অনেক মা দুধের পরিমাণ নিয়ে চিন্তায় থাকেন। কী করলে সন্তানের প্রয়োজন মতো স্তন্য তৈরি হবে, তা নিয়ে ভেবেই কাতর হয়ে পড়েন।
শিশুকে স্তন্যপান করানো জরুরি। মাতৃদুগ্ধের মতো পুষ্টি আর কোনও খাবারেই পায় না শিশু। এমন তো বলা হয়েই থাকে। কিন্তু শিশুর পেট ভরার মতো দুধ তো জরুরি। ততটাও কি দুধ তৈরি হয় সব সময়ে?
অনেক মা দুধের পরিমাণ নিয়ে চিন্তায় থাকেন। কী করলে সন্তানের প্রয়োজন মতো স্তন্য তৈরি হবে, তা নিয়ে ভেবেই কাতর হয়ে পড়েন। এ দিকে জানেন না যে, এই চিন্তাই কমিয়ে দিতে পারে মাতৃদুগ্ধের পরিমাণ। সদ্য মায়েদের জেনে রাখা জরুরি, সন্তানের সঙ্গে যত সম্পর্ক গাঢ় হবে, তত স্তন্যও বাড়বে। বার বার সে কারণে স্তন্যপান করানোর অভ্যাস করা জরুরি। তা হলেই সমাধান মিলবে।
এ ছাড়াও মায়েদের খাওয়াদাওয়ার দিকে বিশেষ নজর দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদ অনন্যা ভৌমিক। তাঁর বক্তব্য, মায়েরা সন্তানদের যেমন স্তন্যপানের অভ্যাস করাবেন, তেমনই নিজের রোজের ক্যালোরির মাত্রাও বাড়াবেন। তিনি বলেন, ‘‘অনেকেই সন্তানের জন্মের পর পুরনো চেহারায় তাড়াতাড়ি ফেরার জন্য কম ক্যালোরিযুক্ত খাবার খেতে শুরু করেন। কিন্তু এতে হবে না। বরং উল্টোটাই জরুরি। ক্যালোরির মাত্রা এ সময়ে বেশিই লাগবে মায়ের শরীরে।’’
এ ছাড়াও সাধারণ কিছু খাবার বেশি খেতে হবে। যেমন পুষ্টিবিদ সবুজ শাক-সব্জি খাওয়ার দিকে বিশেষ জোর দিচ্ছেন। আর তার সঙ্গেই জানাচ্ছেন, রসুনও মাতৃদুগ্ধ বাড়াতে পারে বলে শোনা যায়। তবে অনন্যার বক্তব্য, এ সবের কোনওটিই যে সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানীক ভাবে প্রমাণিত, তা নয়। এগুলি খেলে বাড়ার আশা আছে বলে ধরে নেওয়া হয়।
সাবু খেলেও স্তন্য বাড়ে বলে ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু অনন্যার বক্তব্য, এ ক্ষেত্রে এই খাদ্যের গুণ সম্পর্কে কিন্তু বিশেষ প্রমাণ মেলেনি। বরং পালং শাক, ব্রকোলি, বিট গাছের পাতা অনেক বেশি কাজে লাগে বলে ধরে নেওয়া যায়। কেউ কেউ আবার ওট্সও খেতে বলেন। ‘‘কিন্তু আমি কখনওই বলব না যে এই খাবারগুলি খেলেই মাতৃদুগ্ধ বেড়ে যাবে। বরং মায়ের নিজের শরীর ও মনের যত্ন নেওয়া জরুরি। মা যদি সুস্থ থাকেন, তা হলেই ঠিক ভাবে স্তন্যপান করাতে পারবেন সন্তানকে,’’ বক্তব্য অনন্যার।
সদ্য মায়েদের জেনে রাখা জরুরি, সন্তানের সঙ্গে যত সম্পর্ক গাঢ় হবে, তত স্তন্যও বাড়বে। বার বার সে কারণে স্তন্যপান করানোর অভ্যাস করা জরুরি। তা হলেই সমাধান মিলবে।
এরই পাশাপাশি, মাকে নিয়ম করে জল খেতে হবে। দিনে অন্তত সাড়ে তিন থেকে চার লিটার জল খাওয়া জরুরি। আর চিকিৎসকের দেওয়া সব সাপ্লিমেন্ট খাওয়াও জরুরি।
অন্যার আরও একটি পরামর্শ রয়েছে। যে সকল মায়ের শারীরিক কোনও অসুবিধা নেই, তাঁরা দিনে এক চামচ করে ঘি খেতে পারেন। তাতে কাজ হয়। এরই পাশাপাশি খেতে হবে ক্যালশিয়ামযুক্ত অন্য সব খাবার।
পুষ্টিবিদের পরামর্শ, যে সব খাবার স্তন্যপান করানোর সময়ে খাওয়া যায় না, সে দিকে নজর দেওয়া বেশি জরুরি। তার মধ্যে সবের উপরে রয়েছে ক্যাফিনযুক্ত খাবার। ক্যাফিন শুধু কফি নয়, চা, চকোলেটেও থাকে। এ সময়ে কোনও ভাবেই মদ্যপান, ধূমপান করা যাবে না। সে সব দিকে বিশেষ ভাবে নজর দিতে হবে।