কোন অভ্যাসে নষ্ট হয় স্মৃতি? ছবি: সংগৃহীত
অনেক সময়ই বাজার করতে গিয়ে এটা-ওটা আনতে ভুলে যান অনেকে। কেউ কেউ ভুলে যান আত্মীয়ের নাম কিংবা প্রিয়জনের জন্মদিন। সব মিলিয়ে, ভুলো মন নিয়ে নাজেহাল অনেকেই। আর তা নিয়ে নানা রকমের ব্যঙ্গের শিকারও হতে হয় তাঁদের। কিন্তু স্মৃতিভ্রম যে কতটা বিপজ্জনক হতে পারে, তার উদাহরণ হল ডিমেনশিয়া। অ্যালঝাইমার্সের মতো দুরারোগ্য ব্যাধিও এক ধরনের ডিমেনশিয়া। ঠিক কী কারণে এই রোগ হয়, তা নিশ্চিত করে বলা কঠিন। তবে সাম্প্রতিক একটি গবেষণা বলছে, বিশেষ কিছু খাবার বাড়িয়ে দিতে পারে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি।
আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব নিউরোলজিতে প্রকাশিত সাম্প্রতিক একটি গবেষণা বলছে, নিয়মিত তেলমশলা-সমৃদ্ধ ‘ফাস্ট ফুড’ খেলে অনেকটাই বেড়ে যায় ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি। চিনের তিয়ানজিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষণায় পরীক্ষা করে দেখা হয়েছিল ৭২,০৮৩ জন ব্রিটিশ নাগরিকের চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য। পরীক্ষার শুরুতে এঁদের সকলের বয়স ছিল ৫৫ বা তাঁর বেশি। কিন্তু কেউ-ই তখন ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন না। এর পর ১০ বছর সময় ধরে তাঁরা কেমন থাকেন, তার উপর নজর রেখেছিলেন গবেষকরা। গবেষণার শেষে ৫১৮ জন রোগী ডিমেনশিয়াতে আক্রান্ত হন।
প্রতীকী ছবি।
গবেষণার ফল বলেছে, যাঁরা এই সময়ে বেশি চিনি, নুন ও স্নেহপদার্থ-সমৃদ্ধ খাবারদাবার খেয়েছেন, তাঁদেরই ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। পাশাপাশি, কম প্রোটিন ও ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার খেলেও বেড়েছে রোগের ঝুঁকি। ডিমেনশিয়ার আশঙ্কা বাড়ায় এমন খাবারের তালিকায় রয়েছে, ঠান্ডা পানীয়, বেশি নুন-চিনি দেওয়া রাস্তার খাবার, আইসক্রিম, ডুবোতেলে ভাজা মাংস, সস, প্রক্রিয়াজাত পাউরুটি ও প্যাকেটবন্দি খাবারও।
ল্যানসেট পত্রিকার তথ্য বলছে, ২০৫০ সালের মধ্যে ভারতবর্ষে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হবেন প্রায় এক কোটি ১৪ লক্ষেরও বেশি মানুষ। ২০১৯ সালে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভারতবর্ষে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ছিল প্রায় ৩৮ লক্ষ। অর্থাৎ, মাত্র কয়েক দশকে ডিমেনশিয়া রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে প্রায় ২০০ শতাংশ।