পরিসংখ্যান অনুসারে গোটা বিশ্বে প্রায় ২৭ কোটি মানুষ মানসিক উদ্বেগজনিত সমস্যায় আক্রান্ত। ছবি: শাটারস্টক।
ওজন বেড়ে গেলেই আমাদের চিন্তা শুরু হয়ে যায়। শুরু হয় কড়া ডায়েট ও শরীরচর্চা! ত্বকের খেয়াল রাখতে কখনও সালোঁয় যাই, আবার কখনও বাড়িতেই হয় পরিচর্চা! তবে মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে আমাদের যত অবহেলা! সুস্থ জীবন পেতে, সুস্থ শরীরের পাশাপাশি প্রয়োজন সুস্থ মনও। তাই মানসিক স্বাস্থ্যকে কোনও মতেই হেলাফেলা করা চলবে না।
মানসিক অসুস্থতার অন্যতম প্রধান একটি লক্ষণ মানসিক উদ্বেগ। পরিসংখ্যান অনুসারে গোটা বিশ্বে প্রায় ২৭ কোটি মানুষ মানসিক উদ্বেগজনিত সমস্যায় আক্রান্ত। দুশ্চিন্তা, অবসাদ, বিভিন্ন রকমের ভয় কিংবা লোকের সঙ্গে মেলামেশা করতে সমস্যা— মানসিক অসুস্থতার লক্ষণ একাধিক। এই ধরনের সমস্যা বেশি দিন থাকলে, মনোবিদের পরামর্শ নেওয়াই বাঞ্ছনীয়। কিছু ক্ষেত্রে একাধিক স্বাস্থ্যকর অভ্যাস মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়তা করতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঠিক খাদ্যাভ্যাস তেমনই একটি পদ্ধতি। দেখে নিন কোন কোন খাবার মানসিক উদ্বেগের সমস্যা কমাতে কাজে আসতে পারে।
দই: পরীক্ষার আগে দই খাওয়ার প্রচলন কেন, তা কখনও ভেবে দেখেছেন? বিভিন্ন গবেষণা বলছে, প্রোবায়োটিকে ভরপুর দই খেলে প্রদাহ কমে। স্নায়ুর কার্যকলাপ স্বাভাবিক রাখতেও এর জুড়ি মেলা ভার। পাশাপাশি, প্রোবায়োটিকে বাড়ে সেরোটোনিন। বিশেষজ্ঞদের মতে, দিনে দু’বার করে ১২৫ গ্রাম দই এক মাস খেলে মানসিক উদ্বেগ কমে।
ডার্ক চকোলেট: ডার্ক চকোলেটে থাকা ‘ফ্যাভোনল’ জাতীয় উপাদান মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি, ডার্ক চকোলেটে থাকে ‘এপিক্যাটেকিন’ ও ‘ক্যাটেকিন’ নামক অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। বেশ কিছু গবেষণা অনুযায়ী, এই উপাদানগুলি মস্তিষ্কের কোষে রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। স্নায়ুকোষের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও এর ভূমিকা রয়েছে বলে জানা যায়।
উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা কমাতে গ্রিন টি সাহায্য করে। ছবি: শাটারস্টক।
পালং শাক: পালং শাকে থাকে প্রচুর পরিমাণ ম্যাগনেশিয়াম। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বলছে, এই খনিজ উপাদানটি মানসিক উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে। পাশাপাশি, পালং শাক অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টও মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে।
হলুদ: হলুদে উপস্থিত ‘কারকিউমিন’ নামক উপাদানটি মানসিক উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে। তাই রান্নায় বেশি হলুদ ব্যবহার করলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যেরও উন্নচি হয়।
গ্রিন টি: গ্রিন টি-তে থাকে এল-থিয়েনিন নামক এক প্রকার অ্যামাইনো অ্যাসিড। উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা কমাতে এই যৌগ সাহায্য করে। গবেষকদের মতে, গ্রিন টি-তে এক দিকে কমে কর্টিসোল হরমোন, অন্য দিকে, বাড়ে ডোপামিন ও সেরোটোনিন ক্ষরণ। কর্টিসোলকে বলা হয় স্ট্রেস হরমোন। এটি মানসিক চাপ বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত। আর ডোপামিন ও সেরোটোনিন হরমোন মন ভাল রাখতে সহায়তা করে।