে যায় বলে এই অসুখ খুবই দুর্বল করে ফেলে। দরকারে স্যালাইনও দিতে হয়। তবে এই অসুখ থেকে দূরে থাকতে কতগুলি নিয়ম মানতেই হবে।
১) চিকিৎসকদের মতে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকলে এই অসুখ এড়ানো সম্ভব। রান্নাঘর ও খাওয়ার জায়গা পরিষ্কার রাখুন। বাসন মাজার জন্য পরিষ্কার জল ব্যবহার করুন। মুখ ধোয়ার সময়ে ব্যবহার করুন পরিষ্কার ও পরিস্রুত জল।
২) সারা বছরই পরিস্রুত জল খেতে হবে। রাস্তাঘাটের যে কোনও জায়গা থেকে জল খাবেন না। প্রয়োজনে বোতলবন্দি বা ফোটানো জল খান। তবে জল বেশি করে খেতে হবে।
৩) খাবার বেশি ক্ষণ ফেলে রাখবেন না। গরম অবস্থাতেই খান। ঠান্ডা হয়ে গেলে আবার গরম করে তবেই খান। কারণ, খাবার ঠান্ডা হলে তাতেও কিছু ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়া বাসা বাঁধে, যা ডায়েরিয়ার মতো সমস্যা ডেকে আনে।
৪) ডায়েরিয়ার প্রকোপ থেকে বাঁচতে এই সময়ে রাস্তার খাবার যতটা পারেন এড়িয়ে চলুন। বিশেষ করে বেশি তেল-মশলাযুক্ত খাবার একেবারেই খাবেন না। মোট কথা, যে সব খাবারে টকজল রয়েছে বা যাতে স্যুপের আকারে জল সরাসরি পেটে যায়, সে সব এড়িয়ে চলুন। অপরিষ্কার হোটেল বা রেস্তরাঁয় না খাওয়াই শ্রেয়।
৫) সুস্বাস্থ্যের জন্য ফল খাওয়া ভাল। তা বলে রাস্তার কাটা ফল ভুলেও খাবেন না। গোটা ফল কিনে ভাল করে ধুয়ে, তবে খান। শরবত, ঘোল, লেবুর জলের মতো পানীয় রাস্তার ধারের অপরিচ্ছন্ন দোকান থেকে না খাওয়াই শ্রেয়। প্রয়োজনে বাড়িতে বানিয়ে খান।