শিশুদের নাক ডাকায় বিপদসঙ্কেত! ছবি: শাটারস্টক।
চার বছরের রিয়া ঘুমোনোর সময়ে প্রবল নাক ডাকত। এত কম বয়সে এমন নাক ডাকে কেন, তা নিয়ে খানিকটা চর্চা হলেও ব্যাপারটাকে খুব একটা গুরুত্ব দেননি রিয়ার মা-বাবা। কিন্তু কিছু পর সমস্যা বাড়তে শুর করল। ঘুমের সময়ে তার মুখ বন্ধ হয় না, নিঃশ্বাসের কষ্ট, মাঝেমধ্যেই সর্দি-কাশি, খেতে অসুবিধা, গলা শুকিয়ে যাওয়া, কানে কম শোনার মতো বিভিন্ন কারণে অসুস্থ হয়ে পড়তে লাগল রিয়া। চিন্তিত মা-বাবা ছুটলেন চিকিৎসকের কাছে। পরীক্ষার পর জানা গেল, এই সমস্যার জন্য দায়ী একটি বিশেষ গ্রন্থি, যার নাম অ্যাডিনয়েড। ইদানীং বহু শিশুই এই গ্রন্থির নানা সমস্যায় ভুগছে।
শিশুদের নাকের পিছনে একটু উপরের দিকে থাকে অ্যাডিনয়েড গ্রন্থি। পাঁচ বছর বয়সের পর থেকে এটি একটু একটু করে ছোট হতে থাকে এবং বয়ঃসন্ধির পরে প্রায় মিলিয়ে যায়। এমনিতে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া বা খাওয়ার সময়ে এটি নানা রকম ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়ার হাত থেকে শিশুদের রক্ষা করে। কিন্তু কোনও কারণে অ্যাডিনয়েড গ্রন্থি ফুলে উঠলে শিশুরা নানা ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই ঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে তাদের কথা বলার সমস্যা, কানে কম শোনা, শ্বাসপ্রশ্বাসে অসুবিধা হয়। এমনকি, টানা মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস নিতে হয় বলে দাঁতের গঠন খারাপ হয়ে মুখের বিকৃতিও দেখা দিতে পারে। হতে পারে ব্রঙ্কাইটিস বা নিউমোনিয়ার মতো অসুখও। আর অ্যাডিনয়েডের সমস্যার প্রধান উপসর্গই হল নাক ডাকা! কোবলেশন থেরাপির মাধ্যমে এই রোগের চিকিৎসা করা হয়। তবে সময় মতো চিকিৎসা শুরু না করলে সমস্যা বাড়তে পারে।
অ্যাডিনয়েডের সমস্যার প্রধান উপসর্গই হল নাক ডাকা! ছবি: শাটারস্টক।
শিশুদের নাক ডাকা আর কোন কোন রোগের উপসর্গ হতে পারে?
১) অনেক সময়ে অ্যালার্জির সমস্যা থেকেও নাকের মধ্যে সর্দি জমে গিয়ে নাক বন্ধ হয়ে যায়। তখনও শিশুরা নাক ডাকে।
২) শিশুর অ্যাজ়মার সমস্যা শুরু হলে নাক ডাকার মতো উপসর্গ শুরু হয়। তাই সতর্ক হন।
৩) বাড়তি ওজনও শিশুদের শরীরে অনেক রোগ ডেকে আনে। ঘাড় ও গলার কাছে ফ্যাট জমতে শুরু করলেও নাক ডাকার সমস্যা বাড়ে। তাই শিশুর ওজনের দিকেও নজর দিন।
৪) স্লিপ অ্যাপনিয়ার সমস্যার কারণেও শিশুদের নাক ডাকার সমস্যা দেখা যায়।