রোজ ভাল-মন্দ খেয়েও রোগা হওয়া সম্ভব! ছবি: শাটারস্টক।
বয়স বাড়লে অনেকেই চিন্তায় পড়ে যান। অনেকের ধারণা, একটা বয়সের পর শত চেষ্টা করলেও আর ওজন কমানো সম্ভব নয়। এ দিকে শরীরচর্চার প্রতি অনীহা, অফিসে একটানা এক জায়গায় বসে কাজ, খাওয়াদাওয়ায় অনিয়মের কারণে ৪০ পেরোতে না পেরোতেই ওজন বাড়তে থাকে। ৪০-এর পরে বিপাকহার কমতে শুরু করে। এর সঙ্গে আসে হরমোনের মাত্রাও ওঠানামা করে। এ সব কারণে ওজন বেড়ে যাওয়াটা স্বাভাবিক। ওজন কমাতে চাইলেও অনেকে কড়া ডায়েট মোটেই পছন্দ করেন না। ভাল-মন্দ খেয়েও কিন্তু ওজন কমানো সম্ভব। তবে খাবার সময় মেনে চলতে হবে কয়েকটি নিয়ম।
পুষ্টিবিদদের মতে, কড়া ডায়েট করে চলজলদি ওজন ঝরানো সম্ভব হলেও, তা কিন্তু সকলের জন্য স্বাস্থ্যকর নাও হতে হবে। তার বদলে খাওয়াদাওয়া ও রোজের জীবনে এমন বদল আনা জরুরি, যার ফলে শরীর ফিট থাকবে আর সেই ফিটনেস দীর্ঘ স্থায়ীও হবে। জেনে নিন, ফিট থাকতে জীবনযাপনে পরিবর্তন আনা জরুরি।
১) ওজন বাড়লেই শরীরে হাজারটা রোগ বাসা বাঁধতে শুরু করে। তাই ফিট থাকতে নিয়ম করে শরীরচর্চা করুন। জিমে গিয়ে ঘাম ঝরাতে না চাইলে বাড়িতেই কার্ডিয়ো ব্যায়াম কিংবা যোগাসন করুন। এ ছাড়া নিয়ম করে হাঁটাহাঁটি, সাইক্লিং, জগিং করতে পারেন। ওজন কমাতে যোগাসনেও ভরসা রাখতে পারেন। শরীর যত সচল থাকবে হজমপ্রক্রিয়াও ততই ভাল হবে, ওজনও বাগে থাকবে।
২) ডায়েট থেকে চিনি বা মিষ্টি একেবারেই বাদ দিয়ে দিন। ওজন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হল শর্করা। ডায়েটে শর্করার মাত্রা কমিয়ে এনে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। ফলে সকালে চিনি দেওয়া দুধ চা, দুপুরে খাওয়ার পর মিষ্টি মুখ, রাত জেগে সিনেমা দেখার সময় কেক, চকোলেট খাওয়া— এই সব অভ্যাসে রাশ টানা জরুরি। কখনও মিষ্টিমুখ করতে ইচ্ছে করলে ফল, খেজুর, কিশমিশ খেতে পারেন। এ ছাড়া খেজুর, কলা ও বিভিন্ন রকম ফল ব্যবহার করে স্বাস্থ্যকর মিজ়ঠাই বানানো যায়। সেই সব দিয়েও মিষ্টিমুখ করতে পারেন।
৩) ডায়েটে ফাইবার বেশি করে রাখতে হবে। খাবারে ফাইবারের পরিমাণ বৃদ্ধি করলে হজমপ্রক্রিয়া ভাল হয়। খাবার ভাল হজম হলে মেদ কম জমে শরীরে। ডায়েটে কার্বোহাইড্রেট আর ফ্যাটের মাত্রা কমিয়ে প্রোটিন বেশি করে রাখতে হবে। ভাল-মন্দ খেলেও পরিমাণটা ঠিক রাখা জরুরি।
৪) মানসিক চাপের কারণেও কিন্তু ওজন বেড়ে যায়। আর মানসিক চাপ কমাতে ঘুম ভীষণ জরুরি। রাত জাগার অভ্যাস থাকলে সেই অভ্যাসে বদল আনুন। শরীর চাঙ্গা রাখতে দিনে সাত থেকে আট ঘণ্টার ঘুম পূরণ করতেই হবে।
৫) প্রাতরাশ নিয়ম করে করতেই হবে। প্রাতরাশে ফাঁকি দিলে চলবে না। সারা দিন অল্প করে খাবার বার বার খাওয়ার অভ্যাস করুন। রাতের খাবার আটটার আগে সেরে ফেলতে পারলে খুব ভাল। সেটা না করতে পারলে খাওয়ার অন্তত দু’ঘণ্টা পর ঘুমোতে যান। রোগা তখনই হবেন যখন বিপাকক্রিয়া ঠিক থাকবে, তাই খাওয়াদাওয়ার পর হাঁটাহাঁট্ জরুরি।