Fatty Liver

খাওয়াদাওয়ার বেনিয়মেও মেদ জমতে পারে যকৃতে, ‘ফ্যাটি লিভার’ এড়াতে জীবনে কোন বদল দরকার?

ফ্যাটি লিভার নিয়ে উদাসীনতা বিপদ ডেকে আনতে পারে বলছেন চিকিৎসক। রোগ প্রতিরোধের উপায় কী?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:০৩
Share:

ফ্যাটি লিভার এড়াতে কী করবেন, কোনটা নয়? ছবি: ফ্রিপিক

‘ফ্যাটি লিভার’ শব্দটি এখন আর নতুন নয়। তরুণ প্রজন্ম থেকে বয়স্ক কোনও মানুষকে এ নিয়ে প্রশ্ন করলে অনেকেই বলবেন, এই সমস্যা তাঁরও রয়েছে। আগে মনে করা হত, যাঁরা মদ্যপান, ধূমপান বেশি করেন, তাঁদেরই এই রোগ হয়। কিন্তু বর্তমানে সেই ধারণা ভেঙেছে।

Advertisement

ফ্যাটি লিভার কী?

এটি এমন একটি রোগ যেখানে যকৃৎ বা লিভারের উপর মেদ জমা হয়। এর ফলে হজমে সমস্যা হওয়া, বমি ভাব, পেট ব্যথা, পেটে অস্বস্তি-সহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।

Advertisement

কেন হয় এই সমস্যা?

অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, মদ্যপান, বেহিসেবি খাওয়া-সহ নানা কারণ থাকে ফ্যাটি লিভারের নেপথ্যে। চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলছেন, ‘‘শুধু তেল-মশলাদার, চিনি যুক্ত খাবার খাওয়া নয়, অপুষ্টির জন্যেও ফ্যাটি লিভার হতে পারে। পুষ্টির অভাবে শরীরে নানা ধরনের রোগ বাসা বাঁধতে পারে, যার জন্য ফ্যাটি লিভার হয়। আবার বার বার তেল গরম করে ভাজাভুজি, বার্গার, কোল্ড ড্রিংকস খাওয়া এই ধরনের অভ্যাসেও সমস্যা দেখা দিতে পারে।’’

চিকিৎসক জানালেন, ডায়াবিটিস, স্থূলতা, খারাপ কোলেস্টেরল বেশি থাকলেও ফ্যাটি লিভারের সমস্যা হয়।

সমস্যা হলে তার সমাধান এক রকম। কিন্তু ‘ফ্যাটি লিভার’ প্রতিরোধে কি কিছু করা যায়? চিকিৎসকের পরামর্শ, নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অভ্যাসে বদল, পরিমিত ও পুষ্টিকর খাওয়া-দাওয়ায় এই রোগ থেকে দূরে থাকা সম্ভব।

‘ফ্যাটি লিভার’ দূরে থাকবে কোন অভ্যাসে?

শরীরচর্চা

হাঁটাহাটি, যোগব্যায়ামে শরীর ভাল থাকে। নিয়মিত অঙ্গ সঞ্চালনে যেমন ওজন বশে রাখা সম্ভব হয়, তেমনই শরীরে রক্ত সঞ্চালনও ভাল হয়। লিভার ভাল রাখতে হাঁটা বা ব্যায়ামের উপরে জোর দিচ্ছেন চিকিৎসক।

চিনিতে ‘না’

বেশি চিনি দেওয়া খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন অরিন্দম। নরম পানীয়, প্রক্রিয়াজাত ফলের রসে প্রচুর শর্করা থাকে। যা ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে। এই ধরনের পানীয়ে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়বে, যা পরবর্তী সময়ে ফ্যাটি লিভারের কারণ হয়ে উঠবে। রান্নাতেও বেশি চিনি খাওয়া কমাতে হবে।

পিৎজ়া, বার্গার

পিৎজ়া, বার্গার, সসেজ, সালামি, প্রক্রিয়াজাত মাংসও ফ্যাটি লিভারের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। সরল কার্বোহাইড্রেটও খাদ্যতালিকায় যত কম রাখা যায় ততই ভাল, বলছেন চিকিৎসক। বদলে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খেলে যকৃত ভাল থাকবে। পাশাপাশি, বিভিন্ন মাছ, শাক ও সব্জি, ওট্স, কিনোয়া খেলে শরীর ভাল থাকবে। তালিকায় রাখা দরকার মরসুমি ফলও।

ধূমপান, মদ্যপান

ধূমপান, মদ্যপানেও শরীরের ক্ষতি হয়। মদ্যপান যকৃতের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ফ্যাটি লিভার দু’রকম। অ্যালকোহলিক ও নন অ্যালকোহলিক। মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপান থেকে লিভারে চর্বি জমলে তাকে বলা হয় অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজ়িজ়। ফলে এই ধরনের অভ্যাসেও রাশ টানতে হবে।

চিকিৎসক বলছেন, ‘‘ডায়াবেটিক বা যাঁদের কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি, তাঁদের ক্ষেত্রে ফ্যাটি লিভার হলে বিশেষ ভাবে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। ডায়াবিটিস ও কোলেস্টেরল যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে, তা দেখতে হবে। যকৃতে মেদের পরিমাণ কতটা জমেছে তার উপর নির্ভর করে ঝুঁকি।’’ অরিন্দমের কথায়, "রোগ নিয়ে উদাসীনতা বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। ‘ফ্যাটি লিভার’ ধরা পড়লে, শুরু থেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা দরকার। চিকিৎসার জন্য ওষুধ রয়েছে। এ ছাড়া জীবনযাপনেও বদল আনা জরুরি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement