চায়ে কী কী মেশালে শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়বে? ছবি: ফ্রিপিক।
মরসুম বদলের এই সময়ে জ্বর, সর্দিকাশি লেগেই থাকবে। হাঁপানি বা সিওপিডি আছে যাঁদের, তাঁদের কষ্ট আরও বেশি। ঠান্ডা লাগলেই শ্বাসের সমস্যা দেখা দেবে। তা ছাড়া ঠান্ডার সময়ে বাতাসে ব্যাক্টেরিয়া-ভাইরাসেরও বাড়বাড়ন্ত হয়। সংক্রামক রোগ খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তাই শরীর সুস্থ রাখতে কেবল মুঠো মুঠো ওষুধ খেলেই হবে না, শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে রাখতে হবে। তার জন্য বিভিন্ন ডিটক্স পানীয় যেমন জরুরি, তেমন রোজের খাওয়াদাওয়াতেও নজর দিতে হবে। ডিটক্স পানীয় অনেকেই খান না, বিশেষ করে বাড়ির প্রবীণ সদস্যদের জোর করে এমন পানীয় খাওয়াতে পারবেন না। তার থেকে রোজের চায়েই এমন কিছু উপাদান মিশিয়ে দিন, যা স্বাভাবিক ভাবেই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটা বাড়িয়ে দিতে পারে।
চায়ে কী কী মেশালে উপকার হবে?
আদার রস
আদা দিয়ে লিকার চা খেতে পছন্দ করেন অনেকেই। রোজ সকালে চায়ে মিশিয়ে দিন আদার রস। আদায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট আছে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি তো বাড়াবেই, পাশাপাশি বাতের ব্যথা, পেশিতে টান ধরার সমস্যা, সর্দিকাশি, গলাব্যথার কষ্টও কমাবে। আদা দিয়ে চা খেলে গ্যাস-অম্বলের সমস্যাও কমবে।
দারচিনি
চায়ে এক চিমটে দারচিনি মিশিয়ে দিলে স্বাদ যেমন বাড়ে, তেমনই শরীরেরও নানা উপকার হয়। দারচিনিতে রয়েছে ভিটামিন বি এবং ভিটামিন কে। এই দুই ভিটামিন যে কোনও রকম সংক্রামক রোগ থেকে শরীরকে রক্ষা করতে পারে। পাশাপাশি দারচিনি মেশানো চা খেলে মেদও কমে। হজমশক্তি বাড়ে।
তেজপাতা
তেজপাতায় অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল ও মাইক্রোব্যাক্টেরিয়াল উপাদান থাকায় এটি অনেক অসুখবিসুখ সারাতে পারে। হৃদ্যন্ত্রকে শক্তিশালী করতে তেজপাতা বেশ কার্যকর। এ ছাড়াও কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতেও তেজপাতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর্থ্রাইটিসের ব্যথা কমাতেও তেজপাতা কার্যকরী।
লবঙ্গ
লবঙ্গে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। পেটের গোলমাল ঠেকাতে লবঙ্গ খুবই উপকারী। ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য লবঙ্গ উপকারী। গবেষণা জানাচ্ছে, লবঙ্গ চিবিয়ে খেলে শর্করার পরিমাণ অনেকটাই কমে। পাশাপাশি সর্দিকাশি সারাতেও লবঙ্গের ভূমিকা রয়েছে। এক কাপ গরম জলে ৪-৫ টি লবঙ্গ দিয়ে কিছু ক্ষণ ঢেকে রেখে দিন। একটু ঠান্ডা হলে খেয়ে নিন। সপ্তাহে ৩-৪ দিন খেতে পারেন লবঙ্গ চা।
তুলসী
এক বাটি জলে এক মুঠো তুলসী পাতা ফুটতে দিন। টগবগ করে ফুটলে আঁচ কমিয়ে ১০ মিনিট ফোটান। এর পর এতে মেশান এক চামচ মধু আর দু’চামচ লেবুর রস। তুলসীর চা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিত খেলে প্রদাহের প্রবণতা কমবে, জ্বর, সর্দিকাশির প্রকোপ কমবে। তবে ডায়াবিটিসের ওষুধ খেলে বা ইনসুলিন নিলে তুলসী চা খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।